শনিবার ● ৮ ডিসেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » জাতীয় » ইসিতে বেগম জিয়ার রায় নিয়ে যা হলো
ইসিতে বেগম জিয়ার রায় নিয়ে যা হলো
অনলাইন ডেস্ক :: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিল আবেদন নামঞ্জুর করেছে নির্বাচন কমিশন। এর ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার আর অংশ নেওয়া হচ্ছে না। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়ন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিভক্ত আদেশ দিয়েছে।
খালেদা জিয়া এবার ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় তার তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
শনিবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তি করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী মনোনয়ন বৈধতার বিষয়ে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।
শুনানিতে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের সাথে তর্কযুদ্ধ চলছে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মাদ আলীর।
ঠিক তখনই নিজের পরিচয় দিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসনের (ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭) নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘আইনগত বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়ার উক্ত আপিল মঞ্জুর করার পক্ষে আমি রায় প্রদান করছি।’
তার এই ঘোষণার পরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এজলাসের মধ্যেই উল্লাস করতে থাকেন। ঠিক তখনই নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানাম বলে উঠেন, ‘না, না, এই ডিসিশান সবার না। শুধু একজনের।’
তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলতে থাকেন, ‘একজনের রায় হলেই আপিল মঞ্জুর বলে বিবেচিত হবে।’ এ পর্যায়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উচ্চস্বরে বলতে থাকেন, ‘এটি একজনের রায়, ফুল কোর্টের নয়।’
এর পরপরই নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত লোককে আমি প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করতে পারি না। আমার রায় হলো, এই আপিল মঞ্জুর করা যায় না। নামঞ্জুর করা হলো।’
এবার এজলাসে আরেকপক্ষ উল্লাস করতে থাকেন। তারা হাততালি দেন।
তখন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ ধারা অনুযায়ী, এ আপিল নামঞ্জুর করা হলো।’
সবশেষ নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম আবারও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দণ্ড বহাল আছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার অর্ডারের যে বক্তব্য এবং স্পিরিট দেখছি, দণ্ডপ্রাপ্ত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) যে কথাটি এসেছে, সেটি মেয়ার ওমিশন। দণ্ডপ্রাপ্ত হিসেবে নামঞ্জুর করা হলো।’
কমিশনারদের নিজের রায় উপস্থাপন করার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার শাহাদাৎ, নির্বাচন কমিশনার কবিতা এবং নির্বাচন কমিশন রফিকুল ইসলাম দণ্ড বহাল আছে বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে আমি খালেদা জিয়ার আপিল নামঞ্জুর করলাম।’
শুনানি শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘কমিশনার মাহবুব তালুকদার মনোনয়ন গ্রহণের পক্ষে রায় দিয়েছেন। আর সিইসিসহ বাকিরা খালেদা জিয়ার বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন। আপিলটি ৪-১ ভোটে নামঞ্জুর হলো। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পাচ্ছেন না।’
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। তবে আপিল বিভাগে তার সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়। - নয়া দিগন্ত