রবিবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » একই অভিযোগে সরদার এর প্রার্থীতা বহাল থাকলেও লুনা’র স্থগিত
একই অভিযোগে সরদার এর প্রার্থীতা বহাল থাকলেও লুনা’র স্থগিত
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনের নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী ঘরানার হিসেবে পরিচিত অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদার’র প্রার্থীতা বহাল থাকলেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা’র প্রার্থীতা স্থগিত করা হয়। অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদার সরাসরি একটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পরও তার প্রার্থীতা বহাল এবং তাহসিনা রুশদীর লুনা সরকারি প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে কর্মরত না থেকেও তার প্রার্থীতা স্থগিত হওয়ায় এনিয়ে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। লুনার প্রার্থীতা স্থগিত করার বিষয়টি একটি ষড়যন্ত্রের অংশ ও সরকারের হয়রানীমূলক প্রদক্ষেপ মনে করছে বিএনপি।
জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে তাহসিনা রুশদীর লুনা আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়ন দাখিলের পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লুনা ও সরদারের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার অভিযোগ করেন এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী জাপা’র বর্তমান এমপি ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী এহিয়া। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন- আরপিও অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেয়ার তিন বছর পর সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার বিধান থাকলেও তাহসিনা রুশদীর লুনা ৬ মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদ থেকে অব্যাহতি নেন এবং অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদার জৈন্তাপুর ইমরান আহমদ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। তাই লুনা ও সরদার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। প্রাথমিক বাছাইয়ে এনামুল হক সর্দারের মনোনয়ন বাতিল হয়, পরবর্তীতে তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে আপিলেও তার প্রার্থীতা বাতিল হয়। এরপর তিনি হাইকোর্টে আপিল করে আইনি লড়াই চালিয়ে প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে মাঠে এখন সক্রিয়। অন্যদিকে, জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রাথমিক বাচাইয়ে ও পরবির্ততে নির্বাচন কমিশনের আপিলে তাহসিনা রুশদীর লুনার মনোনয়ন বৈধ হলে তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন মহাজোট প্রার্থী ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী। উক্ত রিট পিটিশন শুনানীর পর লুনার প্রার্থীতা স্থগিতের নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে, অধ্যক্ষ ড. এনামুল হক সরদার সরাসরি একটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েও আওয়ামী লীগ ঘরানার বিদ্রুহী প্রার্থী হওয়ায় তার প্রার্থীতা বহাল থাকায় এবং সরাসরি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত না থেকেও তাহসিনা রুশদীর লুনার প্রার্থীতা স্থগিত হওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে। তাদের অভিযোগ সরকার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে লুনাকে নির্বাচন থেকে সরাতে চায়। তবে আইনী লড়াইর মাধ্যমে লুনার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হবে, এমনটাই আশাবাদি বিএনপি। তাই তারা ধানের শীষের পক্ষে প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বশির আহমদ বলেন- ২০১৪ সালের মত বিএনপিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে খালি মাঠে গোল দিতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ইয়াহই্য়া চৌধুরীর অভিযোগ মিথ্যা হওয়ায় নির্বাচন কমিশন ভাবির (লুনার) প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করলেও আদালত এই অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রার্থীতা স্থগিত করেন। অতচ সরাসরি একটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার কারণে এনামুল হক সরদারের প্রার্থীতা বাতিল করেন নির্বাচন কমিশন। কিন্ত তিনি আওয়ামী লীগের হওয়ায় তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। আইন সমানভাবে প্রয়োগ হলে এনামুল হক সরদারের প্রার্থীতাও বাতিল হওয়ার কথা। তিনি বলেন- আমরা আশাবাদি আইনী লড়াইর মাধ্যমে ভাবি (লুনা)’র স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হবে এবং বিপুল ভোটে তিনি বিজয়ী হবেন।
এছাড়া এই আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (মহাজোটের বিদ্রুহী) আওয়ামী লীগ নেতা ও বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান (ডাব), খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাছির আলী (দেয়াল ঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপি ঘরানার হিসেবে পরিচিত) আব্দুর রব মল্লিক (বাস), গণফোরামের মুকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য্য), ইসলামী আন্দোলনের মোঃ আমির উদ্দিন (হাত পাখা), এনপিপির মনোয়ার হোসাইন (আম) ও বিএনএফ এর মোশাহিদ খান (টেলিভিশন)।