শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে মেলার নামে লটারি বাণিজ্য
বিশ্বনাথে মেলার নামে লটারি বাণিজ্য
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ শহরে চলছে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলা। এতে র্যাফেল ড্রর নামে চলছে লটারি-বাণিজ্য। লটারির টিকিট শুধু মেলা প্রাঙ্গণে নয়, উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারেও বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা অটোরিকশা ও সিএনজিতে মাইকিং করে এসব লটারির টিকিট বিক্রি করা হয়।
পুরস্কারের লোভে লটারির ফাঁদে পড়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন রিকশা-ভ্যানচালক, নির্মাণশ্রমিক ও দিনমজুরের মতো শ্রমজীবি মানুষ। এমনকি স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও কিনছে লটারির টিকিট। প্রশাসনের নাকের ডগায় লটারি বিক্রি হলেও রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকায় রয়েছে তারা।
এ নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে।
জানা যায়, গত ২৮ মার্চ শাপলা মহিলা সমিতি (শামউস)’র উদ্যোগে মাসব্যপী বহুজাতিক বস্ত্র ও পণ্য মেলার আয়োজন করা হয়। সমিতির সভাপতি হাসনা হেনা খানম’র সভাপতিত্বে বিশ্বনাথ নতুনবাজার এলাকায় মেলার উদ্ভোধন করেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক, সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী।
সরজমিন মেলায় গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের বিনোদনের জন্যে রয়েছে নাগরদোলা, ট্রেন ও দোলনা নৌকা। রয়েছে নামমাত্র বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর কয়েকটি দোকান। মেলা শুরুর ১৭ দিন পর হঠাৎ করেই গত ১৪ এপ্রিল শুরু হয় লটারি বিক্রি। সূত্র জানায়, সকাল থেকে রাত ৯ টায় ড্র’র আগ পর্যন্ত চলে টিকিট বিক্রি। ২০ টাকা মূল্যের প্রতিটি টিকিট। প্রতিদিন অন্তত লক্ষাধিক টিকিট বিক্রি হয়।
রাত ১০টায় শুরু হয় র্যাফেল ‘ড্র’। পুরস্কার দেয়া হয় মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ ৪১টি পুরস্কার। ড্র অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয় স্থানীয় কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। এতে পুরস্কার বিজয়ের খবর পৌঁছে যায় ঘরে ঘরে। পরের দিন রমরমা বাণিজ্য হয় টিকিটের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক নেতা বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন, কতিপয় নেতা ও সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করেই এই কর্মকান্ড চালানো হচ্ছে। এ জন্যই কেউই এর বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। গুটি কয়েক লোক নামমাত্র পুরস্কার পেলেও, আয়োজকেরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নিঃস্ব হচ্ছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। লটারির নেশায় ঝুকছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। এটা বন্ধ করা উচিত। ’
মেলার আয়োজক সমিতি (শামউস)’র সভাপতি হাসনা হেনা খানম বলেন, আমি অসুস্থ
থাকায়, আমার অনুপস্থিতিতে যাকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম পরিচালনার সে এ কাজটি করেছে। বিষয়টি জানার পর লটারি বন্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, শুধু মেলার অনুমতি আছে। র্যাফেল ড্র’র অনুমতি নেই। এটি বন্ধ করতে পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে।