শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » মেয়েকে ধর্ষণের ভিডিও বাবাকে দেখিয়ে ধর্ষকের হুমকী : ধর্ষিতার আত্মহত্যার চেষ্টা
মেয়েকে ধর্ষণের ভিডিও বাবাকে দেখিয়ে ধর্ষকের হুমকী : ধর্ষিতার আত্মহত্যার চেষ্টা
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কালাইপাড়-জালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৪)কে ধর্ষণের পর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে শেষে ধর্ষিতার বাবাকে ভিডিও দেখিয়ে চুপ থাকতে বলে অভিযোগ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ধর্ষক। এ ঘটনার পর ওই স্কুলছাত্রী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তাকে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ধর্ষিতার পরিবার, এলাকাবাসী ও গফরগাঁও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গফরগাঁও উপজেলার ছয়বাড়িয়া গ্রামের দরিদ্র রিক্সা চালকের কন্যা ওই স্কুলছাত্রীকে একই গ্রামের জুয়েল মাঝির বখাটে ছেলে হৃদয় (২৩) বাড়িতে এক পেয়ে ধর্ষণ করে এবং তার বন্ধুদের সহযোগিতায় ধর্ষণের ভিডিও করে। এই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে এই স্কুল ছাত্রীকে আরও বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে বখাটে হৃদয়।
একপর্যায়ে জিম্মি হয়ে স্কুলছাত্রী তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানালে হৃদয় ও তার সহযোগীরা স্কুলছাত্রীর বাবাকে ভিডিও দেখিয়ে চুপ থাকতে বলে এবং এ নিয়ে কোন জায়গায় অভিযোগ করলে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ফেরত দেওয়ার কথা বলে হৃদয় তার বন্ধু রাসেলসহ তিন যুবক ওই স্কুলছাত্রীকে ছয়বাড়িয়া গ্রামের আতকা বিলে নির্জন স্থানে নিয়ে ফের ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় স্কুলছাত্রীর চিৎকারে গ্রামের এক কৃষক এগিয়ে আসলে ধর্ষক হৃদয় ও তার বন্ধুরা স্কুলছাত্রীকে ফেলে পালিয়ে যায়।
ঘটনার শিকার স্কুলছাত্রী জানায়, ‘ধর্ষণ করতে না পেরে হৃদয় ও তার সহযোগীরা তাকে বেধড়ক মারপিট করেছে।
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ওই স্কুলছাত্রী বাড়িতে ফিরে ইদুর মারার বিষ পান করে। বিষয়টি বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাকে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ময়মনাসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু স্কুলছাত্রীর দরিদ্র্র বাবা চিকিৎসার ব্যয় বহনে অক্ষম হওয়ায় স্কুলছাত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
পরে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে গফরগাঁওয়ের রাওনা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুল আলম স্কুলছাত্রীর চিকিৎসার ব্যয়ভারের ব্যবস্থা করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, আমরা দরিদ্র ও অসহায় মানুষ। আমার মেয়েকে যারা ধর্ষণ করেছে ও ধর্ষণে সহযোগিতা করেছে তাদের বিচার চাই।
রাওনা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুর আলম এ জঘন্য ঘটনার বিচার দাবী করে বলেন, বিষয়টি গফরগাঁও থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ খান বলেন, এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশি অভিযানও চালানো হচ্ছে।