বুধবার ● ৫ ডিসেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » নওগাঁ » বিজয়ের চিহ্ন ছড়িয়ে দিতে লাল সবুজের ফেরিওয়ালা
বিজয়ের চিহ্ন ছড়িয়ে দিতে লাল সবুজের ফেরিওয়ালা
আত্রাই (নওগাঁ) :: নওগাঁর আত্রাইয়ে বিজয়ের বাণী ছড়িয়ে দিতে ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতার চিহ্ন, আবেগের বহিপ্রকাশ ও সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি পতাকা বিক্রি করছে লাল সবুজের ফেরিওয়ালা।
কৃষ্ণচূড়ার লাল গেঁথে আছে সবুজের প্রান্তরে। দুলছে বাতাসে বিজয় দিবসের বাণী ক্ষণে ক্ষণে। ছড়িয়ে দিতে চাইছে দিগন্তে লাল-সবুজের পতাকা। রক্তমাখা পতাকা, যেখানে লুকিয়ে আছে বাংলার সবুজ-শ্যামল বিজয় গাঁথার হাজার বছরের রুপকথা। আমাদের দেশ বাংলাদেশ প্রিয় মাতৃভূমি এদেশে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি বা শহীদ দিবসসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে জাতীয় পতাকা ওড়ানো হয়ে থাকে। এসব দিনে অনেকেই শখ করে পতাকা মাথায় বাঁধেন। অনেকের গাড়িতেও শোভা পায় জাতীয় পতাকা।
বিজয় দিবস উপলক্ষে এবারেও ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিটি এলাকায় এখন পতাকা তৈরির ধুম পড়েছে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস বাঙালির শৃঙ্খল মুক্তির দিন। বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন। ইতিহাসের পৃষ্ঠা রক্তে রাঙিয়ে, আত্মত্যাগের অতুলনীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে একাত্তরের এই মাসকে কেন্দ্র করে আর ক’দিন পরেই দেশবাসী পালন করবে মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মহানস্বাধীনতা যুদ্ধে জীবনবাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙালি জাতি। ছিনিয়ে আনে লাল-সবুজের পতাকা। তাই বিজয়ের মাসে জাতীয় পতাকা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ওইদিন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ দোকানপাট সর্বত্র পত পত করে উড়বে লাল সুবজের জাতীয় পতাকা।
মহান বিজয় দিবসকে সামনে রেখে কয়েক ফুট লম্বা বাঁশের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বড় থেকে ছোট আকারের পতাকা সাজিয়ে পথে পথে ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। জাতীয় পতাকা বিক্রির উদ্দেশ্যে গতকাল পড়ন্ত বিকালে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মির্জাপুর-ভবানীপুর বাজারে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছিপছিপে গড়নের এক যুবক। উত্তরের হিমবাতাসে পতপত করে উড়ছিল বাঁশের সঙ্গে বেঁধে রাখা পতাকা। আকার ভেদে একেকটি পতাকা ২০ থেকে ২০০ টাকা আর ব্যাচ বিক্রি করছে ১০ টাকা করে।
কথা হয় মৌসুমী পতাকা বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের সঙ্গে তার ভাষ্যমতে, পতাকা উড়তে দেখে অনেকের মনই উতলা হয়ে ওঠে। বিজয় দিবসকে স্মরণ করে তাই অনেকে সেই পতাকা কিনে বাড়ির ছাদ, বেলকনি, গাড়ি, রিকশা ও মোটরসাইকেলের সামনে ওড়াতে চান। এই সুবাদে তার মতো মৌসুমী পতাকা বিক্রেতাদের বাড়তি উপার্জনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায় লাল-সবুজের পতাকা।
বাড়ি কোথায় প্রশ্ন করতেই রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি এই জেলার অধিবাসী নন। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। তবে অন্য কোনো কারণে নয়, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কেবল জাতীয় পতাকা বিক্রি করতেই আত্রাইয়ে এসেছেন ফরিদপুরের এই অধিবাসী।
রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলার সময় মাগুড়া আকবরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবেন্দ্রনাথ পাল কিনলেন দু’টি পতাকা। তিনি জানালেন, একটি আমার বিদ্যালয়ের জন্য অন্যটি বাসায় উড়ানোর জন্য। পতাকার ফেরিওয়ালারা বিজয় দিবসের আগমনী বার্তা বহন করে আনে এই মফস্বল এলাকার মানুষের কাছে। আমি চাই গোটা বাংলাদেশ বিজয়ের মাসে ছেয়ে যাক আমাদের গর্বিত পতাকায়। আর নিজেদের স্বপ্ন বুনুক পতাকার ফেরিওয়ালারা।