রবিবার ● ২৪ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড়
আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড়
ষ্টাফ রিপোর্টার :: আলীকদম উপজেলার নবনির্বাচত চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। জ্ঞান বিকাশ ধামাই নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুক ব্যবহারকারী লিখেছেন : আমি একজন সমাজ উন্নয়ন কর্মী কোনো রাজনীতি ব্যাক্তি নয় এবং রাজনীতি সম্পর্কে কমই বুঝি ৷
আমরা উন্নয়ন কর্মীরা দেশে-বিদেশে নারী অধিকার নিয়ে কাজ করি নারীর শ্লীলতাহানির জন্য নয় !
বাংলাদেশে অনেক সংবর্ধনার অনুষ্ঠান দেখেছি কিন্তু এধরনর সংবর্ধনার অনুষ্ঠান কখনো কোথাও দেখিনি !
জানিনা দেশের সচেতন নারী সংগঠন,সুশীল সমাজ এবং সুনাগরিকেরা এধরনের সংবর্ধনার অনুষ্ঠান বাংলাদেশে কোথাও দেখেছেন কিনা !
বান্দরবান পার্বত্য জেলার আলীকদম উপজেলায় মো. আবুল কালাম সাহেব চেয়ারম্যান পদে নবনির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ম্রো আদিবাসীদের সংবর্ধনা নেয়ার জন্য ম্রো আদিবাসীদের পাড়ায় যান।
বান্দরবানের ম্রো আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা সচরাচর একটু সহজ সরল প্রৃকতির। সাদা মনের মানুষ ও বটে, সরল মনে ম্রো আদিবাসীরা খুব সহজে বিশ্বাস করে থাকেন।
ছবিগুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে চেয়ারম্যান সাহেব যেই ভাবভঙ্গিতে ছবি নিচ্ছেন আর সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে উপস্থিত আদিবাসী নারী-পুরুষেরা অসহায়ভাবে হেঁসে হেঁসে সিনেমার পর্দারদিকে তাকিয়ে আছে মাত্র ৷
একজন জনপ্রতিনিধি ও সৎ চরিত্রবান ব্যাক্তি কখনো এইভাবে একজন নারীকে জড়িয়ে ধরতে এবং মুরুব্বীদের সামনে ছবি তুলতে পারেননা ৷ যেমনটি এখন সেই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সারাবিশ্বে সরিয়ে পড়েছে, যার দরুন এখন নারীটিকে সমাজে ভালো চোখে দেখছেনা ৷ কারণ আমাদের দেশে বিদেশীদের মতো করে এভাবে নারীকে জরিয়ে ধরা এবং ছবি নেয়া এখনো এধরনের কালচার কোনো সমাজে প্রচলন নেই ৷
অতএব, এটি সম্পৃর্ণ এই নারীকে শ্লীলতাহানি ও নারী সমাজকে অবমূল্যায়ন করা ছাড়া আর কিছুই নয়।
হিল চাদিগাং ডটকম নামের একটি ফেইস বুক পেইজে লিখেছেন : নব নির্বাচিত চেয়ারম্যানের আদরে ভালবাসায় সিক্ত ম্রো জন গোষ্ঠী
মো. আবুল কালাম। আলীকদম উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান। সম্প্রতি চেয়ারম্যান হিসেবে ম্রোদের সংবর্ধনা নিতে গ্রামে যান তিনি। বান্দরবানের জনৈক মানবাধিকার কর্মীর ফেইসবুক ওয়ালে ছবিগুলো ছাড়া হয়। ছবিগুলো হাসির খোরাক জোগাচ্ছে আমায়। কিন্তু হাসির খোরাক জোগালেও এটি নারীর উপর শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে। কিভাবে নারীর সাথে আচরণ করতে হয় হয়তো তিনি ভুলে গেছেন। সভ্য মানুষ এ আচরণ করতে পারেন না। গ্রামের সহজ সরল নারীর দুর্বলতা এভাবে তিনি নিতে পারেন না। একজন জনপ্রতিনিধি কেন এভাবে আচরণ করবেন? নারীকে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ দিচ্ছেন? নাকি সরলতাকে দুর্বলতা ভেবে নিয়ে এভাবে আচরণ করছেন? ধীক্কার জানায়, শাস্তি হওয়া উচিত এনাদের। কয়েকদিন পরে নারীদের রুমে গিয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নারীর নিরাপত্তার উপর আক্রমণ করবেন না বিশ্বাস করা যায় না। নারীদের এহেন আচরণ পরিহার করুন। নারীদের সম্মান করতে শিখুন।
লামা আলীকদম ডটকম নামের একটি ফেইস বুক পেইজে লিখেছেন : মো. আবুল কালাম, একজন নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান। বান্দরবন জেলার আলীকদম উপজেলায় সম্প্রতি তিনি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ম্রো আদিবাসীদের পাড়ায় যান সংবর্ধনা নেওয়ার জন্য।
বান্দরবনের ম্রো আদিবাসী জনগোষ্টিরা সচরাচর একটু সরল প্রৃকতির। সাদা মনের মানুষ ও বটে, সরল মনে ম্রো আদিবাসীরা খুব সহজে বিশ্বাস করে থাকেন। তারা হয়ত এটা জানেনা যে মো. আবুল কালাম সাহেব ( নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান) ম্রোদের মত একজন সরল প্রকৃতির মানুষ নন।।
একজন জনপ্রতিনিধি কখনো এইভাবে একজন নারীকে জড়িয়ে ধরতে পারেননা ওই নারীর অনুমতি ছাড়া। কান্ড জ্ঞানহীন ও লুচ্চামি ব্যাক্তি ছাড়া কখনো একজন নারীকে এইভাবে জড়িয়ে ধরতে পারেনা। এটি সম্পৃর্ণ শ্লীলতাহানি ও নারী সমাজকে অবমূল্যায়ন করা।
অতীশ দীপঙ্কর নামের একটি ফেইস বুক পেইজে লিখেছেন : কবে জাগবে পাহাড়ি নেতা, জুম্ম ও জুম্ম রাজারা ?
