শিরোনাম:
●   চুয়েটের আয়কর ও ই-রিটার্ন বিষয়ক কর্মশালায় অনুষ্ঠিত ●   গণহত্যার আসামীদের ক্ষমা করার কোন সুযোগ নেই ●   নিখোঁজের ৪ ঘন্টা পর পুকুরের পানিতে মিললো শিশুর মরদেহ ●   হাতের নাগালেই মিলছে বিনামূল্যে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ ●   নবীগঞ্জে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার-২ ●   সংবিধান বাতিল বা পরিবর্তন করা অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয় ●   রাঙামাটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মানববন্ধনে পাহাড় থেকে সকল বৈষম্য নিরসন করার লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বৈষম্য নিরসন কমিশন গঠনের দাবি ●   রাউজানে প্রবাসী যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ●   নবীগঞ্জে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক যুবকের মৃত্যু ●   আগামী কাল সোমবার সকালে রাঙামাটি বিসিক এর সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মানববন্ধন ●   কাউখালীতে যুবদলের ৪৬ তম প্রতিষ্টাতা বার্ষিকী পালন ●   পানছড়িতে ৫৩ তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপিত ●   ঘোড়াঘাটে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কর্মী সম্মেলন ●   বিজিবির অভিযানে অস্ত্র মাদকসহ চার জন আটক ●   তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বিএনপির বিক্ষোভ ●   সামাজিক সংগঠন ‘ইগনাইট মিরসরাই’র আত্মপ্রকাশ ●   আত্রাইয়ে জাতীয় যুব দিবস পালন ●   অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সকল উসকানির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে ●   রাউজানে আগুনে ৫ দোকান ভস্মিভূত ●   ঘোড়াঘাটে দৈনিক সকালের বাণীর ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   রাঙামাটিতে জাতীয় যুব দিবস পালিত ●   ছেলেকে ফিরে পেতে এক মায়ের আকুতি ●   কাউখালীতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য অপহরণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে জাতীয় যুব দিবস পালিত ●   মিরসরাইয়ের বিএনপি নেতা হত্যার মামলায় ছাত্রলীগ নেতা ফিরোজ গ্রেফতার ●   আত্রাইয়ে নবাগত ইউএনও‘র যোগদান ●   খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র সড়ক অবরোধ পালিত ●   মিরসরাইয়ের ধুমে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু ●   কুষ্টিয়াতে আাধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়ারুল হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ গ্রেফতার-২
রাঙামাটি, মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
শনিবার ● ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » একজন ডাক্তার মানিক ত্রিপুরা
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » একজন ডাক্তার মানিক ত্রিপুরা
শনিবার ● ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

