সোমবার ● ১ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » আচমকা বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড মহালছড়ি
আচমকা বয়ে যাওয়া ঘুর্ণিঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড মহালছড়ি
মহালছড়ি প্রতিনিধি ::খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে আচমকা বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর ঘুর্ণিঝড়ে ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ৩১ মার্চ রবিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করে মহালছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে বিদ্যুৎ বিপর্যস্ত, ফসল, ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জানা গেছে, রাত সাড়ে ৮টা থেকে আকাশের চারদিক হঠাৎ অন্ধকারে ছেয়ে যায়। এক সময় শুরু হয় প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়সহ বজ্রবৃষ্টি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালা উপড়ে ও ডালপালা ভেঙে মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের বিভিন্ন চলাচল সড়কের উপর পড়ে আছে। এতে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। মহালছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ঘুর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে তছনছ হয়ে যায়। এছাড়া কাটিংটিলা, মনাটেক, সিঙ্গিনালা, মহালছড়ি সদর, টিলাপাড়া, খুল্যাংপাড়া, ধনপুদি ও থলিপাড়াসহ অনেক গ্রামের ঘরবাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে অনেক অসহায় গরিব মানুষ। এক সময় ঘূর্ণিঝড় বন্ধ হলেও রাত প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় মিশ্রফল বাগান চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। মহালছড়ি ব্রিজ পাড়া, কাপ্তাইপাড়াসহ অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেছে ও খুঁটি ভেঙ্গে গেছে। ফলে সারারাত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল পুরো মহালছড়ি উপজেলাবাসী।
মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না নাসরিন উর্মি জানান, আচমকা এ ঘুর্ণিঝড়ে মহালছড়িতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংগ্রহ করে ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
কালবৈশাখীর তান্ডবে লন্ডভন্ড মহালছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ
মহালছড়ি প্রতিনিধি :: আচমকা বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর ঘুর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে মহালছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। ৩১ মার্চ রবিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করে মহালছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে মহালছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর সম্পূর্ণ তছনছ হয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে উপজেলার কয়েকটি এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালবৈশাখীর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ে আছে। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ থৈইলাপ্রু মারমা জানান, প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে বিভিন্ন ট্রেডে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত মেরামত না হলে শিক্ষার্থীদের মারাত্মক ক্ষতি হবে। প্রতিষ্ঠানটি মেরামত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না নাসরিন উর্মি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আচমকা এ ঘুর্ণিঝড়ে মহালছড়িতে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে যতটুক সহযোগিতা করা যায় উপজেলা প্রশাসন থেকে সাধ্যমত চেষ্টা করা হবে এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান।
মহালছড়িতে সেনাবাহিনী কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি পরিদর্শন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান
মহালছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে আচমকা কালবৈশাখী ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি পরিদর্শন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে সেনাবাহিনী। ১ এপ্রিল সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় কাটিংটিলা এলাকায় গত ৩১ মার্চ রাতে আচমকা বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি পরিদর্শন ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন মহালছড়ি জোন অধিনায়ক লে: কর্ণেল মেহেদী হাসান পিএসসি। এ সময় এলাকার ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শনকালে জোন অধিনায়ক লে: কর্ণেল মেহেদি হাসান পিএসসি বলেন, আচমকা এ ঘুর্ণিঝড়টি গরীব মানুষের অনেক ক্ষতি করেছে। কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করা যা এসব গরীব পরিবারের কখনো সম্ভব নয়। তাই ক্ষতিগ্রস্ত গরীব ও অসহায় পরিবারের পাশে দাড়াতে মহালছড়ি জোনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে। অসহায় ও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে সবসময় সেনাবাহিনী থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে আচমকা কালবৈশাখী ঝড়ে মহালছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজ, বাগান-বাগিচা ও মানুষের ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়।