সোমবার ● ১৫ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » স্কুলের ছাদে অক্সিজেন ফ্যাক্টরি
স্কুলের ছাদে অক্সিজেন ফ্যাক্টরি
বাগেরহাট প্রতিনিধি :: ফরিদ আহম্মদ স্কুলের ছাদে সব রকমের গাছই লাগিয়েছেন। তাদের এই ‘অক্সিজেন ফ্যাক্টরি’র ঔষধির মধ্যে আছেফল ও সবজি বাগান করায় এলাকায় বেশ সাড়া পড়েছে।ঔষধির মধ্যে আছে থানকুনি, তুলসী, তিন রকমের পুদিনা, এলোভেরাসহ অনেক কিছু। ফলের মধ্যে রয়েছে আম, পেয়ারা, লেবু, আমড়া, জলপাই, নৈল ও কুল এবং সবজির মধ্যে লাউ, বেগুন, সিম। বাগেরহাটের শরণখোলার বলেশ্বর নদীর তী রবর্তী কুমারখালী বাঁধ সংলগ্ন ১০৫ নং খোন্তাকাটা ইউনাইটেড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবনের ছাদে ড্রামে বিভিন্ন ফলের গাছ রোপন ও সবজি বাগান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মদ।
১৯৯১ সালে স্থানীয় সমাজসেবক আলী হোসেন এর নেতৃত্বে এলাকার কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে স্কুলটি স্থাপন করে নামে মাত্র ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন ফরিদ আহম্মদ। ৫ বছরের মাথায় ১৯৯৬ সালে বেসরকারি প্রাথমিক এ স্কুলটি রেজিস্ট্রেশন লাভ করে। ২০০১ সালে স্কুলটি সরকারি ভাবে পাঁকা ভবন নির্মাণ হয়। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০১১ সালে আবার দ্বিতল সাইক্লোন কাম স্কুল ভবন নির্মাণ হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি এক ঘোষণায় জাতীয়করণ লাভ করে। স্কুলের পড়াশুনা সহ সার্বিক দিকে নজর দেন এক প্রধান শিক্ষক। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সহকর্মী শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি। বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা এখন ১৭৫ জন। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিক্ষার মান বাড়তে থাকে এবং শুরু হয়েছে এ+ ও বৃত্তি লাভ করা। স্কুল ভবনে বিভিন্ন ওয়ালে শিক্ষণীয় বিভিন্ন মনীষীদের বাণী এবং প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সংক্রান্ত বাণী প্যানায় ও ওয়াল লিখনীতে আকৃষ্ট করেছে। উপজেলার শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০১৮ সালে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এ স্কুলটি।
প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মদ বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছরের শিক্ষকতার শেষ দিকে স্কুল ভবনের ছাদে ফল ও সবজি বাগান করায় এলাকায় বেশ সাড়া পড়েছে। ফলের মধ্যে রয়েছে আম, পেয়ারা, লেবু, আমড়া, জলপাই, নৈল ও কুল এবং সবজির মধ্যে লাউ, বেগুন, সিম। দুই-তিন বছর পূর্ব থেকে বড় ড্রামে মাটি দিয়ে এসব বৃক্ষ লাগানো হয়েছে। গাছে পানি সেঁচের জন্য বসানো হয়েছে বৈদ্যুতিক মটার। এ ছাদ বাগান দেখে এলাকাবাসীও তাদের বাড়ীতে বাগান করতে উৎসাহিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক আন্তরিক ভাবে শিক্ষাবান্ধব সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালনে ভূমিকা রাখলে শিক্ষার মান উন্নয়ন সহ স্কুলের সার্বিক পরিবর্তন সম্ভব। স্কুলে বৃক্ষ রোপনের জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। যেসব স্কুল ভবনে ছাদের উপরে চতুর্পাশে ওয়াল রয়েছে সেখানেই ছাদ বাগান করা উচিৎ। তাতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে। অপরদিকে শিক্ষার্থী অভিভাবক সহ এলাকাবাসী বৃক্ষ রোপনে উৎসাহিত হবে।
শরণখোলাউপজেলা রিসোর্স সেন্টার কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, উপজেলা প্রায় অর্ধশত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁকা ভবন রয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ভূমিকা নিলে সেখানে ছাদ বাগান করা যায়। প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহম্মদ এর স্কুলের মতো ছাদ বাগান গড়ে তোলা হলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে, পাল্টে যেতে পারে এলাকার চিত্র।