বুধবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় শর্ত না মেনে ইটভাটা স্থাপন
গাইবান্ধায় শর্ত না মেনে ইটভাটা স্থাপন
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধায় অধিকাংশ ইটভাটা গড়ে উঠেছে শর্ত না মেনেই। মালিকরা এ ব্যাপারে সরকারের নির্দেশনার থোড়াই কেয়ার করেছে। অল্প উচ্চতার ড্রামসিটের চিমনির ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হয় বলে বেশি উচ্চতার ইটের চিমনি বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। কিন্তু সরকারের এ নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গাইবান্ধায় অনেক ইটভাটার মালিক এ আদেশ মানছে না। এখনও অল্প উচ্চতার ড্রামসিটের এবং ইটের চিমনি ব্যবহার হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। ফলে কালো ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হয়ে পড়ছে।
ইটের ভাটার কারণে বিভিন্ন এলাকার পরিবেশ বিপন্ন হয়ে উঠেছে। গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলার বেড়াডাঙ্গায় রাস্তার গাছ মরে যাচ্ছে। চলতি মওসুমে পৌর এলাকা সংলগ্ন বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে বসতবাড়ি ঘেঁষে আবাদী জমিতে গড়ে ওঠা ইটভাটার কারণে গোটা এলাকা বিষিয়ে উঠেছে। যাতায়াতের রাস্তাটি ইটভাটার দখলে চলে গেছে। প্রচণ্ড ধুলোর কারণে কোনো যানবাহনও আর এ রাস্তায় চলাচল করে না।
গাইবান্ধায় প্রতিবছরই ইটভাটার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু ভাটা স্থাপনে লাইসেন্স গ্রহণের কথা থাকলেও মালিকরা তা আমলে নিচ্ছেন না। প্রশাসনের সামনে ইটেরভাটা স্থাপন করা হলেও কোনো পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না। গত দুই এক বছরের মধ্যে ২/১ টি অবৈধ ইটভাটায় জরিমানা করা হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অজ্ঞাত কারণ দেখিয়ে নিশ্চুপ থেকেছে কর্তৃপক্ষ।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ইটভাটা স্থাপনের লাইসেন্স দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পরিত্যক্ত অনাবাদি জমি, নিচু জলাশয়ের ধারে, নদীর পাশে এবং কমপক্ষে চারদিকে ১ কিলোমিটার জনশূন্য এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের অনুমোদন দেয়ার কথা। কিন্তু গাইবান্ধার কোনো ইটভাটা মালিকই এসব শর্ত মানছেন না। আর যেসব ইটভাটা চালু রয়েছে তার অধিকাংশ মালিকই জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ না করেই বছরের পর বছর ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, জেলায় গত ৩ বছরে মাত্র ২৭টি ইটভাটা মালিককে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৮টি ইটভাটার লাইসেন্সের মেয়াদ রয়েছে। বাকি ৯ টির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও ওই ইটভাটা মালিকরা তা আর নবায়ন করেননি। বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত জেলায় ১০১টি ইট ভাটা স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জেলা প্রশাসনের কাছে লাইসেন্স গ্রহণের জন্য এখনো আবেদন করেননি বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে আয় কর বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, গত বছর তিনি অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছেন জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৮৫টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে ড্রামসিটের চিমনির ইটভাটাও রয়েছে কয়েকটি। এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এমনি একটি ড্রামসিটের চিমনির ইটভাটা রয়েছে সদর উপজেলার কাঁশদহ গ্রামে। এই ইটভাটাকে জরিমানাও করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা ইটভাটা মালিকের সভাপতি আব্দুল লতিফ হক্কানী বলেন, অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় এ ধরনের ইটভাটার সংখ্যা বাড়ছে।