বুধবার ● ৯ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহের নানা রূপ প্রতীক ফুটে উঠে নকশি কাঁথায়
ঝিনাইদহের নানা রূপ প্রতীক ফুটে উঠে নকশি কাঁথায়
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: কাপড়ের উপর তৈরি নকশা করা কাঁথাই নকশি কাঁথা। বিশদভাবে এভাবে বলা যায়, সূক্ষ হাতে সুচ আর বিভিন্ন রঙের সুতায় গ্রাম বাংলার বউ-ঝিয়েরা মনের মাধুরী মিশিয়ে নান্দনিক রূপ-রস ও বৈচিত্রের যে কাঁথা বোনেন, তা-ই নকশি কাঁথা। বাহারি নকশি কাথার প্রচলন এখন আছে। জীবন ও জগতের নানা রূপ প্রতীকের মাধ্যমে ফুটে উঠে নকশি কাঁথায়। আবহমান কাল ধরে নকশি কাঁথায় যে শিল্পকর্ম ফুটে ওঠেছে তা বাংলার শিল্প, সংস্কৃতি, সমাজ, প্রকৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য। এ থেকে পিছিয়ে নেই ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বউ-ঝি-রা। ওদের হাতে দামী কোন মোবাইল নেই। নেই এসি রুমে থাকার বাতিক। সারাক্ষন তারা ফেসবুকে দাপিয়েও বেড়ান না। শিক্ষার দিক টা যে খুব বেশি তাও না। কিন্তু হাতের কাট কিন্তু খুবই সুন্দর। গ্রাম এলাকার মা, খালা ও বোনেরা সংসারে কাজের ফাঁকে পড়ন্ত বিকালে, সকালে দাই-দেয়েদি নিয়ে বসে পড়েন উঠানের এক কোনায়। চোখে মুখে তাদের স্বপ্ন বুননের গান। কেও হাসিয়া ধাগা কেও বা এস ধাগায় ফুটিয়ে তুলছেন মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা ভালবাসার গল্প। নকশি কাঁথার ভাজে ভাজে কত না স্বপ্নই তাদের জমা হচ্ছে। গ্রামের প্রতি বাড়ি বাড়িই বিকাল হলেই মেয়েরা নকশি কাঁথা নিয়ে বসে। তাঁদের সুঁচের আগায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন। এই কাঁথা তারা নিজে ব্যবহার করেন আবার বিক্রিও করেন বলে ঝিনাইদহ সদরের বংকিরা গ্রামের গৃহবধূ জহুরা বেগম জানান। দাম বেশ খানিক টা বেশি। এদিকে একই গ্রামের রমেচা বেগম বলছেন, একটা কাঁথা সেলাই করতে তাদের ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। অনেকে বাহারি রকমের নকশা দিয়ে থাকে, তাদের বেলায় একটু সময় বেশি লাগে। কেউ মেয়ে-জামাইদের জন্য কাঁথা সেলাই করে থাকে। কেউ সেলাই করে নিজ বাড়িতে তুলে রাখে, কবে কখন মেহমান আসবে তখন বের করে তাদের সামনে দিবে। এভাবে চলছে গ্রাম এলাকায় মহিলা নকশা করা বাহারি কাাঁথা সেলাই করা বৈচিত্র। ঝিনাইদহের সিমান্ত জীবনা গ্রাম এলাকায় এখনও হাসিয়া ধাগা কেও বা এস ধাগায় ফুটিয়ে তোলার কাথার প্রচলন রয়েছে। পুরাতন ঐতিহ্য এখন নষ্ট হয়নি। জীবনা গ্রামের গৃহবধু ডলি বেগম বলেন, তারা নিজেদের বাড়ির কাজ শেষ করে এসব সেলাই এর কাজ করে থাকে। অবশ্য এটা তাদের সময় কাটানোও নেশার ন্যায় করে থাকে। অনেকে আবার ৮,শ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করে থাকে।