বুধবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » কাউখালীতে ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে কমে আসবে বেকার সমস্যা
কাউখালীতে ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে কমে আসবে বেকার সমস্যা
মো. ওমর ফারুক,কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি :: রাঙামাটি পার্বত্য জেলার একটি জনবহুল উপজেলা কাউখালী। যেখানে রয়েছে কয়েক হাজার লোকের বসবাস। রয়েছে নানা জাতি ঘোষ্টির সমম্বয়। প্রাকৃতিক আবহে ঘেরা পাহাড় ঝর্নার ছোট বড় পাহাড় আর খাল বিলের এবং চাষাবাদের সামান্য জমি। যদিওবা এখানকার সাধারন মানুষ পাহাড় হতে এবং চাষাবাদ করে জিবীকা নির্বাহ করলেও এই উপজেলায় নেই কোন ক্ষুদ্র বা মাঝারী, বড় ধরনের শিল্প-কারখানা।
জানা যায়, কাউখালী উপজেলা চারটি ইউনিয়ন গঠিত। যার আয়তন ৩২৯.২৯ বর্গ কিলোমিটার। এই উপজেলার চার পাশে রয়েছে ৭টি উপজেলার সিমানা। বর্তমানে উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। তার মধ্যে চাকমা,মারমা, মুসলিম, হিন্দু,বড়–য়া সামান্য খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বসবাস।
রয়েছে কয়েক হাজার ছোট মাজারী বড় পাহাড় এবং চাষাবাদের জমি। এখানকার মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য স্থানীয় পাহাড়ে ঝুমচাষ এবং পাহাড় হতে বাশঁ,গাছ, ছন, লাকড়ি সংগ্রহ করার পাশাপাশি নিজস্ব উদ্যোগে কিছু ফলজ বাগান, বনজ বাগান করে মূলত জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তার পাশাপাশি স্থানীয় কিছু বেকার ছেলে মেয়ে কর্মের জন্য পাশর্^বর্তী চট্টগ্রাম জেলা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে কোন রকমে চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করে চলছেন। বেচেঁ আছেন কোন রকমে। কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে এখনো স্বচ্চল হতে পারেনী এখানকার বেশীরভাগ মানুষ। ১৯৭৯ ইং সাল থেকে এই উপজেলায় আগত সরকার কর্তৃক পুনর্বাসিত পরিবারবর্গ পাশাপাশি এখান হতে ভারতে চলে যাওয়া উপজাতিয় বেশ কিছু উদ্ভাস্থ পরিবার পরে ফিরে আসলে এখনো আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতার মুখ এখনো দেখেনী। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে এখনো নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এইসব পরিবার সহ এখানকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষজন।
যদিওবা এখানে ইতপুর্বে গড়ে উঠার কথা ছিল ক্ষুদ্র চা-বাগান প্রকল্প। এই চা-বাগান প্রকল্প গড়ে উঠলে কাউখালী উপজেলায় অন্ততÍ কয়েক হাজার লোকের কর্ম সংস্থানের ব্যাবস্থা হতো পাশাপাশি অর্থিকভাবে স্বচ্ছল হতো এখানকার মানুষ। কিন্তু বাংলাদেশ চা-বোর্ড ইতিপুর্বে চা-বাগান প্রকল্প হাতে নিয়ে সফলকাম হওয়ার পুর্বেই একটি আন্চলিক রাজনৈতিক দলের বাধাঁর কারনে ভেস্তে গেছে সফল হওয়ার এই প্রকল্প। নয়তো আজ এখানকার হাজার হাজার লোক চা-বাগান প্রকল্প করে বেকারত্ব দুর করে আর্থিকভাবে স্বচ্চল হয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতো বলে বিভিন্ন মহলের ধারনা।
অন্যদিকে এই উপজেলায় শিল্প-কারখানা না থাকার কারনে বেকারদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। দিন দিন যেন বেকারত্ব বেড়েই চলছে এই উপজেলায়।যদিওবা উপজেলার কিছুলোকজন সিএনজি চালক, রিক্সা ভ্যান, দিন মুজুরীর কাজ করেন তা ছাড়া পাহাড় হতে বাশঁ,ছন,লাকড়ী গোলপাতা সংগ্রহ করে চাষাবাদ করে, ছোটখাট ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যাবসা করে জীবিকা নির্বাহ করলেও অন্য শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা বেকার সময় পার করছেন। পানছড়ির জীবন চাকমা, পোয়াপাড়ার নয়নমনি , ঘাগড়ার সুমন দাশ, বেতবুনিয়ার অংচাচিং মারমা, সদরের প্রিয়া মারমা ও কোরবান আলী সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, কি হবে পড়া লেখা শিখে আজ আমরা কর্মের অভাবে বেকার। চাকুরীর জন্য চেষ্টা করেছি কিন্তু চাকুরী হয়নি। এক পদের জন্য কয়েক হাজার প্রার্থী আবেদন করেন। চাকুরী হয় অল্প কয়েকজনের বাকিরা তো তখন বেকার তাদের তো কিছুই করার নেই। কিন্তু সরকার মহোদয় যদি আমাদের কাউখালী উপজেলায় বিভিন্ন ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানা অথবা চা-বাগান বা রাবার বাগান, গার্মেন্স ফ্যাক্টরী করতো তা হলে অন্তত আমাদের বেকারদের যে সমস্য তা দুর হতো। সেই সাথে এই উপজেলার হাজার হাজার বেকার তার বেকাঁরত্ব গোছাতে পারতো। আর্থিকভাবে হতো প্রতিটি পরিবার স্বচ্ছল এবং স্বাবল¤ী^।
অপরদিকে বেতবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো.শামসুদ্দোহা চৌধুরী সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, কাউখালী উপজেলা রাঙামাটি জেলার একটি গুরুত্বপুর্ন উপজেলা। এই উপজেলায় শিক্ষিত মোটামুটি ভাল, কিন্তু উপজেলায় কোন ক্ষুদ্র,মাঝারী, বড় কোন শিল্প- কারখানা না থাকায় বেকারের হাড় বেড়েই চলছে। যদি কোন চা-বাগান, রাবার বাগান বা ছোট ছোট শিল্প-কারখানা বা গার্মেন্স ফ্যাক্টরী হতো তা হলে এখানের মানুষ বেকার থাকতো না।
এ প্রসংগে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শতরুপা তালুকদার সিএইচটি মিডিয়া কে বলেন, কাউখালী উপজেলাটি রাঙামাটি জেলার গুরুত্বপুর্ন উপজেলা। এই উপজেলায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানা বা চা-বাগান/ রাবার বাগান হলে অথবা গার্মেন্স ফ্যাক্টরী হলে এই উপজেলায় বেকারত্ব বাংলাদেশের অন্য উপজেলার তুলনায় কমে শুন্যের কৌঠায় নেমে আসবে বলে আমি আশাবাদি।¡
তাই এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলার সচেতন মহল বর্তমান সরকারের উর্দ্ধোতন প্রশাসনের কাছে জোর আবেদন জানান যে, খুব দ্রুতভাবে অত্র উপজেলায় ছোট মাঝারী বড় শিল্প-কারখানা এবং গার্মেন্স ফ্যাক্টরী স্থাপন অথবা চা-বাগান,রাবার বাগান বা ফরেষ্ট ডিপার্টমেন্টর মাধ্যমে অংশিদারিত্ব মুলুক বিভিন্ন ফলজ, বনজ বাগান করে অত্র এলাকার লোকদের বেকারত্ব দুর করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।