বৃহস্পতিবার ● ১০ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » যুবরাই লড়বে, সোনার বাংলা গড়বে
যুবরাই লড়বে, সোনার বাংলা গড়বে
মাইনুল হাসান, রাজশাহী প্রতিনিধি :: নিজেস্য “যুবরাই লড়বে, সোনার বাংলা গড়বে” এই স্লোগানকে সামনে রেখে ৬ জানুয়ারী ২০১৯ হতে ১০ই জানুয়ারী ২০১৯ পর্যন্ত রাজশাহী ও রংপুরের যুবরা ৫ দিন ব্যাপি “সমস্যা সনাক্ত করণ” শির্ষক কর্মশালায় অংশ গ্রহন করে । উক্ত কর্মশালায় ২ জেলার যুবরা মিলে বাংলাদেশ সরকাররের যুব নীতিমালা-২০১৭ মতাবেক বাংলাদেশ সরকাররকে আরো একধাপ এগিয়ে নিতে ২০১৯ সালের জন্য একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে ।
এক্ষেত্রে তারা সকলেই বিশ্বাস করে যে, “বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক যুবনীতি রয়েছে, তা সঠিক ভাবে বাস্তবায়নে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে ।
এতে করে তারা সকলেই এক কাতারে সমাবেত হয়ে নিজেদের বদলানোর মাধ্যমে অন্যদের বদলানোর অঙ্গিকার ব্যক্ত করে । উক্ত পশিক্ষনে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ১১ জন মেয়ে ও ৯ জন ছেলে সহ ২০ জন এবং রংপুর মিঠাপুকুরের ১৩ জন মেয়ে ও ৯ জন ছেলে সহ ২২ জন, সর্ব মোট ৪২ জন যুব একই সাথে অংশ গ্রহণ করে । তারা তাদের নিজ নিজ এলাকা কেন্দ্রিক নানাবিধ সমস্যা সনাক্ত করে এবং কিভাতে সেই সকল সমস্যা থেকে বের হওয়া যায় সে ব্যাপারে শিক্ষা গ্রহণ করে ।
আমাদের দেশে এখন বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন কাজ করছে। অল্প পরিসর থেকে শুরু করে ব্যাপক আকারে কাজ করে চলেছে এসব সংগঠন। এক সময় তরুণ তরুণীরা শুধুমাত্র রেড ক্রিসেন্ট, বি এন সি সি বা স্কাউটিং এর মত সামাজিক কাজ করে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তারা ছড়িয়ে পড়েছে অনেক বিস্তৃত আকারে এবং বিভিন্ন ফরম্যাটে। এখনকার তরুণ তরুণীরা কাজ করছে পথশিশু, প্রতিবন্ধী , স্কিল ডেভেলপমেন্ট , নেতৃত্ব চর্চা, শিল্পচর্চা সহ বিভিন্ন জায়গাতে। সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্দ্যেগে কিংবা আর্থিক সহযোগীতা নিয়ে গড়ে উঠা এসব সংগঠনে তারা কাজ করছে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে।
আইকেয়া ফাউন্ডেশন (ন্যাদারল্যান্ড) - এর আর্থিক সহায়তায় অক্সফাম ইন বাংলাদেশ এর একটি প্রকল্প ই.ওয়াই.ডব্লিউ (ইম্পাওয়ার ইয়ুথ ফর ওয়ার্ক) বাস্তবায়ন করছে আর.ডি.আর.এস বাংলাদেশ এর পক্ষে ২ জেলার এই সকল যুবরা । কোন ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা চিন্তা করে কিংবা আয় উপার্জন, সুনামের আশায় তারা এসব করছে না। গত কয়েক বছরে এসকল যুবদের প্রাপ্তি দেখার মত। দেশব্যাপী এসব কাজ শুরু হলেও এখনও বেশিরভাগ তরুণ তরুণীরা এতে যুক্ত হচ্ছে না। অনেকেই এখনও ব্যক্তি কেন্দ্রিক চিন্তা ভাবনার মারপ্যাঁচ থেকে বেরুতে পারছেন না। অনেকে চিন্তা করছেন এসব কাজ করে আমার লাভ কি ? আমি কেনই বা এসবে যোগ দিব ? এরচে তো আমি আমার এই সময় আয় উপার্জনে কাজে লাগাতে পারি!!
