রবিবার ● ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যা দেবি স্বরস্বতির পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত
দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যা দেবি স্বরস্বতির পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত
বাগেরহাট অফিস :: বাগেরহাটে ফকিরহাট উপজেলার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মালম্বীরা বিদ্যা দেবি শ্রী শ্রী স্বরস্বতির পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার ভোর ৪টায় হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে এ অনুষ্ঠান পালন করেছে। সকালে পিলজংগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দেবি স্বরস্বতির পূজা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে শুরু হয়। শতাধিক শিক্ষার্থী শিক্ষক ও অভিভাবকরা এতে অংশ গ্রহন করেন। পূজা অর্চনা শেষে প্রসাদ বিতরন করা হয়। এছাড়া বেতাগা ইউনাইটেড মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেতাগা আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বেতাগা কেন্দ্রিয় কালিবাড়ী মন্দির, ফকিরহাট সদর কেন্দ্রিয় কালিবাড়ী মন্দির, মানসা কালি বাড়ী মন্দির, সাধুর সাধের বটতলা কালি মন্দির, বাহিরদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলকলিয়া জিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ফলতিতা শশাধর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন বাড়িতে পারিবারিক ভাবে শ্রী শ্রী স্বরস্বতির পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অপরদিকে শেখ হেলাল উদ্দীন ডিগ্র্রি কলেজে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় কলেজ গভর্নিং বডির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, খুলনা বিভাগের সেরা বিদ্যোৎসাহী ও বেতাগা ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন দাশ, কলেজের অধ্যক্ষ বটু গোপাল দাস, গভর্ণিং বডির সদস্য সৈয়দ মহম্মদ আলী, শিক্ষক প্রতিনিধি সেখ তারিকুল ইসলাম, উৎপল কুমার দাস, পলি দাশ, পূজা উদ্যাপন পর্ষদের আহবায়ক পিযুষ কান্তি পাল, অপূর্ব লাল সাহা, সালমা খাতুন, শেখ শামীম ইসলাম, বিকাশ রঞ্জন বিশ্বাস সহ কলেজের অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী, ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। পূজা অন্তে অঞ্জলি প্রদান বিদ্যা দেবির কাছে প্রার্থনা জানানো হয়। সর্বশেষ বিদ্যার্থী এবং ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
বাকৃবি’তে উৎসব মুখর পরিবেশে সরস্বতী পূজা উদযাপন
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: সারাদেশের মতো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীর অমিয় লগ্নে দেবীকে বরণ করে নিয়ে আসনে প্রতিষ্ঠা করা হয় দেবী সরস্বতীকে।
আজ রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে পূজার্চনা শুরু হয়।
এসময় সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ভক্তদের দেবী বন্দনায় ঢাকের শব্দ আর ঊলু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে মন্দির প্রাঙ্গন। ভেদাভেদ ভুলে নারী-পুরুষ সকলে একসঙ্গে বিদ্যা ও সংগীতের দেবীর উদ্দেশ্যে মন্দির প্রাঙ্গনে সমবেত হন। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পূজায় অংশ গ্রহন করেন স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও। এসময় শিক্ষার্থীসহ আগতরা শিক্ষার আকুলতা জানিয়ে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেন দেবীর চরণে। বাকৃবি’র শিক্ষার্থীরা পূজার পুরোহিতকে সহযোগিতা করেন এবং দেবী সরস্বতীর পায়ে পুষ্পাঞ্জলীর পর পূজা মন্ডপে আগত সকলের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করেন।
