শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » অগ্নিকাণ্ডের পুড়ছে শত শত মানুষ : মোবাইলে ব্যস্ত জনতা
অগ্নিকাণ্ডের পুড়ছে শত শত মানুষ : মোবাইলে ব্যস্ত জনতা
আমির হামজা :: এ সময় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আমাদের কিছু বাংলার মানুষ! তাঁরা অগ্নিকাণ্ড রোধে নয়, নিজের মোবাইল ফোনে “সেলফি, ভিডিও, ফেইসবুক লাইভে তারা ব্যস্ত। এটা আবার কেমন সোনার বাংলাদেশ! যে সোনার ছেলেরা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এফ.আর টাওয়ারে আগুনের তাপে জ্বলে পুড়ে ছাই হচ্ছে, এটার কোনো চিন্তার বিষয় আসে আর যায়না। কারণ আমাদের তো সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হতে হবে।
জ্বলে পুড়ে মরছে এটার বিষয় বড় নয়, সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে কার আগে কে আপলোড দিতে পারে তাই নিয়ে ব্যস্ত। শুধু কি তাই এফ.আর টাওয়ারে আগুনে জ্বলে পুড়ে মরছে অসংখ্যা মানুষ, এটার বিষয় দেখার বড় নয় পকেট থেকে স্মার্টফোন বাহির করে দ্রুত ছবি, ভিডিও, লাইভ ইত্যাদি হচ্ছে দেখার বিষয়। উপরে শত শত মানুষের আবেগময় কান্না নিচে কিছু জ্ঞানহীন মানুষের সেলফি তুলা নিয়ে ব্যস্ত। আবার দেখা যায় অসংখ্যা মানুষ নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এই সময় উদ্ধার কাজে সহযোগীতা করছেন, যাতে আটকে পড়া মানুষ গুলো যেন সুস্থ ভাবে বেঁচে আসতে পারে। তাঁরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এদিক সেদিক ছোটা ছুটি করছে। যাতে জলন্ত আগুনে কিছু পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ফায়ার সার্ভিস থেকে শুরু করে সকল কাজে তাঁদের সহযোগীতার ছোট হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রাণের বিনিময়ে কাজ করছে। তাঁরা সেলফি, ভিডিও নয় এসময় আগুনের যন্ত্রণা থেকে এফ.আর টাওয়ারের সেই ভাগ্যহীন মানুষ গুলো যেন নিজের পরিবারের মা বাবার বুকে ফিরে চলে আসতে পারে। নিচে আবার অনেক মানুষ করছে ছোটা ছুটি কোনো সময় চোখের পানি ফেলে আল্লাহ্, আল্লাহ্, তুমি রক্ষা কর, যে যার ধর্মের প্রভু’কে একবার হলেও বলছে আপনি মহান, এই অসহায় প্রাণ গুলো’কে আপনি একটু রক্ষা করুন মালিক। কোনো সময় টিভির পর্দায় কোটি কোটি মানুষ সরাসরি দেখছে এফ আর টাওয়ারের ঘটনা, এই সময় অনেকেই দুপুরে খাবার পযন্ত খেতে পারেনি, টিভির পর্দায় বসে দেখা মানুষ গুলো হয়তো চোখের পানি ফেলছে, নয়তো নফল নামাজ আবেদন করছেন আল্লাহর কাছে, এমন কোনো মানুষ নেই তাঁর প্রভু’কে স্মরণ করেনি। যে যার মত করে সৃষ্টিকর্তা স্মরণ করেছেন। যেন মানুষ গুলো নিরাপদে বেঁচে আসতে পারে।
একজন আট বা নয় বছরের ছোট শিশু আগুন কি তিনি সঠিক বুঝেনা, কিন্তু তিনিও এই সময় অনেক জ্ঞানহীন মানুষকে জানিয়ে দিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের পানি
সরবরাহের পাইপ টা ফেটে গিয়ছে পানি পড়ে যাচ্ছে যার কারণে পানি গুলো সঠিক গন্তব্য পৌঁছাতে পারছেনা, এই সময় ঐ অবুঝ শিশু ফেঁটে যাওয়া পাইপটি একটি পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে জড়িয়ে ধরেছে যাতে পানি গুলো নষ্ট না হয়। সেই শুধু উপরে দিকে তাকিয়ে আছেন পানি গুলো সঠিক অবস্থায় গন্তব্য যাচ্ছে কিনা। ছবিতে দেখা যায় তাঁর চোখে মুখে দেশ প্রেমের একটি ভাব প্রকাশ হচ্ছে। তিনি আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে ছবি, ভিডিও ইত্যাদি তুলে নয় এখানে দূরসময়ের আপনাদের যে যার মত কাজ করে উপরের মানুষ গুলো যাতে আমাদের মাঝে ফিরে আসতে পারে।
স্যালুট : শিশু নাঈম
অন্যদিকে নিজের প্রাণের সকল ঝূঁকি নিয়ে কাজ করেছে আমাদের ফায়ারসার্ভিস টিম এরা উপর থেকে জীবন্ত অবস্থায় নানা কৌশলে নিয়ে আটকে পড়া লোকজনকে নতুন প্রাণ তুলে দিচ্ছে স্বজনদের কাছে। বলা যেতে পারে ফায়ার সার্ভিস দল আমাদের দেশের অহংকার।
হ্যা আপনি ছবি তুলবেন ভিডিও প্রকাশ করবেন কিন্তু এসময় আপনাকে সেলফি তোলা মানাই না, হয়তো আপনার তোলা ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসতে পারে। আবার দেখাযায়ই উদ্ধার কাজ থেকে বেশি জনতা আগ্রহ প্রকাশ করে তাঁর মোবাইল ফোনে ক্যাপশন বিহিন মতামত প্রকাশ করা, যা একটি ঘটনাস্থলে সহজে মেনে নেওয়া যাইনা, যে সময়ে উদ্ধার কাজে ব্যস্ত সময় পার করবে, সেই সময় মোবাইলে ব্যস্ত আমাদের হাজার হাজার জনতা।
সে সময়ে ছবি ভিডিও ইত্যাদি নিয়ে যেখানে দেশের মিডিয়ার লোকজন সঠিক সংবাদ প্রদান করবেন, সেই স্থানে সেই সময় আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া লোকজন উদ্ধার কাজে ব্যস্ত না হয়ে তারা ছবি, ভিডিও, লাইভে ব্যস্ত।
রাউজান প্রতিনিধি সাংবদিক আমির হামজা।