রবিবার ● ৩ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিরল রোগে আক্রান্ত দাদন মিয়া
বিরল রোগে আক্রান্ত দাদন মিয়া
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিরল রোগে আক্রান্ত সিলেটের বিশ্বনাথের পঞ্চাশোর্ধ্ব দাদন মিয়া। শরীরে ছোটবড় অসংখ্য গোটা নিয়ে করছেন দুঃসহ মানবেতর জীবনযাপন। বছরচারেক পূর্বে ডান হাত ও পা কিছুটা অবশ হয়ে আসায় চলাফেরা করতেও বেগ পেতে হচ্ছে এখন। সহায় সম্বলহীন দাদন অর্থাভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছেন না।
বিশ্বনাথ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামে বসবাসকারী দাদন মিয়ার পিতার নাম মৃত আলী হোসেন ও মাতার নাম সুরিয়া বেগম। পাঁচসন্তানের জনক তিনি। মায়ের সাথেই এই গ্রামে এসেছিলেন। পৈতৃক নিবাস কোথায় জানেন না। নিজস্ব জায়গাসম্পত্তি না থাকায় বসবাস করছেন রাজনগর গ্রামেরই আবদুল কালামদের বাড়িতে। একসময় বিশ্বনাথের বিভিন্ন এলাকায় আইসক্রীম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
দাদন মিয়া জানান, ‘বয়স যখন ১৬ তখন জলবসন্ত রোগে আক্রান্ত হই। সে সময় থেকে শরীরে তুলনামূলক ছোট ছোট গোটা বের হতে থাকে। এক সময় সেটা বড় হতে থাকে। মাথা-মুখমন্ডল থেকে শুরু করে পুরো শরীরে এখন ছোটবড় অসংখ্য গোটা। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে এই রোগ ভাল হবে না বলে চিকিৎসক জানান। অর্থাভাবে বর্তমানে কোনোভাবেই চিকিৎসা নিতে পারছি না।’
দাদন আরও বলেন, ‘এই রোগ নিয়ে দীর্ঘদিন আইসক্রীম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করলেও বছরচারেক পূর্বে ডান হাত ও পা কিছুটা অবশ হয়ে আসায় সেটিও আর করা সম্ভব হচ্ছে না। দুই ছেলে কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। সহায় সম্বল না থাকায় শরীরে রোগ নিয়ে অন্যের বাড়ীতে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি।’
বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজর আলী পরিষদের পক্ষ থেকে দাদন মিয়াকে সহায়তা প্রদান করে আসছি। সমাজসেবা অফিস থেকেও তাকে সহায়তা প্রদান করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হলে এলার্জি, হাপানী ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. শানুর আলী মামুন বলেন, রোগীর ছবি দেখে মনে হচ্ছে নিউরোফাইব্রোমাইসিস। যা চামড়ার এক ধরণের জটিল রোগ। এটি পুরোপুরিভাবে চিহিৃত/ডায়াগনোসিস করতে হলে রোগীকে ভর্তি করে স্কিন বায়োপস্সিহ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে। যা ব্যয় সাপেক্ষ। এর চিকিৎসাও ব্যয় সাপেক্ষ। সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি সার্জিকেল, রেডিওথেরাপী বা কেমোথেরাপীরও প্রয়োজন হতে পারে।