শুক্রবার ● ৮ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » রাণীনগরে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে মাদুর বিছিয়ে পাঠদান
রাণীনগরে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে মাদুর বিছিয়ে পাঠদান
নওগাঁ প্রতিনিধি :: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। আশানুরুপ সংখ্যায় ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত থাকলেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শ্রেণিকক্ষের সংকট, বৈদ্যুতিক ফ্যান না থাকাসহ অন্তহীন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পাঠদান ব্যবস্থা দিনদিন থুবড়ে পড়ছে। পাঠদান চলমান রাখতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলীরা শ্রেণি কক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে উপস্থিত কমলমতি শিক্ষার্থীদের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে সাড়িবদ্ধ ভাবে বসিয়ে পাঠদান কার্যক্রম কোন রকমে চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বারবার জানানোর পরও ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নিমার্ণ কিম্বা সংস্কারের উল্লেখযোগ্য দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই।
জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামে অবস্থিত মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগী তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে স্থাপন করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১৬ জানুয়ারিতে বিদ্যালয়টি রেজিস্টার্ড ভুক্ত হলে ২০০২ সালে তিন কক্ষ বিশিষ্ট ভবন নিমার্ণের পর থেকে অদ্যবদি সরকারি বরাদ্দকৃত আর কোন নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় শ্রেনিকক্ষ সংকটের কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তিন কক্ষ বিশিষ্ট পুরাতন ভবনে প্রতিদিন বিদ্যালয়ের প্রায় ১০২ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করে। প্রতি কক্ষে চারটি করে ফ্যান থাকার কথা থাকলেও রয়েছে দু’টি করে। তাই প্রচন্ড গরমের সময় গাদাগাদি করে শিশুদের বসানোর কারণে পাঠদানের সময় মাঝে-মধ্যে ছাত্র-ছাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
অভিভাবক এনামুল হক ওবায়দুলসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমাদের এই বিদ্যালয়টি অনেক সমস্যায় জর্জরিত। পুরাতন ভবনের কারণে আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর পর আতংকেই থাকি। শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষা গ্রহণ করে। বিদ্যালয়টির উপযুক্ত পরিমাণ জায়গা থাকলেও সরকারি বরাদ্দে নতুন ভবন না পাওয়ায় শ্রেণিকক্ষ সংকটে রয়েছে বিদ্যালয়টি। তাই সরকার যদি একটি আধুনিক মানসম্মত নতুন ভবন নির্মাণ করে দিতো তাহলে বারান্দায় মাদুরে বসে আমাদের সন্তানদের আর শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো না।
প্রধান শিক্ষক ফজলার রহমান বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করায়। এলাকার অনেক মানুষ বিদ্যালয়ের এমন অবস্থা দেখে তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে চায় না। শ্রেণিকক্ষ সংকট, বেঞ্চের সংকট, জরুরি কাগজপত্র রাখার জন্য নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ আসবাবপত্র।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: আতোয়ার রহমান জানান, ওই বিদ্যালয়ে অবকাঠমোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিদ্যালয়ের যাবতীয় সমস্যা চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট উর্ধতন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।