সোমবার ● ২২ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ভালুকায় পুকুর খননের সময় মাটির নীচ থেকে ২৬ কেজি ওজনের কষ্টি পাথরের ত্রিমূর্তি উদ্ধার
ভালুকায় পুকুর খননের সময় মাটির নীচ থেকে ২৬ কেজি ওজনের কষ্টি পাথরের ত্রিমূর্তি উদ্ধার
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ::ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার পাড়াগাঁও গুচ্ছ গ্রামের সরকারি পুকুরের মাটি কাটার সময় পুকুর থেকে ২৬ কেজি ওজনের কষ্টি পাথরের একটি ত্রিমূর্তি উদ্ধার করেছে স্থানীয় জনতা। মাটি কেটে খনন করার সময় পুকুরের মাঝখানের ১০-১২ ফুট নিচ থেকে উদ্ধারকৃত কষ্টিপাথরের মূর্তিটি ৫০০ বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ সোমবার ২২ এপ্রিল ওই মূর্তি উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রোমেন শর্মা জানান, হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বাচ্চু এ বিষয়টি জানানোর পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে কষ্টি পাথরের মূর্তিটি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান, উদ্ধারকৃত মূর্তির দৈর্ঘ্য অনুমানিক দুই ফুট, প্রস্থ এক ফুট, ওজন ২৬ কেজি। উদ্ধারের পর মূতিটি কী পাথরের পরীক্ষা করার জন্য রোববার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পুলিশ প্রহরায় ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মূর্তিটিকে জেলা প্রশাসকের (রাষ্ট্রীয়) কোষাধারে জমা রাখা হবে।
তিনি বলেন, রোববার (২১ এপ্রিল) উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে কার্যাদেশ নিয়ে উপজেলার পাড়াগাঁওয়ে যান আবদুস ছামাদ, আবদুল আলীম ও স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ীরা।
তারা মজলিশ পাড়াগাঁও মৌজার ৫৩৮নং দাগের ৪ একর ২১ শতাংশ জমির ওপর গুচ্ছগ্রামের পুকুরটি মাছ চাষের জন্য ভ্যাকু দিয়ে পুনঃখনন কাজ শুরু করেন।
রোববার (২১ এপ্রিল) খনন করতে গিয়ে পুকুরের মাঝখানের ১০-১২ ফুট নিচ থেকে কষ্টিপাথরের মূর্তিটি উদ্ধার করা হয়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মূর্তিটি এক নজর দেখার জন্য বিভিন্ন গ্রাম থেকে হাজার হাজার লোকজন ভিড় জমান।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল রোববার দুপুরে ভেকু দিয়ে সরকারি ওই পুকুরের মাটি কাটার সময় মূর্তিটি দেখে স্থানীয় গুচ্ছ গ্রামের ইউপি সদস্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে খবর দেয়।
পরে হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বাচ্চু খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ড রোমেন শর্মা ও ভালুকা মডেল থানায় ফোন করলে তারা উপস্থিত হয়ে কষ্টি পাথরের মূর্তিটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
হবিরবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ বাচ্চু জানান, প্রায় হাজার বছরের পুরনো এই পুকুরটি খনন কাজ চলছিল। খবর পেয়ে আমি উপস্থিত হয়ে প্রশাসনকে জানাই। তারা এসে মূর্তিটি উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভালুকা পাড়াগাঁও মৌজার গুচ্ছ গ্রামের এ জমিটি খাস খতিয়ানভুক্ত। জমিটি তৎকালীন মুক্তাগাছার জমিদার রঘুনাথ বাবুর জমিদারি স্টেট ছিল। জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের পর সেটি খাস খতিয়ানভুক্ত হিসেবে রেকর্ড হয়। বর্তমানে পুকুরটির চারপাশে গুচ্ছ গ্রামে ৩০টি পরিবার বসবাস করে। পুকুরটিতে ৮ একর সরকারি জমি রয়েছে।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা আবদুল আলীম জানান, ছোটবেলায় দেখতাম ভয়ে পুরনো ওই পুকুরে কেউ নামতো না। মাছ চাষের জন্য পুকুরটি খনন করার সময় মাটির নিচ থেকে মূর্তিটি পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মূর্তিটি ৫০০ বছরের পুরনো হবে, তবে মূর্তিটির মূল্য কত হতে পারে তা কেউ বলতে পারে না।’