বৃহস্পতিবার ● ১১ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » খাগড়াছড়িতে ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বর্ণাঢ্য র্যালি
খাগড়াছড়িতে ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বর্ণাঢ্য র্যালি
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ আয়োজনে পার্বত্য চট্টগ্রামে ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবি ও বাংলা নববর্ষ উদ্ধোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্ন শরণার্থী পুণর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
খাগড়াছড়ি জেলায় বিভিন্ন পাড়ার মহল্লা পাহাড়ে বৈসাবি উৎসবকে নিয়ে রং লেগেছে । রং লেগেছে পাহাড়ের বৈসাবি উৎসব। প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় চলছে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবে বিভিন্ন ধরনের খেলা। পাহাড়ে জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব শুরু হ উৎসবে রং ছড়িয়ে পড়েছে পাহাড়ের ।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্ন শরণার্থী পুণর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, জেলা প্রশাসক মো: শহিদুল ইসলাম ,খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আহসান উজ্জামান পিপিএম- সেবা, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব)মো. নুরজ্জামান, খাগড়াছড়ি পৌরসভা মেয়র রফিকুল আলম, খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন জনাব মো: ইদ্রিস মিঞা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ নিবার্হী কর্মকর্তা টিটন খীসা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মংক্যচিং চৌধুরী,খগেশ্বর ত্রিপুরা, খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল, মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, নিগার সুলতানা, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার চেয়ারম্যান শানে আলম , দিঘীনালা উপজেলার চেয়ারম্যান মো: আবুল কাশেমসহ উচ্চ পদস্থ সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণিল পোষাকে তরুণ-তরুণী ছাড়াও বিভিন্ন বয়সের হাজারো বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষ অংশ গ্রহণে একটি র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গণে আয়োজন করা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী গড়িয়া নৃত্যসহ মনোজ্ঞ মারমা সম্প্রদায়ের পাখা নৃত্য, পানি উৎসব ও সাঁওতাল নৃত্য মনোজ্ঞ ডিসপ্লে উপস্থাপন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম টাস্কফোস চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বৈসাবি উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সু-দুঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমরা একই ছাতার নিচে একই মায়ের সন্তান হিসেবে বসবাস করতে চাই। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তি করা ফলে আজ আমরা মন প্রাণের উৎসব পালন করতে পারছি। পাহাড়ের সকল জনগোষ্ঠির উৎসবে রং লেগেছে বলে ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য যে, ১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছে। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি পরিচিত লাভ করেন। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ‘ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিঝু’ নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়।