মঙ্গলবার ● ২২ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বিরল প্রজাতির স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কচ্ছপ চিকিৎসারত
বিরল প্রজাতির স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো কচ্ছপ চিকিৎসারত
বাগেরহাট প্রতিনিধি :: সুন্দরবনের বিরল প্রজাতির একটি কচ্ছপ ‘বাটাগুর বাসকা’ স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার স্থাপন উদ্ধার হওয়া কচ্ছপ চিকিৎসারত । পরে সুন্দরবনের নিলকমল ও তালতলী এলাকায় দুটি কচ্ছপ আগেই মারা গেছে। বাকি ৩টির মধ্যে সোমবার উদ্ধার হওয়া তচ্ছপটি শারিরিক সুস্থতা ফিরে পেলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক আবারো ছাড়া হবে সমুদ্র মোহনায় এমনটি জানিয়েছে এ প্রানী বিশেষঙ্গ। বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার মিঠাখালী এলাকার পুটিমারী খালে এক জেলের জালে আটকে পড়া কচ্ছপটি সোমবার দুপুরে শহরের প্রধান মাছ বাজারে বিক্রির জন্য নেওয়া হলে সুন্দরবনের করমজল বাটাগুর বাসকা প্রজেক্টের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর রব ও বন বিভাগের সদস্যরা সেটি উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া ৪০ বছর বয়সের এ বাটাগুর বাসকাটির ওজন সাড়ে ১২ কেজি। ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর এ কচ্ছপটি বঙ্গোপসাগরের মোহনার কালিরচরের সুন্দরবনের ৪৩ নম্বর কম্পার্টমেন্ট এলাকায় ছাড়া হয়েছিলো।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটন কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আজাদ কবির ও বাটাগুর বাসকা প্রজেক্টের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুর রব জানান, ‘মিঠাখালীর পুটিমারী খালে সোমবার সকালে বোবা এক জেলে মাছ ধরছিলো। এ সময় ওই জেলের জালে এ কচ্ছপটি (বাটাগুর বাসকা) ধরা পড়ে। ওই জেলে কচ্ছপটি মেরে ফেলার চেষ্টাকালে অপর জেলে বোরহান তার কাছ থেকে কচ্ছপটি ছাড়িয়ে নেয়।
জেলেদের জালে ৪০ বছর বয়সী কচ্ছপ, শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার পরে বোরহান দুপুরে মিঠাখালী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের কাছে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। দুপুর বেলায় আবুল হোসেন কচ্ছপটি নিয়ে মোংলা পৌর শহরের প্রধান মাছ বাজারে বিক্রি করতে আসেন। কচ্ছপটির পিঠের উপর স্যাটেলাইট জিপিএস ট্রাকিং ট্রান্সমিটার বসানো দেখে সেটি কেউ না কিনে তারা দ্রুত সুন্দরবন বিভাগকে খবর দেয়। খবর পেয়ে বন বিভাগের সদস্যদের নিয়ে বাটাগুর বাসকা প্রজেক্ট ম্যানেজর আব্দুর রব বিক্রি করতে আসা আবুল হোসেনকে ১ হাজার টাকা দিয়ে কচ্ছপটি ছাড়িয়ে নিয়ে যান।চিকিৎসা দিচ্ছেন পূর্ব সুন্দরবন কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের বন্যপ্রানী বিশেষঙ্গ আবদুর রব।
বাটাগুর বাসকার প্রজেক্ট ম্যানেজর আব্দুর রব সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, ‘২০১৮ সালের ২ অক্টোবর এ কচ্ছপটি বঙ্গোপসাগরের মোহনার কালিরচরের সুন্দরবনের ৪৩ নম্বর কম্পাটমেন্ট এলাকায় ছাড়া হয়েছিলো। স্যাটেলাইট জিপিএস ট্রাকিং ট্রান্সমিটার সিস্টেম সংযোজিত এ বাটাগুর বাসকা ছাড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিলো বিচরণক্ষেত্র, স্বভাব, পানির উপরে রোদ পোহানো ও পানির নিচের অবস্থান নির্ণয়সহ প্রজনন ক্ষেত্র সম্পর্কে গবেষণার তথ্য সংগ্রহ।বন্যপ্রানী বিশেষঙ্গ আবদুর রব। সেখান থেকে এটি উদ্ধার করে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রানী প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় কচ্ছপটি। সুস্থকরে তুলতে দেয়া হচ্ছে উন্নতমানের চিকিৎসা। গত ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো বিলুপ্তি প্রায় এ প্রজাতির ৫টি বাটাগুর কচ্ছপ সুন্দরবনের কালিরচরের সমুদ্র মোহনায় ছাড়া হয়েছিল। পরে সুন্দরবনের নিলকমল ও তালতলী এলাকায় দুটি কচ্ছপ আগেই মারা গেছে। বাকি ৩টির মধ্যে সোমবার উদ্ধার হওয়া তচ্ছপটি শারিরিক সুস্থতা ফিরে পেলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক আবারো ছাড়া হবে সমুদ্র মোহনায় এমনটি জানিয়েছে এ প্রানী বিশেষঙ্গ।
জেলেদের জালে ৪০ বছর বয়সী কচ্ছপ, শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার আব্দুর রব বলেন, ‘এ পর্যন্ত দুই দফায় এমন ৫টি কচ্ছপ বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনে নদীতে ছাড়া হয়েছে। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু, টিএসএ আমেরিকা ও বাংলাদেশ বন বিভাগ। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজলে এ প্রজেক্টের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়ে তাকে দেশ-বিদেশের কন্ট্রোল রুম থেকেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য হলো বিরল প্রজাতির বাটাগুর বাসকা কচ্ছপের প্রজনন বৃদ্ধির মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার করা।