বৃহস্পতিবার ● ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » গাজিপুর » গাজীপুরে ছেড়া-নষ্ট বই দেয়া হচ্ছে
গাজীপুরে ছেড়া-নষ্ট বই দেয়া হচ্ছে
গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: বছরের শুরুতে নতুন শিক্ষা বর্ষের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনা মূল্যে নতুন বই বিতরণের কথা থাকলেও গাজীপুরের শ্রীপুরে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য ছেড়া ও নষ্ট বই দেয়া হয়েছে ৷ এতে স্থানীয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে৷ তবে উপায় না থাকায় ওই বই তাদের (শিক্ষার্থীদের) নিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার গুদামের ফাটল ও বাতাসের আর্দ্রতাজনিত এবং দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে বান্ডেল স্তুুপ করে রাখা নীচের অংশের কয়েকটি বান্ডেলের বই নষ্ট হয়েছে বলে দাবী করেছেন৷
জানা গেছে, নতুন বছরের প্রথম দিন (১জানুয়ারী) সারা দেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যের নতুন বই বিতরণের কথা রয়েছে৷ এ উপলক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিস থেকে বই দেয়া হচ্ছে ৷ গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকেও স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য বই দেয়া শুরু হয়েছে৷ তবে দেয়া এসব বইয়ের অনেকগুলোই ছেড়া ও নষ্ট ৷
নতুন শিক্ষা বর্ষের নতুন বই গ্রহনের জন্য ২৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বই দেয়ার শেষ দিন দুপুরে শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসের গুদামের সামনে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ভিড় করতে দেখা গেছে ৷ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য বই গ্রহনের পর তাদের অনেককেই ছেড়া ও ভেজা বই হাতে নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ করতে দেখা গেছে৷
বই নিতে আসা একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা জানান, ছেড়া ও ভেজা এসব বই তারা নিতে না চাইলেও শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারি ওইসব বই তাদের নিতে বাধ্য করছে৷ দেয়া এসব বই যেসব শিক্ষক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রহন করবে না, তাদেরকে বই দেয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে৷
শ্রীপুর উপজেলার নগর হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে কিছু ভাল বই দেয়া হলেও অর্ধেকের বেশি বই দেয়া হচ্ছে ছেড়া ও নষ্ট বই৷ এসব বই শিক্ষার্থীরা হাতে পেলে খুশী হবে না৷ কিছুদিন পর পুরো বই খুলে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে৷
স্থানীয় বারতোপা শিশু কাননের সহকারি শিক্ষক মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, শিক্ষা অফিস থেকে যে বই তিনি পেয়েছেন তার ৫০শতাংশ বই ছেড়া, ভেজা ও নষ্ট ৷ অনেক বই আলগাও হয়ে গেছে৷
এছাড়াও মা মনি একাডেমি এন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান জানান, তার প্রতিষ্ঠানের জন্য পাওয়া বইগুলোর মধ্যে ৯০শতাংশ বই ছেড়া ও ভেঁজা৷ এসব বই শিক্ষার্থীরা হাতে পাওয়ার পর আনন্দ পাওয়ার বদলে আরো কষ্ট বেড়ে যাবে৷
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান খাঁন জানান, আমাদের নিজস্ব কোন গুদাম নেই৷ তাই বিএডিসির একটি গুদামে সরবরাহের জন্য বইরাখা হয়৷ ওই গুদামের ফাটল ও বাতাসের আর্দ্ররতাজনিত এবং দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে বান্ডেল স্তুুপ করে রাখা নীচের অংশের কয়েকটি বান্ডেলের বই নষ্ট হয়েছে৷ যা তুলনা মূলক কম৷ তবে যেসব স্কুলের বইয়ে ত্রুটি রয়েছে নতুন বই এলেই সেসব স্কুলের বই বদলিয়ে দেয়া হবে৷