বৃহস্পতিবার ● ২৯ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পানছড়ির হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল আউয়ালের কাছে অনিয়মই নিয়ম
পানছড়ির হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল আউয়ালের কাছে অনিয়মই নিয়ম
পানছড়ি প্রতিনিধি :: (১৫ অগ্রহায়ন ১৪২৫ বাঙলা: বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৩৪মি.) খাগড়াছড়ি জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. আব্দুল আউয়াল এর বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তিনি পানছড়ি উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে পালন করেছে। তার কাছে অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানাযায়, মো. আব্দুল আউয়াল অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে সপ্তাহে প্রতি সোমবার আবার কোনো সময় বৃহস্পতিবার দাযিত্ব পালন করেন পানছড়িতে। তিনি যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় ঘুষ বাণিজ্য। আবার ঘুষ না দেওয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছে সেবা নিতে আসার লোকজন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ভুক্তভোগীরা বলেন, তিনি সেবা গ্রহীতাদের বিল থেকে ৫%, নতুন পেনশন কেইস প্রতিটি ৩০ হাজার, পেনশন বদলী বাবদ ৩ হাজার, জিপিএফ চুড়ান্ত বিল ১৫হাজার, জিপিএফ অগ্রিম বিল ৩ হাজার, এলপিসি বাবদ ২ হাজার টাকা করে নজরানা আদায় করে নেন। এ ছাড়া কল্যাণ সহকারীর পেনশন নিষ্পত্তির জন্য তিনি এক পরিবার এর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করেন।
আরো জানাযায়, দাপুটে এই কর্মকর্তা কার্যলয়টির জন্য আসবাবপত্র ক্রয় না করে সম্প্রতি সরকারী বরাদ্ধকৃত ১লক্ষ ৬৩হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যা এ অফিসের বিল রেজিস্টার ও মজুদ বহি খতিয়ে দেখলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
এ কার্যলয়ের চলতি হিসাব নং ৫৪২০৫০২০০০২৬৯ এ গত ২৭জুন রশিদ নং ৩২৭১৪১, ৪২, ৪৩ ও ৪৪মূলে সর্বমোট এক লক্ষ চৌষট্টি হাজার পাঁচশত বত্রিশ টাকা জমা করে পরবর্তীতে গোপনে তুলে নেন এক লক্ষ টাকা। যা সোনালী ব্যাংকে হিসাব চেক করলেই সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
সম্প্রতি অবসরে যাওয়া এক সরকারি কর্মকর্তা দুঃখের সাথে জানান, অবসরে গিয়েও শান্তি নাই। আমার পাশের অফিস হওয়া সত্বেও জিপিএফ চুড়ান্ত বিল উত্তোলন বাবদ ছয় হাজার ও লাম গ্র্যান্ট বাবদ ৪হাজার টাকাসহ ১০হাজার টাকা নজরানা দিয়েছি।
এক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক জানায়, ঋণ পরিশোধের জন্য জিপিএফ থেকে লোন তুলতে এসে ৭শ টাকা ঘুষ দিয়ে কোনো রকম উদ্ধার হয়েছি। ভারত প্রত্যাগত প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করেছেন দেড় লক্ষাধিক টাকা, তাছাড়া জুন ফাইনালেও তিন লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের কথা শুনা গেছে।
অপর দিকে বহিরাগত দিয়ে কার্যলয়ের কোন কাজ কর্ম পরিচালনার বিধান থাকলেও তিনি তাই করে যাচ্ছ। কার্যালয়টির আইবাস-২, ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহারে সিস্টেমে প্রবেশ করে টোকেনসহ বিল পাশ সংক্রান্ত কাজ করানো হচ্ছে। যা খুবই স্পর্শকাতর ও আইবাস-২ নিরাপত্তার অন্তরায়। পক্ষন্তরে অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, বাজেট অনুবিভাগ-১, অধিশাখা-৩ কর্তৃক ০২ জানুয়ারী/২০১৮তারিখে জারীকৃত পরিপত্র নং-০৭.০০.০০০.১০৩.১৮.০০১.১৫ (অংশ) দুই সংখ্যক পরিপত্রের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। অফিসের সরকারী অন্য কর্মকর্তারা এই অফিসের কোনো তদারকীতে নেই। বিশ্বস্ত সূত্রে জানাযায়, হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল ধরে না।
এ সকল বিষয়ে মো. আব্দুল আউয়ালের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, অসম্ভব ব্যপার। আমি আর অল্প কয়েকমাস পরেই অবসরে যাব আমাকে অযথা হয়রানি করার জন্য হয়তো কেউ এসব মিথ্যা বলছে। তবে আমার অনুরোধ লেখালেখি করে আমাকে অযথা হয়রানি করবেন না। আপনাদের কি প্রয়োজন বলেন।
পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়াদি খতিয়ে দেখা হবে। ঘুষ বানিজ্যে আর অনিয়মের ব্যাপারে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।