রবিবার ● ১০ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » বর্ষায় তৎপর, শুষ্ক মৌসুমে নিষ্ক্রিয় পানি উন্নয়ন বোর্ড
বর্ষায় তৎপর, শুষ্ক মৌসুমে নিষ্ক্রিয় পানি উন্নয়ন বোর্ড
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: নদী ভাঙনে প্রতিবছর সর্বশান্ত হচ্ছে উত্তরের জেলা গাইবান্ধার শতশত মানুষ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ভাঙন ঠেকাতে কেবল বর্ষাকালে তৎপর হলেও শুষ্ক মৌসুমে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সঠিক সময়ে কাজ না করলে ভাঙন ঠেকানো সম্ভব নয় বলে মত উন্নয়ন কর্মীদের। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, প্রকল্প অনুমোদন না হলে কিছুই করার নেই তাদের।
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে মুহূর্তেই নদীগর্ভে হারিয়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর, গাছপালা, রাস্তাঘাট। অদৃশ্য হয়ে যায় চিরচেনা গ্রাম। বাস্তুভিটা হারিয়ে দীর্ঘদিনের সামাজিক বন্ধন ছিন্ন করে জীবিকার তাগিদে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ছে অসহায় মানুষগুলো। গরীবের ঝুপড়ি ঘর থেকে শুরু করে ধনীদের ইট, কাঠ, পাথরের তৈরি দালান কোঠা পর্যন্ত রক্ষা পায়নি ব্রহ্মপুত্র নদের ভয়াল ছোবল থেকে। নদী ভাঙন থেকে এই জনপদ রক্ষায় বর্ষা মৌসুমের বদলে শুকনো মৌসুমে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি ভুক্তভোগীদের।
স্থানীয়রা বলেন, যখন ভাঙন শুরু হয় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বস্তা ফেলা হয়। বর্ষা শেষ হলে তাদের আর কোনো তৎপরতা দেখা যায় না। বর্ষা এলেই গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়। এছাড়া গাইবান্ধা অংশে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে ৭৮ কিলোমিটার বাঁধের পুরোটাই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেই।
গাইবান্ধার ৪টি উপজেলার ২৫টি মৌজা ভাঙন প্রবণ। তার মধ্যে সদরের বাগুড়িয়া থেকে ফুলছড়ির গণকবর পর্যন্ত চারটি পয়েন্টে ভাঙন প্রতিরোধে গত বছরের জুনে প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প উদ্বোধন হলেও এখনো ব্লক তৈরির কাজ শেষ হয়নি।
বেসরকারি সংগঠন গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের তথ্য মতে, নদী ভাঙনে গাইবান্ধাসহ উত্তরের চার জেলা থেকে গত ১০ বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষ এলাকা ছেড়েছে। এ অবস্থায় ভাঙন প্রতিরোধে সঠিক সময়ে কাজ শুরুর দাবি উন্নয়নকর্মীদের।
গাইবান্ধা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী এম আব্দুস সালাম বলেন, বিশেষজ্ঞদের খুঁজে বের করতে হবে কাজের সঠিক সময় কোনটি। এটা করা গেলে অর্থের অপচয় হবে না এবং বরাদ্দ কাজে লাগবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, বরাদ্দ না পেলে শুষ্ক মৌসুমে কাজ করা সম্ভব নয়।