আপনি সহজ সরল মানসিকতায় এসব উগ্র সাম্প্রদায়িক মুসলিম নেতাদের ভোট দিবেন ও ভোটের পরে আনন্দে গদগদ হয়ে তাদের সংবর্ধনা ও বুনো ফুলের মালা দিবেন কিন্তু তারা কি আপনার সরলতার মূল্য দিবে? জেনে রাখুন এসব দখলদার উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কোন কিন আপনার প্রাপ্য সম্মান দিবেনা বরং আপনার এই নিস্পাপ মানসিকতার জন্য আপবাকেই একদিন চরম মূল্য দিতে হবে আপনার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ধর্ম ও সমাজকে৷ কলংকিত করে নষ্ট করে জীবন সম্মান তছনছ করে করে।
ছবিতে মো. আবুল কালাম, একজন বিএনপি নেতা ও আলীকদম উপজেলার ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। সে নির্বাচিত হয়ে ম্রো আদিবাসীদের পাড়ায় সংবর্ধনা নেওয়ার সময় উপজেলার চেয়ারম্যানকে পাড়ার নিষ্পাপ শিক্ষিত সুন্দরী মেয়েটিকে দিয়ে ফুলের মালা পড়ানোর নিষ্ঠুর শাস্তি জনসম্মুখে দিল সে জোর করে তাকে বুকে টেনে।
বান্দরবনের ম্রো আদিবাসী জনগোষ্টির মানুষ সচরাচর সরল প্রৃকতির ও সাদা মনের মানুষ। তাদের এই সরলতার সুযোগ নিয়ে দখলদার সামপ্রদায়িক গোষ্ঠী পাহাড়ে যে উলঙ্গ নৃত্য শুরু করেছে তার শেষ কোথায়?
একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে চেয়ারম্যান আবুল কালাম কোন মুসলিম নারী বা তার নিজের বোনকেও কি এভাবে জড়িয়ে ধরতে পারবে? পাহাড়ে কান্ড জ্ঞানহীন ও এমব লুচ্চামির শেষ কোথায়? কবে জাগবে পাহাড়ি নেতা ও জুম্ম রাজারা? কবে প্রতিরোধে জনজোয়ারের তৈরি করবে পাহাড়ের চির সাহসী মানুষগুলো?
উল্লেখ্য এই ছবিগুলো দিয়েই পাহাড়ের দখলদার সেটেলাররা একদিন পাহাড়ি যুবকদের অপমানিত করবে তাদের অহংকার ও আত্মবিশ্বাসে আঘাত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হবে। পোস্টটি শেয়ার করে স্বজাতি ও স্বধর্মীদের সতর্ক করুন।
Mangminung Nahid নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুক ব্যবহারকারী লিখেছেন : আজ সারাদিন এই পোষ্টটা দেখি আর কুত্তারবাচ্চা চেয়ারম্যানরে জুতাইতে ইচ্ছে করে।
Rabi Chakma নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুক ব্যবহারকারী লিখেছেন : এটা কি সংবর্ধনা নাকি বিয়ের অনুষ্ঠান বুঝা যায়না। এই চরিত্রহীন, নারী লোভী, বেহায়াটা আবার চেয়ারম্যান? এরাতো সমাজের,দেশের নর্দমার কীট।
Skc Shonjoy নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুক ব্যবহারকারী লিখেছেন : সম্মানিত ব্যক্তিগন, যারা নারী অধিকার কিংবা নারীবাদের সাথে জড়িত বিষয়টি কিভাবে দেখবেন জানিনা, আমার মতে এটা পশুর চেয়েও খারাপ আচারন, ফুলের মালা না দিয়ে জুতার মালা পড়িয়ে দেওয়া উচিত।
Nona Haji Changma নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুক ব্যবহারকারী লিখেছেন : সম্প্রীতির বান্দরবানের চিত্র।
আলীকদম উপজেলার নবনির্বাচত চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় অব্যাহত রয়েছে।