পূজার্চনা এবং পুষ্প নিবেদন শেষে মন্দির প্রাঙ্গনে ১১ টার দিকে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় শুভেচ্ছাবানী পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারমিতা কর্মকার এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাতন সংঘের সাধারণ সম্পাদক অংকুর বনিক।
বিশ্ববিদ্যালযের কেন্দ্রীয় মন্দির কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. সুবাস চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও শিক্ষা বিষযক সম্পাদক নিরঞ্জন রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জসিমউদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. এ.এস. মাহফুজুল বারি, গনতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ড. লুৎফুল হাসান, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক ড. মো. আশরাফুল হক, সহকারী প্রক্টর ড. মো. শহীদুল আলম, ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. জাকির হোসেন ও একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাকৃবি ছাড়াও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকার প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উৎসব মুখর পরিবেশে সরস্বতী পূজা উদযাপনের খবর পাওয়া গেছে।
পূজা উপলক্ষ্যে প্রায় প্রতিটি মন্ডপে আলোকসজ্জারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাঙ্গুনিয়ায় শিক্ষা ও সঙ্গীত শিল্পকলার দেবী সরস্বতী পূজা উদ্যাপন
রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি :: সারা দেশের ন্যায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের সাহাব্দীনগর,সৈয়দ নগর,দাশ পাড়ার শ্রী শ্রী রাধাগোপীনাথ মন্দির ,চৌধুরী পাড়ার ওঁ কার সনাতন মন্দির,মহাজন পাড়ার শ্রী শ্রী সার্ব্বজনীন রাধামাধব মন্দির,বসাক পাড়া, পাল পাড়ার অন্তরঙ্গ যুব কল্যান মন্দির,উত্তর পারুয়া ও নাথ পাড়াসহ শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সরস্বতী মায়ের অধিবেশ হলেও আজ রবিবার(১০ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও সরস্বতী পূজা পালিত হয়েছে। সরস্বতী পূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একটি অন্যতম প্রচলিত পূজা। সরস্বতী দেবীকে শিক্ষা, সংগীত,শিল্পকলা ও আর্শীবাদাত্রীর দেবী মনে করা হয়। বাংলা মাঘ মাসের শুক্ল পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী মায়ের পূজা করা হয়। দেবী সরস্বতীর পূজা প্রাচীন যুগ থেকে সনাতনী বাঙালির হৃদয় ও অন্তরে সমাদৃত হয়ে আসছে। জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী সরস্বতী দেবীর বাহন রাজহংস। কারণ হাসঁ অসারকে ফেলে সার গ্রহণ করে। দুধ ও জলের মিশ্রণ থেকে জল ফেলে শুধু দুধটুকু গ্রহন করে কিংবা কাদায় মিশ্রিত স্থান থেকে তার খাদ্য খুজেঁ নিতে পারে। মায়ের সঙ্গে পূজিত হয়ে শিক্ষা দিচ্ছে,সবাই যেন অসার,ভেজাল অকল্যাণকরকে পরিহার করে নিত্য পরমাত্মাকে গ্রহন করে এবং পারমার্থিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে। সরস্বতীর আরেক নাম বীণাপানি। বীনার জীবন ছন্দময়। বীনার ঝংকারে উঠে আসে ধ্বনি বা নাদ। বিদ্যার দেবী সরস্বতীর ভক্তরা সাধনার দ্বারা সিদ্ধিলাভ করলে বীণার ধ্বনি শুনতে পায়। বীণার সুর অত্যন্ত মধুর। তাই বিদ্যার্থীদেরও মুখ নিঃসৃত বাক্য যেন মধুর ও সঙ্গীতময় হয়। শিক্ষা,সঙ্গীত ও শিল্পকলায় সফলতার আশায় শিক্ষার্থীরা সরস্বতী মায়ের পূজা করে থাকেন। পূজার অর্ঘ্যর পাশাপাশি আরেকটি প্রধান অংশ ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যপুস্তক। বিদ্যার্থীদের লক্ষ্য জ্ঞান অন্বেষন। আর জ্ঞান ও বিদ্যার অন্বেষনের জন্য জ্ঞানের ভান্ডার “বেদ” তার হাতে রয়েছে। সেই বেদই বিদ্যা। তিনি আমাদের আশীর্বাদ করছেন আমাদের জীবনকে শুভ্র ও পবিত্র করতে। পুরোহিত পূজা শুরু করবার আগ পর্যন্ত দেবীর মুখমন্ডল ডাকা থাকে। পুরোহিত দোলন আচার্য্য’র কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন,সরস্বতীর একটি বিশেষ অর্য্য হল পলাশ ফুল। সরস্বতী দেবীর অঞ্জলীর জন্য এটি একটি অত্যবশ্যকীয় উপাদান।