একজন ডাক্তার মানিক ত্রিপুরা

---ঞ্যোহ্লা মং :: মহালছড়ি উপজেলায় যতোজন ডাক্তারী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, তাঁদের কতজনকে আমরা মনে রেখেছি? আগামীতে অনেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে পড়ালেখা করে, এই পেশায় নিয়োজিত হবেন; কিন্তু আমাদের ডাঃ মানিক ত্রিপুরা কিংবা ডাঃ স্বপন চক্রবর্তীর উপরে কেউ কি যেতে পারবেন? তাঁরা উভয়ে বর্তমান সময়ের তুলনায় ততোটা শিক্ষিত (চিকিৎসা বিদ্যায়) নন; কিন্তু এক সময়ে বন জঙ্গলে পরিপূর্ণ মহালছড়িতে তাঁরাই ছিলেন বৈদ্য’র পরে সর্বশেষ ভরসা।
মহালছড়ি থানা সরকারি হাসপাতালে জন্ম নেয়া গুণীজন প্রসেফর মংসানু চৌধুরীর তথ্য মতে, ‘৬০ এর দশকে মহালছড়ি থানা হাসপাতালটি চলতো একজন এলএমএএফ ও একজন কম্পাউন্ডার দিয়ে। এখনকার সময়ের ন্যায় ফামের্সী ছিল না বলে সরবরাহকৃত ঔষধের উপকরণাদি মিশ্রণ ঘটিয়ে খাবার উপযোগী করে তৈরী করে দেয়ার কাজটি ছিল কম্পাউন্ডারের।’
যতদূর জানা যায়, ডাঃ স্বপন মহালছড়ির পুরোনো বাসিন্দা। ডাঃ মানিক ত্রিপুরার আগমন স্বাধীনতার পরেই। তিনি মূলতঃ ভাল জীবনের সন্ধানে রাঙ্গামাটি থেকে মহালছড়িতে এসেছিলেন।
মানিক ত্রিপুরা কিভাবে ডাক্তার হয়ে উঠেছিলেন, সেই ইতিহাস আমার জানা নেই। তবে আমরা বড় হয়েছি, তাকে ডাক্তার হিসেবে জেনে। পড়ালেখা করেছি, তাঁদের মতো কিছু লোকের সহযোগিতায় স্থাপিত মহালছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। ডাঃ মানিক ত্রিপুরা’র বড় ছেলে বিপুল ত্রিপুরা আমাদের একজন সহপাঠী বন্ধু।
স্কুল জীবন থেকে ডাঃ মানিক ত্রিপুরার দোকানে (ঔষধ) প্রায় উঠা বসা হতো। একসময় তাঁর ছেলে দোকানের হাল ধরলে, সেই দোকানে যাওয়া আসা বেড়ে দৈনন্দিন কাজের একটি অংশে পরিণত হয়। বাজারে গিয়েছি, কিন্তু তার দোকানে যাইনি; এমনটি কোনদিন হয়েছে কিনা মনে পড়ে না। ডাঃ মানিক, ছেলেকে দায়িত্ব দিয়ে নিজ দোকানে ছোট চেম্বার খুলে নিয়মিত বসতেন। এতেও আমাদের আড্ডার কোনদিন বাধা হননি।
সময়ের পরিবর্তনে রোগীর সংখ্যা কমতে থাকলেও গরিব, দরিদ্রদের পছন্দের ডাক্তার ছিলেন তিনি। দূর-দূরান্ত হতে বেচাবিক্রি করতে আসা পাহাড়ি নারী পুরুষদের আশ্রয়স্থল ছিল তাঁর দোকান। বাজারে পাবলিক টয়লেট নেই বলে তার দোকানের পিছনে গিয়ে সকলে প্রাকৃতিক কাজটি সেরে নিতেন। এই নিয়ে পিতা আর পুত্রকে কোনদিন বাধা দিতে দেখিনি। শুধু পাহাড়ি নয় সমানভাবে বাঙালিরাও যেতেন।
তাঁর মৃত্যুর সংবাদটি পেয়ে, চিন্তা করছি; এবার বাজারে গেলে কোথায় বসবো? দোকানটি ছেলের হাতে ছেড়ে দিয়ে পরিবর্তনের প্রত্যাশা করেছিলেন, সফল হতে পারেননি। দুই ছেলে তাঁর আগেই পরপারে চলে গেলেও দেখা হলে কখনো জীবনের গল্প আমাদের শোনাননি। নিরবে জীবনকে চালিয়ে নিয়েছেন শেষ অবধি। ডাঃ মানিকের মৃত্যুতে কেউ না কাঁদুক, দূর পাহাড়ি গ্রাম থেকে নানা ফলমূল নিয়ে বাজারে বিক্রয় করতে আসা বিক্রেতারা ঠিকই তাঁকে মনে মনে স্মরণ করবেন।
বড় ছেলে দুর্দান্ত ফুটবল খেলতো। মহালছড়ির বাইরে নানা জায়গায় খেলতে যেতো। খেলাধূলায় নাম করার সুযোগ ছিল; কিন্তু সমাজ, রাষ্ট্র যুব সমাজের প্রতিভাগুলোকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হওয়ায় ডাঃ মানিকও এক অর্থে ব্যর্থ হন। উপজেলা সদরে প্রধান মাঠের সাথে লাগোয়া যাঁদের ঘর তাদের ছেলেমেয়েরা খেলাধুলায় ভাল হবে সেটাই ছিল স্বাভাবিক; কিন্তু পার্বত্য পাহাড়ে নানা রাজনৈতিক টানা পোড়নে আমার বন্ধুটিরও ফুটবলার হয়ে মহালছড়ির মুখ উজ্জ্বল করা হয়নি। উপজেলাতে এক সময় যে খেলাধূলার চর্চা ছিল তাতে ভাটা পড়ে যাওয়ায় কিছু সহপাঠী ও সমবয়সীদের মধ্যে পরে বিপুলও হারিয়ে যান। সহপাঠী আর সমবয়সী বন্ধুরা একে অপরের দেখাদেখি ভাল করার প্রতিযোগীতার বদলে আড্ডা আর প্রেমিক হয়ে হারিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে মাত্র। আবার বিপুলও এক অর্থে দায়ী। সে সকলের সাথে বন্ধুত্ব করতো আর খাওয়াতো। সহপাঠী বন্ধুরা পাহাড়ি সুলভ সরলতাকে শুধু গ্রহণ করেছে। প্রতিদানে কিছু দেয়নি। আদিবাসীরা এইভাবেই নিরবে হারিয়ে যায়।
জাতিতে ত্রিপুরা হলেও এক সময় বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারি হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক জনপ্রিয় বৌদ্ধ ভিক্ষু’র শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। নিজের জায়গায় বিহার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর গুরু ভান্তেকে মহালছড়ি পর্যন্ত এনে ধর্মীয় সভা করতে দেখেছি। কিন্তু কি এক কারণে, সেই জনপ্রিয় গুরু ভান্তের সাথে তার সম্পর্কের ছেদ পড়ে। তার পরবর্তী অনেকে উক্ত ভিক্ষু’র শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন কিন্তু তার মতো ধর্মীয় সভা অনুষ্ঠান করতে পেরেছেন কিনা সন্দেহ আছে।
জনপ্রিয় ভিক্ষুর শিষ্য হয়ে, নিজেও ধর্মীয় লাইনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন; কিন্তু অভিজ্ঞতার অভাবে শেষের দিকে সফল হতে পারেননি। বড় ছেলেকে কৃতি ফুটবলার বানাতে চেয়েছিলেন, সেখানেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। তবে মহালছড়িতে দুঃসময়ে একজন চিকিৎসক, গরীবদের ডাক্তার, বাজারে পণ্যদ্রব্য ক্রেতা-বিক্রেতাদের (পাহাড়ি) পণ্যদ্রব্য রেখে যাওয়ার নিরাপদ দোকান, নিজের আতœীয়-স্বজন, কমিউনিটি লোকজনকে ছোট-খাট ব্যবসা পরিচালনা করতে দোকানটি ব্যবহারের সুযোগদানসহ পাহাড়ি নারীদের প্রাকৃতিক কাজ সেরে নেয়ার নিরাপদ জায়গা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। সেটাই বা কম কিসের? আজকাল পুঁজিবাদী সমাজে কতজন এই কাজটিকে কাজ হিসেবে মনে করেন?
আমরা তার অসুস্থতার সংবাদ পাই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আমার পরিচিত কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারিদের মন্তব্য দেখলে বুঝা যায় তিনি উপজেলার মানুষদের কাছে কতটা আপন ছিলেন। আমেরিকা প্রবাসী বিজ্ঞানী ডঃ মংসানু মারমা লিখেছেন, ‘ডাঃ মানিকের সেবা পেয়ে আমরা বড় হয়েছি। পোস্টটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল। অনেক ভালবাসা ও সালাম।’
ঢাকাবাসী পাহাড়ি সমাজে পরিচিত প্রিয়মুখ বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা তাঁর চিকিৎসার জন্যে কোন ফান্ড গঠিত হলে অংশীজন হতে চেয়েছেন। পলাশী দেওয়ান লিখেছেন, ‘ নিঃসন্দেহে উনি সবার শ্রদ্ধার পাত্র। ছেলেবেলায় আমি অসুস্থ হলে মানিক মামাই ছিলেন আমার ভরসা।’
উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাকলি খীসা লিখেছেন, ‘ওনার সামাজিক অবদান অপরিসীম। মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন একজন মানুষ। ওনার প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা।’ তারই এক আতœীয় পিপুল রাখাইন লিখেছেন, ‘ আমার মামা যার বাড়ির উঠোন, গাছ ছিলো সবার……আমার মামা কতজনকে টাকা দিলেন ব্যবসা করতে, জায়গা দিলেন ঘর বাঁধতে, বিনিময়ে পেলেন শত্রু।’
সমাজে বেঁচে থাকতে হলে, অনেক টাকা; কিংবা অনেক নামী দামী হওয়ার প্রয়োজন হয় না। আমাদের চিন্তা চেতনা, মূল্যবোধ আর সহজ জীবনাচারণ আমাদের বাঁচিয়ে রাখার একটি বড় মাধ্যম। তেমনি একটি ছোট উদাহরণ হতে পারে আমাদের মানিক ত্রিপুরা। ত্রিপুরা কর্তৃক স্থাপিত বৌদ্ধ বিহারটি বেশ সুন্দর, সমৃদ্ধ। তার অনুপস্থিতিতে বিহারটি হারিয়ে যেতে পারে। এলাকার ধর্মানুরাগীগণ বৌদ্ধধর্মের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালবাসার নির্দশনটুকু বাঁচিয়ে রাখতে সংগঠিত হয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।

