বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথের ইউএনও’সহ এসিল্যান্ডকে প্রত্যাহারের দাবী
বিশ্বনাথের ইউএনও’সহ এসিল্যান্ডকে প্রত্যাহারের দাবী
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাদেরকে প্রত্যাহারের দাবী জানানো হয়েছে। আজ বৃহষ্পতিবার দুপুরে বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ ও সচেতন বিশ্বনাথ সমাজ কল্যাণ সংস্থার আহবায়ক ফজল খান সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বরাবরে লিখিত অভিযোগ তুলে ধরে এই দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবী জানান।
এতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘বিশ্বনাথ উপজেলার সর্বত্র সরকারি জায়গা-জলাশয় দখল, সরকারি গাছ কর্তন ও বিভিন্ন সরকারী বরাদ্দের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরা নিরব ভূমিকা পালন করে আসছেন। যে কারণে উপজেলার সর্বত্র বাড়ছে দখলসহ নানা অনিয়ম। তাদেরকে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে অবহিত করা হলে তারা আমাকে বলেন, এসব আরও আগে অবহিত করলেন না কেন? অথবা লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। তাদের কথামত অভিযোগ দিলেও তারা সময়মত তদন্ত করেন না। ইচ্ছেমত তদন্তে কালক্ষেপন করেন। যার ফলে, বিভিন্ন আলামত সরিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। একইভাবে সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে অবহিত করা হলে, এই দুই কর্মকর্তা কালক্ষেপন করেন। এই সময়ের মধ্যে অবৈধ দখলদাররা স্থাপনার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ফেলে।’
গত ৭ জানুয়ারী স্থানীয় ভূমি কর্মকর্তা নির্মল পাল চৌধুরীর মাধ্যমে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন দাবী করে ফজল খান উল্লেখ করেন, ‘অই টাকা দিয়ে পরদিন তিনি উপজেলা সদরের পুরান বাজারের নৌকা ঘাঠে বাসিয়া নদীর তীরে গড়ে ওঠা একটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন।’
ফজল খান আরও উল্লেখ করেন, ‘সম্প্রতি খাজাঞ্চি ইউনিয়নের মুফতির বাজারে মরা সুরমা নদীর তীরে অবৈধভাবে মাটি কর্তন ও তিন তলা অবৈধ স্থাপনা তৈরী করা হয়। বিগত প্রায় দুই বছর ধরে এইসব কাজ চললেও দুই কর্মকর্তার কোনো মাথাব্যথা হয়নি। এ বিষয়েও তাদেরকে অবহিত করলে তারা আমাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। তাদের কথামত লিখিত অভিযোগ দিলে তারা ঘটনাস্থলে যাননি। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কাছে ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করার পর সেখানে গিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে একজনকে আটক করে প্রশাসন। কিন্তু অবৈধ স্থাপনাগুলো বহাল তবিয়তে রয়েছে। এছাড়া, ২০১৮ সালের ১১ আগস্ট বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের ময়লা আবর্জনা অপসারণের জন্য জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাস্টবিন বিতরণের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন তৎকালিন জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমা তুজ জোহরার দায়িত্বে অবহেলার কারণে ডাস্টবিনগুলোও উধাও হয়ে গেছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারী বিশ্বনাথ উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় ভূমি কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, বাসিয়া নদী খনন নিয়ে ঠিকাদারকে কে বা কারা বিরক্ত করছে। এ বিষয় নিয়ে কাউকে কথা বলতে নিষেধ করে দুই দিনের মধ্যে বাসিয়ার খনন করা মাটি অপসারণ করা হবে বলে তিনি জানান। কিন্তু, প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও মাটি অপসারণ করা হয়নি। যে কারণে নদীর মাটি আবারও নদীগর্ভে পড়ে ফের ভরাট হতে চলেছে। এই দুই কর্মকর্তার এমন দায়িত্বে অবহেলার কারণে উপজেলার জনসাধারণের মধ্যে তাদের প্রতি অনাস্থা চলে এসেছে।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদারকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাতেমাতুজ জোহরা ফজল খানের অভিযোগগুলো মিথ্যা দাবী করে বলেন, ‘২৬ শে মার্চ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাটক মঞ্চস্থের জন্যে ফজল খান যে স্ক্রিপ্ট জমা দিয়েছিলেন, সেটি মঞ্চ নাটকের স্ক্রিপ্ট ছিল না। ছিল টেলিফিল্মের স্ক্রিপ্ট। তাছাড়া, তাতে এমন কিছু ডায়ালগ ছিল, যা দর্শকদেরকে ভুল বার্তা দিত। তাই তাকে সেটি মঞ্চস্থের অনুমতি দেয়া হয়নি। এই কারণে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।’