শুক্রবার ● ২ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » গাইবান্ধায় সবজি চাষীর মাসিক আয় লক্ষ টাকা
গাইবান্ধায় সবজি চাষীর মাসিক আয় লক্ষ টাকা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: (১৮ কার্তিক ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় রাত ১০.১৮মি) গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুঁটিমারি গ্রামের কৃষক আমির হোসেন পেঁপে, পেয়ারা, মালটা, সবজি ও ত্রি-ফসলী চাষাবাদের সফলতার পর এবার কচু চাষেও সফলতার মুখ দেখছেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ভিন্ন কিছু করার ভাবনা নিয়ে ১শ’ টি পেঁপের চারা জমিতে লাগান। একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে আদা, হলুদ ও অন্যান্য ফসল লাগান। ওই বছরেই পেঁপে, আদা, হলুদ ও সবজি বিক্রি করে ৩০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সেখান থেকেই ভাগ্যের চাকা বদলে যায় আমির হোসেনের। প্রতি বছর পেঁপে, আদা, হলুদ ও সাথি ফসল বিক্রি করে যা লাভ হয় তা থেকে জমি ক্রয় করতে করতে এখন আমির হোসেন ১২ বিঘা জমির মালিক।
সামান্য জমি নিয়ে শুরু করা আমির হোসেনের এখন মাসিক আয় প্রায় ১ লাখ টাকা। আমির হোসেন অত্যন্ত মেধা ও শ্রম খাটিয়ে এবার সফল হয়েছেন কচু চাষেও। তারই নতুন উৎপাদিত কচু নাম দিয়েছেন নবরত্ন। দীর্ঘ ২৫ মাস গবেষণা চালিয়ে জংলী কালো কচু থেকে মুকি কচু গাচের লতার সাথে জোড় কলম করে এই কচু চাষ করেন। তিনি প্রমাণ করেছেন মুখি কচু বছরে ১ বার চাষ হলেও নবরতœ কচু চাষ করা যায় বছরে ২ বার। এ কচু জমিতে লাগানোর ৬০/৭০ দিনের মধ্যই সবজি হিসেবে বিক্রি করা যায়। কচুর উপরের অংশের গাছ লাল হয়। এই কচুর মাটির নিচের অংশ এবং উপরের অংশও সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। খেতে স্বাদ এবং বিক্রিতেও লাভ শতকে প্রায় ৪ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এলাকার কৃষকরা আমির হোসেনের কচু খেত দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে এই কচু চাষে।
আমির হোসেন জানান, বর্তমানে তিনি ২ বিঘা জমিতে পেঁপে ও সাথি ফসল হিসেবে হলুদ, আদা, ৩ বিঘা জমিতে কলা, ১০ শতাংশ জমিতে লেবু, ১৬ শতাংশ জমিতে কচু, ১৫ শতাংশ জমিতে মরিচ অন্যান্য জমিতে নেপিয়ার ঘাস, গেন্ডারী আখ, কুমড়া, পটল, মালাটা চাষ করছেন। এছাড়াও ঔষধি গাছও লাগিয়েছেন। ৫টি গাভি, ৩৫টি ছাগল, শতাধিক হাঁস-মুরগিও আছে তার। শুধু সম্পদের মালিকই হননি আমির হোসেন। তার এই চাষাবাদে দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় মিলছে সম্মাননাও। কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার। গত বছরের ১৬ই জুলাই ঢাকার ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তার হাতে এই পুরষ্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও জেলা, উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ৬ দফায় পুরষ্কার পেয়েছেন এবং জাতীয় ভাবেও পেয়েছেন সনদ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম সনেট সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।