লেখক: উন্নয়নকর্মী।





খাগড়াছড়ি এর আরও খবর

পানছড়িতে ৫৩ তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপিত পানছড়িতে ৫৩ তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপিত
খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র সড়ক অবরোধ পালিত খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ’র সড়ক অবরোধ পালিত
খাগড়াছড়িতে তিন ইউপিডিএফ কর্মীকে গুলি করে হত্যা : অবরোধের ডাক খাগড়াছড়িতে তিন ইউপিডিএফ কর্মীকে গুলি করে হত্যা : অবরোধের ডাক
আসামি ধরতে গিয়ে হামলায় রামগড়ে এসআই আহত আসামি ধরতে গিয়ে হামলায় রামগড়ে এসআই আহত
লগি-বৈঠার হামলায় নিহতদের স্মরণে খাগড়াছড়িতে জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা লগি-বৈঠার হামলায় নিহতদের স্মরণে খাগড়াছড়িতে জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা
পানছড়িতে কৃষকদের মাঝে সবজির বীজ প্রদান পানছড়িতে কৃষকদের মাঝে সবজির বীজ প্রদান
খাগড়াছড়ির সীমান্ত এলাকা হতে দালালসহ ভারতীয় নাগরিক আটক খাগড়াছড়ির সীমান্ত এলাকা হতে দালালসহ ভারতীয় নাগরিক আটক
প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে মহালছড়িতে সমন্বয় সভা প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে মহালছড়িতে সমন্বয় সভা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য বৈসম্যহীন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলা : সুপ্রদীপ চাকমা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য বৈসম্যহীন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলা : সুপ্রদীপ চাকমা
খাগড়াছড়িতে বাজার ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার-৫ খাগড়াছড়িতে বাজার ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেফতার-৫

আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)