রবিবার ● ৬ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাউজানে টার্কি পালন করে স্বাবলম্বী অালমগীর
রাউজানে টার্কি পালন করে স্বাবলম্বী অালমগীর
অামির হামজা. রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: অাট-নয় বছর অাগে প্রবাসী জীবন পাড়ি দিয়েছিল অালমগীর, কিন্তু ভাগ্যের চাকা সে দেশে ঘুরাতে পারিনাই, অাবারো দেশে ফিরে অাসার পর বেকার জীবনে পা রাখেন তিনি, সে বেকার জীবনের সাথে সংগ্রাম করে ছিলেন নানা রকম ব্যবসায়, সে ব্যবসায়ও কোনরকম সফলতার মুখে দেখতে পারেনাই। পরে বেশ কিছু বছর অাবারো বেকার জীবনে পা রাখেন অালমগীর। কিন্তু তার সাহস তাকে পরাজিত করতে পারেনাই এবার উদ্যোগ গ্রহণ করলেন টার্কি মুরগি পালন করা।
টার্কি জাতের মুরগি পালন করে এক বছরের সফলতা পেয়েছে তিনি, সে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের যুবক খামারি মো. অালমগীর। এক বছর অাগে মাত্র ১০টি টার্কি বাচ্চা নিয়ে এই খামার শুরু করলেও বর্তমানে এখন দুই শতাধিক টার্কি মুরগি রয়েছে। আর এই টার্কি মুরগি বিক্রি ও বাচ্চা উৎপাদন করেই আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি ও তার পরিবার। রাউজানে অালমগীরের এই টার্কি খামার দেখে এবং তা লাভজনক হওয়ায় আশপাশের অনেক বেকার যুবক এখন টার্কি চাষে উৎসাহিত হয়ে ওঠছেন।
মো. অালমগীর বলেন, দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। দেশে ফিরে এসে কিছু ব্যবসায় করে অনেক টাকার ক্ষতি করি। এরপরে অার কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য করার সাহস পাচ্ছিলাম না। অনেকে বার বিভিন্ন ব্যবসায় পুঁজি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ি। পরে মদুনাঘাট এলাকার একজন টার্কি ব্যবসায়ী সাথে প্রশিক্ষণ নিয়। সমাজের একজন বেকার লোক ছিলাম কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরে দাঁড়িয়েছে টার্কি পালন করে। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে দিন দিন বাড়তে থাকে অামার টার্কি মুরগির সংখ্যা। বর্তমানে আমার খামারে তিন শতাধিক টার্কি মুরগি রয়েছে। সে টার্কি মুরগির পাশাপাশি ছোট কয়েল পাখিও পালন করছেন, তিনি নিজে কয়েল পাখির ডিম বিশেষ পদ্ধতি উৎপাদান করে বাচ্চা ফুটান, পরে দুই থেকে তিন মাস পর বাজারে বিক্রি করেন। তিনি বলেন বাজারে কয়েল পাখির চাহিদা অনেক বেশি, ৯০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০ টাকা পযন্ত বিক্রিয় হয়। এবং টার্কি মুরগির ডিম প্রতি জোড়া ২০০ টাকা করে বাজারে বিক্রিয় করছি।
তিনি অারো বলেন, টার্কির খাবারের জন্য তেমন কোনো সমস্যা হয় না। দানাদার খাবারের সঙ্গে সবুজ ঘাস, পাশাপাশি সবজিও খেতে বেশ পছন্দ করে। টার্কির রোগবালাই খুব কম। তিনি বলেন টার্কি মুরগি বছরে প্রায় ১’শ থেকে দেড়শটি পর্যন্ত ডিম পাড়তে সক্ষমতা রাখে। একটি টার্কি মুরগি ২০০ হাজার টাকা ধরে বাজারে বিক্রিয় হয়। ছোট টার্কি বাচ্চা জোড়া বিক্রি হয় এক হাজার থেকেও বেশি ধরে। প্রতি মাসে তার খামার থেকে প্রায় ১ লাখ টাকারও বেশি টার্কি মুরগির বিক্রি হয়।
কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বাংলাদেশে গ্রাম-অঞ্চলে টার্কি বর্তমানে একটি সফল ব্যবসা হিসবে পরিচিতি লাভ করছেন, টার্কি পালন করে বর্তমানে অনেকেই সফল হয়েছে। লাভজনক হওয়ায় চট্টগ্রামের রাউজানে দিন দিন টার্কি মুরগির চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সব সময়ই টার্কি খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।