শনিবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের উপর গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটি রেখে চলছে প্রশস্তকরণ কাজ
বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের উপর গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটি রেখে চলছে প্রশস্তকরণ কাজ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: জনগুরুত্বপূর্ণ বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের উপর গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটি রেখেই এগিয়ে চলছে সড়ক প্রশস্তকরণ ও আধুনিকায়নের কাজ। গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটিগুলো অপসারণ না করে প্রশস্তকরণের প্রায় অধিকাংশ কাজ শেষ হওয়ায় জনমনে সৃষ্টি হয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। এদিকে, সড়কের উপর থেকে গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটি অপসারণ, সঠিক মাপে ও গুণগতমানে কাজ করার দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষ হতে স্মারকলিপি প্রদান ও অবস্থান কর্মসূচী সহ বিভিন্ন আন্দোননের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে সিলেট শহরে প্রতিদিন বিশ্বনাথ, জগন্নাথপুর ও ছাতক উপজেলার জনসাধারণ যাতায়াত করেন। বিশ্বনাথ উপজেলা সদরে প্রবেশধারের এই সড়কটি প্রশস্তকরণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন উপজেলাবাসী। অবশেষ গত বছরের আগষ্ট মাসে প্রায় ৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিশ্বনাথ থেকে আরএইচডি রশিদপুর পর্যন্ত ৩ কিলো: ৭০০ মিটার প্রশস্তকরণ ও আধুনিকায়ন কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই সড়কের বর্তমান প্রস্থ রয়েছে ১৮ফুট। দু’পাশে প্রশস্তকরণ করে সড়কের প্রস্থ ২৪ ফুটে উন্নীত করা হবে এবং পথচারীদের জন্য সড়কের দু’পাশে ফুটপাত ও বিশ্বনাথ বাজার এলাকায় ড্রেইন (সড়কের পার্শ্বে) নির্মাণ করার কথা রয়েছে।
গত ডিসেম্বর মাসে শরু হয় এই সড়কের প্রশস্তকরণ ও আধুনিকায়ন কাজ। প্রশস্তকরণ করতে গিয়ে অনেক গাছ সড়কের মধ্যখানে পড়ে যায়। প্রায় ৬মাস পূর্বে এসব গাছ অপসারণের সিদ্ধান্ত হয় এবং সেই আলোকে গাছগুলো চিহিৃত করে টেন্ডার আহবান করে বন বিভাগ। কিন্ত এখনো গাছগুলো অপসারণ করা হয়নি। তাই এসব গাছ স্ব স্ব অবস্থানে রেখেই সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করা হয়। প্রশস্তকরণের অধিকাংশ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হলেও সড়কের মধ্যখানে দাড়িয়ে আছে গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটিগুলো। এভাবে গাছ ও খুটি বহাল রেখে যদি সড়কের প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন করা হয়, তাহলে মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়বে এই সড়কটি। প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটার আশংকা থাকবে। তাছাড়া কাজ শেষ হওয়ার পর যদি গাছগুলো অপসারণ করা হয় তাহলে ওই স্থানে গর্ত সৃষ্টি হবে এবং সড়কের বিভিন্ন স্থান ধসবে ও ফাটল হবে।
এলাকার অনেকেই অভিযোগ করেন- সড়কে খুবই নিম্ন মানের কাজ হচ্ছে। সড়কের উভয় পাশে ৩ ফুট করে প্রশস্তকরণ করার কথা থাকলেও করা হচ্ছে ২ থেকে আড়াই ফুট। সড়কের দু’পাশ দিয়ে পথচারীদের চলাচলের জন্য মাটি ভরাট করে ফুটপাত তৈরী করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। যে ভাবে কাজ করা হচ্ছে তাতে এতো কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার কথা নয়। তাই সড়কের উপর থেকে গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটি অপসারণ, পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে মাটি ভরাট করে ফুটপাত তৈরী এবং কাজের গুণগতমান অক্ষুন্ন রেখে প্রশস্তকরণ কাজ সম্পন্ন করেত সংশ্লিল্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সংগঠক শেখ ফজর রহমান বলেন- সড়কের উপর থেকে গাছ ও বৈদ্যুতিক খুটি অপসারণ, সঠিক মাপে ও গুণগতমানে কাজ করার দাবিতে আমরা উপজেলাবাসীর পক্ষ হতে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করেছি। শনিবার (আজ) এলাকাবাসীর মতবিনিময়, ২৭ জানায়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান এবং ৩০ জানুয়ারী বিশ্বনাথ সরকারি ডিগ্রী কলেজের সামনে সড়কের উপর অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হবে।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বিশ্বনাথ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. সামিউল কবির বলেন, বৈদ্যুতিক খুটিগুলো সড়ানো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে এব্যাপারে আমি এখনো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন নির্দেশনা পাইনি। নির্দেশনা পেলে খুটিগুলো প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
সিলেট বন বিভাগের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার মনিরুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের গাছগুলো বিক্রির জণ্য টেন্ডার আহবান করা হয়েছিল কিন্ত সরকারের নির্ধারিত মূল্য না পাওয়ায় আমরা গাছ বিক্রি করতে পারিনি। শীঘ্রই রি-টেন্ডার আহবান করা হবে এবং আমরা আশাবাদি কাংখিত মূল্য পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক কাজের স্বার্থে দ্রুত গাছগুলো সরানো হবে।
সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ সিলেটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নুরুল মজিদ চৌধুরী বলেন- সড়কে কাজ শুরুর আগেই গাছ সরানো জন্য বন বিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্ত এখনো গাছগুলো সরানো হয়নি। এতে সড়কের প্রশস্তকরণ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। কাজ সম্পন্ন করার পূর্বে যদি গাছগুলো সড়ানো না হয় তাহলে পরবর্তিতে সড়ালে যেখানে গাছের শিকড় থাকবে সেখানেগর্ত সৃষ্টি হয়ে সড়ক ধসবে ও ফাটল হবে। এব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমরা বন বিভাগকে বলেছি। তিনি বলেন- সড়ক ২৪ফুট প্রশস্তকরণ করা হবে। এই ২৪ ফুট প্রস্থ করতে গিয়ে যেখানে যত ফুট প্রয়োজন তত ফুট বৃদ্ধি করা হবে। কাজে অনিয়ম করার সুযোগ নেই।