রবিবার ● ৬ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ময়মনসিংহে সৈয়দ আশরাফের জানাজায় জনসমুদ্র
ময়মনসিংহে সৈয়দ আশরাফের জানাজায় জনসমুদ্র
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহ নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দান মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনানী, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নামাজে জানাজা প্রায় লক্ষাধিক মুসুল্লির অংশ গ্রহনে জনসমুদ্রে পরিনত হয়। মূল মাঠ ছাড়িয়ে নগরীর কাচুঝুলি এলাকায় রাস্তায় পথে মুসুল্লিদের কাতার বন্দি হয়ে নামাজে জানাজায় অংশ গ্রহন করতে দেখা যায়।
আজ রবিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ২ টা ৫১ মিনিটে নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে তাঁর তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মরহুমকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। তার আগে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে নিজ নির্বাচনী এলাকা কিশোরগঞ্জ-১আসনের কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের দ্বিতীয় নামাজে জানাজায়ও কয়েক লাখ লোকের অংশগ্রহনে জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পরে কিশোরগঞ্জ থেকে মরদেহবাহী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার জন্মভিটা ময়মনসিংহ নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে দুপুর আড়াইটায় অবতরণ করে। সেখান থেকে নেয়া হয় নগরীর আঞ্জুমান ঈদগাহ ।
জানাজা নামাজের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ও প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভাই ডা. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।
ররেণ্য ওই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামাজে জানাজায় ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন আহমেদ, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোঃ ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পাঠান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদুল হাসান, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিবসহ সর্বস্তরের মানুষজন অংশ নেন।
তার জানাজায় অংশ নেয়ার জন্য দুপুর থেকেই বিভিন্ন জেলা,উপজেলা থেকে সর্বস্তরের মানুষজন আসতে থাকেন আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে,দ্রুত বাড়তে থাকে জনসমাগম। দুপুর ২টার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দান। ভালবাসার প্রতিদান দেয়ার প্রত্যয়ে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনায় মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় মূল মাঠ ছাড়িয়ে নগরীর কাচুঝুলি এলাকায় রাস্তায় পথে মুসুল্লিদের কাতার বন্দি হয়ে নামাজে জানাজায় অংশ গ্রহন করতে দেখা যায়।
এখানে আগত শোকাহত নেতাকর্মী ও জনতা বলছেন, তারা সৈয়দ আশরাফকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে এবং তার জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন আঞ্জুমান ঈদগাহ ময়দানে। প্রিয় নেতার স্মরণে ময়মনসিংহ নগরীর অধিকাংশ দোকান-পাট বন্ধ রাখতে দেখা যায় আগে থেকে। কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ আশরাফের শুভানুধ্যায়ীরা। সেখান থেকে ফের ঢাকায় নিয়ে বাদ আসর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে রাজনীতির সাদামনের শুদ্ধমানুষ সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সম্পন্ন হয়েছে সৈয়দ আশরাফের প্রথম নামাজে জানাজা। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদসহ সর্বস্তরের জনতার অংশগ্রহণে এ জানাজা শেষে মরহুমকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়।
এরপর তার মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। তারপর মরহুমের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য,দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে গত ৩ জানুয়ারি রাতে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। পরে ব্যাংকক থেকে ৪ জানুয়ারি সন্ধায় একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয় তার মরদেহ। বিমানবন্দর থেকে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিয়ে যাওয়া হয় তার বেইলি রোডের বাসায়। সেখানে মরহুম আসরাফুল ইসলামকে শেষশ্রদ্ধা নিবেদন করেন দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা-সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা। এরপর তার মরদেহ নিয়ে রাখা হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে। সেখান থেকেই সকালে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়।