রবিবার ● ৪ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » পরিবারের দাবী হত্যা-পুলিশ বলছে সড়ক দুর্ঘটনা
পরিবারের দাবী হত্যা-পুলিশ বলছে সড়ক দুর্ঘটনা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: (২০ কার্তিক ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় ভোর ৫.৫০মি) দ্বিতীয় দফায় আর বাঁচতে পারলেন না শফিকুল ইসলাম (৩৯)। তার আঘাতপ্রাপ্ত অর্ধমৃত দেহ পাওয়া যায় ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের লাউদিয়া এলাকায়। শরীরে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন। তবে সেটা সড়ক দুর্ঘটনা জনিত নাকি ধারালো অস্ত্রের আঘাত তা নিশ্চিত হতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সড়কের উপর পড়ে থাকতে দেখে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন শফিককে। পরে ফরিদপুরে নেওয়ার পথে শনিবার ভোর রাতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নিহত শফিক ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগান পাড়ার আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার ওরফে পটলা ডাক্তারের ছেলে। মা শাহিদা খাতুন অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে হামদহের বাসা থেকে মেয়ে তানজিলার জন্য ওষুধ কিনতে বের হয় শফিক। এরপর থেকেই ছেলের সন্ধান ছিল না। রাতেই পুলিশ তাদের খবর দেয় শফিক সড়ক দুর্ঘনায় আহত হয়েছেন। শাহিদা খাতুনের ভাষ্যমতে, গত ১৮ অক্টোবর দোকান বিক্রি নিয়ে শফিককে মারধর করে। সে সময় তার মাথায় একাধিক সেলাই দেওয়া হয়। হামদহ এলাকার মাতুব্বররা সে সময় তাদের থানা পুলিশ করতে দেয়নি। হামলাকারীকে সালিশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তারাই দ্বিতীয় দফায় হামলা করে শফিককে খুন করেছে বলে মায়ের দাবী। স্ত্রী বিউটি খাতুনের অভিযোগ, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে বাসার সামনেই হবে। লাউদিয়া বা চুটলিয়া এলাকায় শফিক যাবে কেন ? তাছাড়া শফিকের সারা শরীরে কাদা ও রক্তমাখা ছিল। বড় বোন সাজেদা খাতুন অভিযোগ করেন, তার ভাইকে ডেকে নিয়ে ধান ক্ষেতে খুন করে পরে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের লাউদিয়া এলাকার রাস্তার উপর ফেলে রেখে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই জন্য তার পুরা শরীরে কাদামাখা ছিল। হামদহ বাসষ্ট্যান্ডের মার্কেট ও জমিজাতি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলেও বোন সাজেদা খাতুন অভিযোগ করেন। ঘাতক চক্রটি হত্যা করে এখন সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন অসহায় পরিবারটি। এদিকে, ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, তিনি শনিবার রাত ১০টার দিকে কালীগঞ্জ যাওয়ার পথে সড়কের উপর রক্ত ও কাদামাখা অবস্থায় এক ব্যক্তির অচেতন দেহ দেখতে পান। তখনও তিনি বেঁচে ছিলেন। এ সময় তিনি ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই বখতিয়ারকে ডেকে দ্রুত তাকে ঝিনাইদহ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। ডাক্তারের অবহেলার কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, আমার দায়িত্ব ছিল একজন মুমুর্ষ রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো। এখন তিনি সড়ক দুর্ঘনায় নাকি কেও মেরে রাস্তার উপর ফেলে রেখে গেল তা আমি বলতে পারছি না। তাছাড়া তার পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে হত্যার কোন অভিযোগ করেন নি। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অপুর্ব কুমার জানান, সুরহাল রিপোর্ট ও ময়না তদন্তের পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা না সড়ক দুর্ঘটনা। তিনি বলেন, আমি শুনেছি লাশের শরীরের অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।