সোমবার ● ১৫ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » মাইকেল চাকমা অপহৃত নাকি দেশত্যাগ করেছেন ?
মাইকেল চাকমা অপহৃত নাকি দেশত্যাগ করেছেন ?
সিএইচটি মিডিয়া ডেস্ক :: সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর থেকেই ইউপিডিএফের অন্যতম সংগঠক মাইকেল চাকমা ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন। এরপর থেকে তার কোনো ‘হদিস পাওয়া যাচ্ছে না’ দাবি করে তাকে ‘অপহরণের’ অভিযোগ তুলেছে ইউপিডিএফ সমর্থিত চার সংগঠন।
আজ ১৫ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা, শ্রমজীবী ফ্রন্টের (ইউডব্লিউডিএফ) সভাপতি সচিব চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিপুল চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা এ অভিযোগ করেন।
‘নিখোঁজ’ মাইকেল চাকমা পাহাড়ে পূর্ণশায়ত্বশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত প্রসিত খীসা নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোকেট্রিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) অন্যতম সংগঠক ও শ্রমজীবী ফ্রন্টের (ইউডব্লিউডিএফ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ‘পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী উৎসব বৈসাবি (বৈসুক-সাংগ্রাই-বিঝু) ও রানা প্লাজা ধ্বংসযজ্ঞের বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণের জন্য মাইকেল চাকমা শ্রমিক এলাকায় সাংগঠনিক সফরে যান। কাঁচপুর এলাকায় সাংগঠনিক কাজ শেষে গত ৯ এপ্রিল বিকালে ঢাকায় কর্মসূচি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা সভায় যোগদানের উদ্দেশে রওনা হন। এরপর থেকে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। তাকে নিয়ে তার পরিবার ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।’
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ও দেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত ও শ্রমজীবী মানুষের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়ার রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক মাইকেল চাকমাকে তুলে নেওয়া হয়েছে।’
বিবৃতিতে চার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সরকার এ ঘটনার দায় কিছুতেই এড়াতে পারে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন এবং ‘অপহৃত’ মাইকেল চাকমার কোনো কিছু হলে সরকারকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন।
এদিকে Monika Chakma নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন :
কী ঘটেছে মাইকেল চাকমার কপালে ?
মাইকেল চাকমা অপহৃত নাকি দেশত্যাগ করেছেন। মাইকেল চাকমা অপহৃত বলে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে দাবী করেছে সংগঠনটি। কিন্তু এ নিয়ে সংগঠনের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, ইউপিডিএফের মধ্যে যারা মাইকেল ভক্ত তারা এই দাবী কোনোভাবেই মানছে না। তাদের মতে, ইউপিডিএফের মতে, তাকে অপহরণ করা হয়েছে ৯ এপ্রিল, কিন্তু এক সপ্তাহ পর ১৫ এপ্রিল এ কথা কেন ঘোষণা করা হলো।? মাইকেল অপহৃত, অথচ ইউপিডিএফ বিবৃতি না দিয়ে যুব ফ্রন্ট কেন বিবৃতি দিলো? কি বলেন সচিব চাকমা? এখানেই মূল সন্দেহ। দলের ভেতরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রসীত বিকাশ খীসা যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়ার পর উচ্চাশী মাইকেল পরবর্তী নেতৃত্বের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এ ক্ষেত্রে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দলের সামরিক শাখার প্রধান সচিব চাকমা। দলের অন্যতম শক্তি যুবফ্রন্ট মাইকেলকে সমর্থন করায় সচিব চাকমা তার সাথে পেরে উঠছিলেন না। এদিকে দলের সামরিক শাখার শীর্ষ পদ থেকে আনন্দ প্রকাশ চাকমাকে সরিয়ে সচিব চাকমাকে দেয়ার বিষয়টি সামরিক শাখার বেশিরভাগ সদস্যই মানতে পারেনি। ফলে ভেতরে ভেতরে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। কিন্তু প্রসীত তার নেতৃত্বগুণে এই বিভক্তি প্রকাশ হতে দেয়নি। কিন্তু প্রসীত বিদেশে চলে যাওয়ার পর সঞ্চয় চাকমা ও দীপ্তি শংকর চাকমা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন। ফলে ইউপিডিএফ অনেকটা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় প্রবল নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে মাইকেলের পাশে দাড়ায় আনন্দ প্রকাশ চাকমা। কিন্তু মাইকেলকে দূর্বল করতে সচিব চাকমা গোপন খবর দিয়ে আনন্দ প্রকাশ চাকমাকে ধরিয়ে দেয়। এখন মাইকেলকে সরিয়ে সচিব চাকমা দলের উপর সর্বময় কর্তৃত্ব স্থাপন করলো। ইউপিডিএফ নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন নানা প্রশ্ন উঠেছে? মাইকেলের ভাগ্যে কী ঘটেছে? গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে মাইকেলকে কি সচিব চাকমা ধরিয়ে দিয়েছে, নাকি সচিব নিজেই তার লোক দিয়ে মাইকেলকে অপহরণ করে আটকে রেখে সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেকে আড়াল করছে? সচিব অবশ্য দলের নেতাকর্মীদের কাছে বলছে প্রসীতের মতো মাইকেলও দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তুু মাইকেলের পরিবার এ দাবী মানতে রাজী না হওয়ায় এখন বলছে সরকারী সংস্থা তাকে অপহরণ করেছে। বাস্তবতা দলের শীর্ষ পর্যায়ের সকলে জানে। https://www.facebook.com/mithila.chakma.58?__tn__=%2CdC-R-R&eid=ARAUAtu1Qp3aTPTCL4BJra17Wkh6ZW9ujnbM1pnKMRitWYT-FiFhPxuDZZPGIlncXbk7UHfQKeJDp3pi&hc_ref=ARTtKJzSE-8JsTyJNFBNBKmNvfDz9TQ6WlIO5yZ9esbi0_89KXgdEM9pA3Vkr3_6ZRI&fref=nf