তাদের জন্যই মূলত এই জবাব দেন একজন যুব প্রতিনীধি । আচ্ছা আপনি যদি এখন একটা বিয়ের আয়োজন করেন, আপনার পরিবারেরই। আপনাকে কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে ? সর্বনিম্ন মূল্যে সবচে ভাল জিনিস গুলো যোগাড় করা সব প্রয়োজনীয় জিনিস এক জায়গায় করা এবং তা সঠিক জায়গা অনুযায়ী পাঠানো। বিয়ের ক্লাব ঠিক করা, সাজগোজ, আলোকসজ্জা কেমন হবে তা ঠিক করে নেয়া। অতিথি তালিকা তৈরি এবং কবে কাকে কিভাবে দাওয়াত দিবেন তা আগে থেকে ঠিক করা। বিয়ের দিন কে কোন জায়গায় কাজ করবে তা ঠিক করে দেয়া, যারা যারা বিয়ের দিন খাবার তৈরি , খাবার পরিবেশন ইত্যাদি কাজ করবে তাদের দিয়ে ঠিক ভাবে কাজ করিয়ে নেয়া। বিয়ে অনুষ্ঠান চলাকালিন বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য চাপের ভেতরেও তৈরি থাকা। অনুষ্ঠান শেষ হবার পর সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে নেওয়া , ফেরত নেওয়ার কিছু থাকলে তা খুঁজে নেওয়া। অতি সংক্ষেপে এটাই হল একটা বিয়ে আয়োজনের কাজ।
খেয়াল করলে দেখবেন এসব কাজ করতে আপনার যে যোগ্যতাগুলো লাগবে তা হল, পরিকল্পনা , সংগঠন করা, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা, দলগত কাজ, নিয়ন্ত্রন দক্ষতা ইত্যাদি। এসব কিছুই শিখতে এবং শেখাতে উক্ত পকল্পটিতে যুবরা কাজ কওে যাচ্ছে । গ্রামীণ এলাকার সুবিধা বঞ্চিত যুবদের দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য নানা রকমের প্রশিক্ষনের মাদ্যমে যুগউপযোগী কর্ম পরিবেশ তৈরীতে তারা বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে । এতে করে ঐ সকল গ্রামীণ এলাকার যুবরা অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে । যার জন্য এলাকা কেন্দ্রীক নানা নামে সংগঠন তৈরী করা এবং তা কি ভাবে আইনানুগ বৈধতা পেতে পারে সে ব্যাপারে তারা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে কলমে শিখতে পারছে ।
তারা বিশ্বাস করে যে, প্রত্যেকটি সংগঠনে যখন প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়, তখন এই সব কাজই করতে হয় ঘুরে ফিরে। ফলে দিন দিন বাড়ে আন্তঃ দক্ষতা। শুধু তাই নয়, এসব কাজ করার সময়ে তাদের সাথে শখ্য গড়ে উঠবে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে, জানতে পারবে প্রত্যেকটা ছোটখাটো জিনিস কোথায় পাওয়া যায় সবচে কম মূল্যে, বিভিন্ন কাজে সাহায্য পাবেন এসব মানুষের। শুধু কি বিয়ে আয়োজনেই কাজে আসবে তাদের এসব গুণাবলি ? যখন চাকুরীক্ষেত্রে যাবে, ব্যবসায় করবে, তখনও কি এসব তাদের কাজে আসবে না ? এসব গুণাবলির ফলে আপনি আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে কর্মক্ষেত্রে, এই সব কথাই বলে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করী রাজশাহী ও রংপুরের প্রশিক্ষর্নাীরা ।
এমন কি তারা বলে যে, আপনার একটা ছোট্ট ভাল কাজ যখন দেশের জন্য অবদানে কাজে লাগবে, একজন মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে ঐ সুখ কি আপনি কোটি টাকায় কিনতে পাবেন ? একজন সংগঠন করা মানুষ কিন্তু কখনও বখে যায় না, মাদকাসক্ত হয় না, কেন জানেন ? তাদের কোন দুঃখ থাকে না, তারা চাইলেও একা থাকতে পারে না, হতাশা তাদের ছুতে পারে না। তারা সুখি ও সৃজনশীল হয়ে উঠে নিজের অজান্তেই।
তারা প্রত্যাশা করে, কেন এখনও সি ও সি লেভেল বাড়িয়ে, রেস্টুরেন্টে বিল তুলে, দিনরাত সিগারেট ফুঁকে, প্রিমিয়ার লীগের গোল গুনে জীবন পার করে দিবে যুবরা ? সমাজের সকল সমস্যা চিহ্নিত করে সরকারের পাশাপাশি নিজেদের অর্থনৈতি ভাবে সাবলম্বি করে গড়ে তুলবে এবং একই সাথে আওয়ায তুলবে “যুবরাই লড়বে, সোনার বাংলা গড়বে” ।