শনিবার ● ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে বিমান বন্দর নির্মাণ এখন সময়ের দাবি
রাঙামাটিতে বিমান বন্দর নির্মাণ এখন সময়ের দাবি
সিএইচটি মিডিয়া :: রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাউখালী উপজেলায় বিমান বন্দর নির্মাণের সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। রাঙামাটিতে বিমান বন্দর নির্মাণ হচ্ছে অতিশিঘ্রই।
এই উপজেলায় বিমান বন্দর গড়ে তোলার অন্যতম কারণ হচ্ছে কাউখালী উপজেলার সাথে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি, হাটহাজারি, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি বান্দরবান পার্বত্য জেলা সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা মোটামুটি ভাল।
অতি সম্প্রতি সময়ে সরকারের বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড’র (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম রাঙামাটিতে এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত মাসের ১৩ জানুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকে লেখা চিঠিতে বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান তিন পার্বত্য জেলায় কোনো বিমানবন্দর না থাকায় তাদের চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হয়, যা খুবই কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ।
তাছাড়া পার্বত্য জেলাগুলোতে রেলপথ নির্মাণ ব্যয়বহুল এবং দীর্ঘ সময়ের ব্যপার, নৌ-পথের সুযোগও সীমিত। শুধু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে কোনো অঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন অভিযাত্রায় সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হলে পার্বত্য অঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নাই।
জানাযায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি গত মাসের ৮ জানুয়ারি বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলামের কাছে একটি চিঠি প্রেরণ করেন যাতে রাঙামাটি জেলায় একটি বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।
প্রেরিত চিঠিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের একটি প্রধান শর্ত। তিন পার্বত্য জেলায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখানে কোনো রেলপথ ও বিমান বন্দর নাই। নৌ-পথেও অন্য জেলার সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা নাই।
এই অবস্থায় তিন পার্বত্য জেলার মধ্যবর্তী কোনো স্থানে একটি বিমানবন্দর নির্মিত হলে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা চিঠিতে উল্লেখ করেন।
রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় প্রস্তাবিত এই বিমানবন্দর হতে পারে উল্লেখ করে নব বিক্রম আরো জানান কাউখালী উপজেলায় বিমানবন্দরটি হলে অন্য দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান ছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার রাউজান, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ির উপজেলায় বসবাসকারীরা সুবিধা পাবেন। এতে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
দুই জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে বিমানবন্দর থাকা সত্ত্বেও রাঙামাটি জেলায় আরও একটি বিমানবন্দর হতে পারে উল্লেখ করে তিনি জানান তিন কোটি জনসংখ্যার দেশ নেপালের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় সমান। দেশটির অভ্যন্তরে বিমান চলাচলের জন্য ৪৩টি বিমানবন্দর রয়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট জেলায় তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়াও দেশে সচল অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল জেলায়। এর বাইরে কুমিল্লা, বগুড়া, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, মৌলভীবাজার ও নোয়াখালী জেলায় ছোট বিমানবন্দর রয়েছে। এসব বিমানবন্দরে বিমান কেবল উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে।
এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার সন্ধীপ, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া, ফেনী, গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুর, চট্টগ্রাম জেলার রসুলপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলার পাহাড় কাঞ্চনপুর, কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর ও পটুয়াখালী জেলায় অব্যবহৃত বিমানবন্দর রয়েছে বলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি জানান।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বিমান বন্দর নির্মাণের বিষয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাঙামাটি-২৯৯ আসনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জুঁই চাকমা বলেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধান দিক সমূহের মধ্যে রাঙামাটি জেলায় গ্যাস সংযোগ স্থাপন, রাঙামাটি জেলাকে রেল লাইনের আওতায় যুক্ত করন, রাঙামাটি রবার বাগান থেকে ডিসি বাংলো পর্য্যন্ত রাস্তা প্রসস্থ করে চার লেনে উন্নত করন, রাঙামাটিতে বিমান বন্দর স্থাপন করন, রাঙামাটি জেলাবাসীর জন্য নিরিবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করন, কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীর তলদেশ খনন করে রাঙামাটি জেলায় প্রত্যন্ত উপজেলায় নৌ-পথে জনসাধারনের চলাচলের রাস্তা সুগম করা ও কাপ্তাই হ্রদ ভিত্তিক পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা এবং রাঙামাটি জেলায় স্থল বন্দর নির্মাণে অগ্রনী ভূমিকা রাখা বিষয়ে পরিস্কার ভাবে উল্লেখ কারা হয়েছিল এই সরকার যদি রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বিমান বন্দর নির্মাণ করেন তাহলে পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারীদের জীবন যাত্রার মান উন্নত হবে এবং অর্থনৈতিক ভাবে পার্বত্য অঞ্চল এগিয়ে যাবে।
জুঁই চাকমা বলেন রাঙামাটিতে বিমান বন্দর নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন সরকারের এই উদ্যোগ ইতিবাচক তাই স্বাগত জানাই সেই সাথে মান্যবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এবং সংশ্লিষ্ট বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী মহোদয়ের প্রতি রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বিমান বন্দর নির্মাণের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করার আহবান জানাচ্ছি।