মঙ্গলবার ● ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » নবীগঞ্জ ভোটযুদ্ধে দ্বিমূখী লড়াই:কোন্দলে ধানের শীষ
নবীগঞ্জ ভোটযুদ্ধে দ্বিমূখী লড়াই:কোন্দলে ধানের শীষ
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: সব অপেক্ষার পালা শেষ ৷ কনকেনে শীতকে উপেক্ষা করে অবশেষে বুধবার অনুষ্টিত হচেছ নবীগঞ্জ পৌরসভার ৪ র্থ বারের নির্বাচন ৷ চার দিকে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব ৷ এ নির্বাচনকে কেন্দ্র কনে নতুন ভোটারদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উত্সাহ উদ্দীপনা ৷ জীবনে প্রথম বারের মত নির্বাচনে ভোট দিবে তারা ৷ বুঝেশোনে যোগ্য প্রাথীকে ভোট দেবার কথাই আসছে তাদের মুখ থেকে ৷ পোষ্টার আর ব্যানারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকার সকল অলিগলি ৷ বিশেষ করে এই বছর প্রথমবারের মত দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন হওয়ার কারনে ভোটারদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্যতা ৷ পৌর এলাকার সচেতন সকল ভোটারদের একটাই আলোচনা কে হাসবেন বিজয়ের হাসি ? এ বছর নবীগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে দুই লন্ডন প্রবাসী প্রার্থীসহ ৫ জন জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা প্রতীক), বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ছাবির আহমদ চৌধুরী (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী লন্ডন প্রবাসী জাহাঙ্গীর রানা (জগ), জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী মাহমুদ চৌধুরী (লাঙ্গল), অপর স্বতন্ত্র পার্থী লন্ডন প্রবাসী মোঃ জোবায়ের আহমদ চৌধুরী (মোবাইল)৷ আওয়ামীরীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী একজন সত্ নিষ্টাবান বিনয়ী ও দীর্ঘদিন কলেজ শিক্ষকতায় নিয়োজিত থাকার কারনে রয়েছে ক্লীন ইমেজ ৷ এছাড়া তিনি বর্তমান সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের একক মনোনীত প্রার্থী থাকার কারনে তার বিজয়ের সম্ভাবনা অনেকটা সহজ ৷ বিগত ৩ টি নির্বাচনের মধ্যে প্রথমবার তিনি নিজের ইমেজে পরের ২টিতে আওয়ামীলীগের সমর্থনে বিজয়ী হলেও এ বছর সরাসরি দলীয় প্রতিক থাকার কারনে ও আওয়াম লীগের মধ্যে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় রয়েছেন সবচেয়ে সুদৃঢ় অবস্থানে ৷ নির্বাচনের প্রথম দিকে নির্বাচনী প্রচারণায় ত্রিমূখি লড়াই থাকেলে হঠাত্ করে বদলে গেছে নবীগঞ্জের নির্বাচনী হালছাল৷ অপর দিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ৩ বারের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী এ বছরই প্রথম মেয়র পদে নির্বাচন করছেন ৷ কিন্তু বিএনপির মধ্যে দলীয় কোন্দল থাকায় তার অবস্থান প্রথম দিকে মোটামটি থাকলেও নির্বাচনে এখন তার নির্বাচনে ফ্যাক্টর হয়ে দাড়িয়েছে এক সময়ের বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম রানা৷ মত্সজীবি সমপ্রদায়ে তার রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক৷ তবে ওই ভোটারদের সিংহভাগ ভোট জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের বা গেলেও স্থানীয় ওই নির্বাচনে ঐ ভোটারদের মনোনীত একক প্রার্থী জাহাঙ্গীর রানা প্রার্থী হওয়ায় ধানের শীষের ভোটে ভাটা পড়েছে ৷ এছাড়া বিগত নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী মরহুম এড. আব্দুস সহীদ গোলাপের পক্ষে বিএনপির সকল নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে কাজ না করায় তিনি সামন্য ভোটের ব্যবধানে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর নিকট হেরে যান ৷ এ বছর পৌরসভা নির্বাচনে মরহুম এড. আব্দুস সহীদ গোলাপের স্ত্রী সিতারা গোলাপ স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম রানা পক্ষে মাঠে সরাসরি কাজ করে বিগত নির্বাচনে তার স্বামীর পক্ষে বিএনপি নেতাকর্মীরা কাজ না করার কথা তুলে ধরছেন৷ যার ফলে ধানের শীষের অবস্থা অনেকটা চুপসে গেছে ৷ আর এ কারনেই শেষ পর্যন্ত গত ২ দিনে নবীগঞ্জের পৌর নির্বাচনে ভোটের হিসাব পাল্টে ত্রিমূখী লড়াই শেষ পর্যন্ত দ্বিমুখী লড়াইয়ে পরিনত হয়েছে ৷ আর এ লড়াইয়ের মুল প্রতিদ্বন্ধিতায় এখন নৌকার সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর রানা’র জগ প্রতীকের হবে বলে অভিজ্ঞ মহল ধারনা করছেন ৷ তবে পৌরসভা নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখেন সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের ভোটাররা৷ তাদের ভোটে বিগত নির্বাচনগুলোতে বর্তমান মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী ৩ বার বিজয়ী হয়েছেন৷ আর এ সমপ্রদায়ের প্রায় সকল ভোটই নৌকার পক্ষে যায় বলে এবারও নৌকা মার্কা বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি৷
রির্টানিং অফিসার জেলা নির্বাচন অফিসার বেলায়েত হোসেন জানিয়েছেন, নবীগঞ্জের ১০টি কেন্দ্রই কমবেশী ঝুকিপূর্ন তবে সবচেয়ে বেশী ঝুকিঁপূর্ন চরগাও,তিমিরপুর ও জয়নগর রয়েছে তাই এসব কেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রদক্ষেপ সম্পন্ন করা হয়েছে৷
নির্বাচন কমিশন সূত্রে আরো জানাগেছে, প্রতিটি কেন্দ্রে ৩ টি করে মোবাইল কোর্ট থাকবে৷ এছাড়াও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও জুটিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সব কেন্দ্র পরির্দশন করবেন৷ বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীসব কেন্দ্রেই নিয়োজিত থাকবেন৷ এছাড়া তাত্ক্ষনিক ভাবে যেকোন সমস্যা সমাধানে মোবাইল টীম সব সময় মাঠে থাকবে৷