শনিবার ● ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গৌরীপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত-১ : অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ
গৌরীপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত-১ : অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ::ময়মনসিংহের গৌরীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় আ’লীগ নেতা ইউপি সদস্য মোস্তাকীম মিয়া (৩৫) নিহতের ঘটনায় অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নিহত মোস্তাকীম মিয়া আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতা এবং গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য।
শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর থেকে দফায় দফায় বালুচড়া, মানিকদি, বাসাবড়ি ও স্বল্পপশ্চিমপাড়ার ৪টি গ্রামের প্রায় অর্ধশত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে নিহতের স্বজনরা বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার গুলোর।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ,আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু সাইদ ওরফে সাহেদ আলী মেম্বার ও তার ছেলে একই ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার স্বপন মিয়ার হামলায় মোস্তাকীম মিয়া নিহত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ১১টার দিকে গৌরীপুর উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নে বাসাবাড়ি রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় পুর্বে থেকে উৎপেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী মোস্তাকীম মিয়ার উপর অর্তকিত হামালা চালিয়ে প্রকাশ্যে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিঠিয়ে তার কোমড়, দু’পা ও ডান হাত ভেঙ্গে দেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মোস্তাকীমকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও অবস্থায় অবনতি দেখে ডাক্তার তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসাপাতালে রেফার করেন। কিন্তু ওখানে অবস্থার অবনতি হলে গত তিনদিন ধরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ৮ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বৃহষ্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। সেইসাথে সংঘাত ও হামলার এড়াতে বৃহষ্পতিবার রাত থেকে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। কিন্তু ভোর থেকে বিক্ষুব্ধ লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে দফায় দফায় বিভিন্ন বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায়। তাদের মধ্যে বালুচরা গ্রামের আবু সাইদ ওরফে সাহেদ আলী মেম্বার গংদের ৭টি ঘর, দুলাল মিয়ার ৪টি ঘর, সাইকুলের ২টি ঘর, বিপ্লবের ২টি ঘর, মিলনের ১টি ঘর, রফিকের ১টি ঘর, সাবেদ আলীর ৩টি ঘর, সাইদুলের ২টি ঘর, হাসিমের ২টি ঘর, মোয়াজ্জেমের ৩টি ঘর, রুবেলের ৩টি ঘর, রুকনের ২টি ঘর স্বল্পপশ্চিমপাড়া গ্রামের খোর্শেদের ২টি ঘর, আবু হেনা মোস্তফা কামাল গংদের ৪টি ঘর, নিজামাবাদ গ্রামের মোন্নাফের ১টি ঘর, হারুনের ৪টি ঘর ও মানিকদি গ্রামের ইউসুব আলীর ৫টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় তাদের ঘরের আসবাবপত্রও লুটপাট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবার গুলোর।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করে জানান, তাদের ঘরে ধান-চাল ও রান্নার পাতিলগুলোও নেই। পানির টিউবওয়েলগুলো ভেঙ্গে নিয়ে গেছে। আবার অনেকের গরু ছাগলও লুট হয়েছে।
বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে দমকল বাহিনীসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। জেলা পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
গৌরীপুর থানার অফিসার(ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মোস্তাকীম মেম্বারের উপর হামলার অভিযোগে আবু সাইদ ওরফে সাহেদ আলী মেম্বারকে ঘটনার পরে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। আর ইউপি মেম্বারের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
এ রির্পোট লিখা পর্যন্ত নিহতের লাশ ঢাকা থেকে এখনও নিজ বাড়িতে পৌঁছেনি।