শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » পাবনা » দরিদ্র মায়ের আশা পূরণ হলো হোটেল বয় গৌর চন্দ্র স্কুলে
দরিদ্র মায়ের আশা পূরণ হলো হোটেল বয় গৌর চন্দ্র স্কুলে
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহর পৌর শহরের কাজীপাড়া মহল্লার গৃহকর্মী অলোকা রানী দাসের ছোট ছেলে গৌর চন্দ্র দাস(১০) এখন নতুন বই নিয়ে স্কুলে। বৃহস্পতিবার সকালে চাটমোহর পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত চাটমোহর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সকার অসীম কুমার।
সাত বছর বয়সী গৌর চন্দ্র দাসের বাবা নির্মল চন্দ্র দাস মারা যাওয়ার পর সংসারে জেঁকে বসে অভাব। দিশেহারা মা অলোকা রানী দাস বাধ্য হয়ে গৃহকর্মীর কাজ নেন। বড় ছেলে মিলনকে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর দোকানে এবং গৌরকে চাটমোহর শাহী মসজিদ মোড়ের একটি হোটেলে কাজে রাখেন।
সমবয়সী শিশুরা যখন স্কুলে যায় তখন গৌরকে টেবিলে টেবিলে খাবার দিতে হতো। চায়ের কাপ নিয়ে দৌড়াতে হতো দোকানে দোকানে। দিনভর হাড় ভাঙা খাটুনির পর হোটেল মালিক তিনবেলা খাবারের সঙ্গে সপ্তাহে দিতেন ১৫০ টাকা। অভাবের তাড়নায় এভাবেই শিশু গৌর হয়েছিল ‘হোটেল বয়’।
গৌর চন্দ্র দাস নতুন সহপাঠী পেয়ে এবং স্কুলে ভর্তি হতে পেরে মহাখুশি। যেন আনন্দে আত্মহারা। তবে উপস্থিত সবার চোখ ছিল অশ্রুসজল। এ অশ্রু বেদনার নয়, এ অশ্রু ছিল আনন্দের। এ সময় স্কুলের পক্ষ থেকে গৌরের হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন বই, খাতা ও কলম।
এছাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে অলোকা রানী দাসকে সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য ভর্তি করেন ইউএনও। পরবর্তীতে তাকে একটি সেলাই মেশিন উপহার ও তাদের জন্য বসতঘর নির্মাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এছাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ব্যক্তিগতভাবে গৌরের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুল আলম, সহকারি শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ, সহকারী শিক্ষক তাসলিমা খাতুনসহ অন্যান্য শিক্ষক মন্ডলী।
ইউএনও সরকার অসীম কুমার বলেন, ‘গৌরকে স্কুলে এবং তার মাকে সেলাই প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে তাকে দেয়া হবে সেলাই মেশিন। গৌরের পরিবারের মতো আর যেন কোন পরিবার এমন করুণ পরিণতির শিকার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তবেই ক্ষুধা মুক্ত ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। তবে সবার আগে মানুষকে মানবিক হতে হবে। আমরা যে যার জায়গা থেকে এগিয়ে এলেই সেটা সম্ভব।
স্থানীয় পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) বাস্ত বায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষক কর্মশালা
পাবনা প্রতিনিধি :: আটঘরিয়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে “স্থানীয় পর্যায়ে কেটসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহষ্পতিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত প্রশিক্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পাবনা জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ শফিউল ইসলাম। উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আকরাম আলী। বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাও. মোঃ জহুরুল ইসলাম খান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহফুজা সুলতানা প্রমূখ।
সাব-রেজিষ্টার কর্মকর্তা ইসমত জাহান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন, আটঘরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন খান, দেবোত্তর কবি বন্দে আলী মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহতাব উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা খাতুন নিলা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা সহ ৮০ জন এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন।
স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা
পাবনা প্রতিনিধি :: ১৮ এপ্রিল ১৯৭১ সালে বিদেশের মাটিতে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খঁচিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে ভাঙ্গুড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেমিনার কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এম হোসেন আলী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন মাস্টারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর কে এম তরিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার আশরাফুল ইসলাম মন্ডল। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা,সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধা এম হোসেন আলী ভারতের কলকাতায় পাকিস্থান দূতাবাসে ডেপুটি হাই কমিশনার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে বাংলাদেশের বিপ্লবী সরকার শপথ গ্রহণের পরের দিন ১৮ এপ্রিল এম হোসেন আলী তার মিশনের ৬৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ পাকিস্থান পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের আনুগত্য ঘোষনা করেন। সেই সঙ্গে তিনি দূতাবাস ভবনের শীর্ষ থেকে পাকিস্থানের পতাকা নামিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ান।
মরহুম হোসেন আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সত্যিকারের দেশ প্রেমিক ছিলেন (সূত্রঃ বাংলাদেশ গেজেট জানুয়ারি ৬,১৯৮১)। তিনি ১৯২৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পার-ভাঙ্গৃড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালের ২ জানুয়ারি কানাডার অটোয়াতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।