শুক্রবার ● ২৫ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » পাবনা » ছাত্ররা স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করলো কাঠের সেতু
ছাত্ররা স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করলো কাঠের সেতু
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহর উপজেলার অষ্টমনিষা সড়কের পৈলানপুর এলাকায় একটি কাঠের সেতু মেরামতের অভাবে এই রাস্তায় চলাচলকারী জনসাধারনের দূর্ভোগ দির্ঘদিনের। এই রাস্তা দিয়ে চলাচলের বাহন ভ্যান গাড়ি, বোরাক গাড়ি, বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল সহ ছোট বড় অন্যান্য যান নিয়ে চলাচল করতে মানুষ প্রায়ই দূর্ঘটনার সম্মুখিন হচ্ছেন।
তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন হাজার হাজার মানুষ। এক সময় বাস ট্রাকসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচল করলেও এখানকার আগের সেতুটি ধসে পরায় প্রায় দুই বছর যাবৎ ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে গুরত্বপূর্ণ এ সড়কটিতে। সারা দিন রাত যে সড়কটি ব্যস্ত থাকতো এখন সে সড়কে খুব বেশি ব্যস্ততা না থাকলেও ছোট ছোট যানবাহনে আশ পাশের প্রায় ১৫ গ্রামের মানুষকে প্রতিদিন স্কুল কলেজ হাট বাজার উপজেলা সদরে যেতে হয় এ সেতুর উপর দিয়েই। প্রতিদিন মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন তারা।
কিন্তু সম্প্রতি কাঠের পাটাতন গুলো নষ্ট হয়ে গেলে বেড়ে যায় দূর্ঘটনার মাত্রা। চোখের সামনে প্রায়শই দূর্ঘটনা দেখতে দেখতে দিশেহারা এলাকার মানুষ। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট বিভাগ, জনপ্রতিনিধিরা যখন নিশ্চুপ তখন সেতুটি অন্তত চলাচলের উপযোগি করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয় এলাকার কয়েকজন ছাত্র। ২৪-২৫ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুইদিন ধরে সেতুটি আপাতত চলাচলের কিছুটা উপযোগি করে তারা।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র রুবেল, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র রানা, নারায়নগঞ্জের তুলারাম কলেজের ছাত্র রনি, চাটমোহর ডিগ্রী কলেজের ছাত্র মোন্নাফ ও আলামিন, উত্তরসেনগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র শান্ত পাঁচশত টাকার বাঁশ রশি লোহা কিনে স্বেচ্ছাশ্রমে সেতুটি মেরামত করেন। এদের সবার বাড়ি পৈলানপুর গ্রামে।
চাটমোহর ডিগ্রী কলেজের ছাত্র মোন্নাফ বলে, প্রায় প্রতিদিনই এখানে দূর্ঘটনা ঘটছে। কাঠের পাটাতন খুবই সরু হওয়ায় কোন রকমে ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে একটু এদিক ওদিক হওয়ায় ঘটছে দূর্ঘটনা। পাশে কোন রেলিংও নাই। পাটাতন খসে পরায় এক পাটাতন থেকে আরেক পাটাতনের দুরত্বও বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতর কর্তৃক মেরামতের কোন লক্ষণ দেখছি না। বাধ্য হয়ে আমরাই কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করলাম।
পৈলানপুর গ্রামের মোজাহার হোসেন বলেন, গত দেড়-দুই বছরে দুইবার মেরামত করা হয়েছে কাঠের সেতুটি। মেরামতের কদিন পরই ফের নড়বরে হয়ে যায়। এ রুটে এক সময় বাস ট্রাক চলাচল করলেও এখন অষ্টমনিষা যেতে এসব যানবাহনকে পাশর্^বর্তী ভাঙ্গুড়া উপজেলা সদর হয়ে অন্তত দশ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। তিনি অতি দ্রুত কাঠের ভাঙ্গা সেতু অপসারণ করে এখানে পাকা সেতু নির্মানের দাবী জানান। এখানে সেতু নির্মাণ এখন এ এলাকার মানুষের প্রাণের দাবীতে পরিণত হয়েছে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, সত্যি কাঠের সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। এখানে সেতু নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথাও বলছি বার বার। এ ব্যাপারে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে তবেই এখানে পুনরায় পাকা সেতু নির্মাণ সম্ভব।