মঙ্গলবার ● ২৩ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » শ্রীলংঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে জামাত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া
শ্রীলংঙ্কায় সিরিজ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে জামাত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া
শ্রীলংঙ্কার গির্জা ও অভিজাত হোটেলে সিরিজ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে জামাত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া নামক একটি সংগঠন। সৌদি আরবের আল-আরাবিয়্যা চ্যানেলের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস। সংগঠনটি শ্রীলংকা ভিত্তিক বলে জানা গেছে।
দায় স্বীকার সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য জানায়নি আল-আরাবিয়া। এর আগে সংগঠনটির নাম ন্যাশনাল তৌহিদ জামাত বা এনটিজে বলে জানা গিয়েছিলো। ধারণা করা হচ্ছে, জামাত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া এনটিজের কোন গ্রুপ হতে পারে।
রবিবার শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডের প্রার্থনার সময় গির্জা, অভিজাত হোটেল ও কলম্বোর পার্শ্ববর্তী এলাকার মোট আট জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়।
হামলাটি কোচকিকাদে, কাতুয়াপিটিয়া ও বাট্টিকালোয়া নামক স্থানের তিনটি গির্জায় চালানো হয়। এছাড়া দেশটির রাজধানীর অভিজাত তিনটি হোটেল সাংগ্রি লা, দ্য কিন্নামোন এবং কিংসবারি হোটেলেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রথম বিস্ফোরণটি কলম্বোর সেন্ট এন্থনি চার্চ ও কাতুয়াপিটিয়ার সেন্ট সেবাস্থিয়ান চার্চে ঘটে।
শ্রীলঙ্কায় কয়েকটি চার্চ ও হোটেলে একযোগে চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২১ জনের দাঁড়িয়েছে।
কলম্বো পুলিশের মুখপাত্র রাবন গুসাসেকারা মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানান,গত রোববার ওই হামলায় আহত পাঁচ শতাধিক মানুষের মধ্যে বেশ কয়েকজন হাসপাতালে মারা গেছেন।
এই তথ্য যখন এল, তখন হতাহতদের স্মরণে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে শ্রীলঙ্কা।
চ্যানেল নিউজ এশিয়ার খবরে বলা হয়, তিন মিনিট নীরবতার মধ্য দিয়ে সকালে ভারত মহাসগারের এই দ্বীপ দেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালনের কার্যক্রম শুরু হয়।
পুরো দেশে সব সরকারি-আধা সরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা রাখা হয় অর্ধনমিত। বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত নেগম্বোর সেইন্ট সেবাস্টিয়ানের গির্জায় শেষকৃত্য শেষে নিহতদের কয়েকজনকে শোয়ানো হয় গণকবরে।
তিন মিনিট নীরবতা পালনেরর ওই কর্মসূচি শুরু হয় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে। দুই দিন আগে ঠিক ওই সময়েই ইস্টার সানডের প্রার্থনা চলাকালে তিনটি গির্জা ও তিনটি পাঁচ তারা হোটেলে মোট ছয়টি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
কলম্বোর একটি গির্জা ও তিনটি পাঁচ তারা হোটেল, নিকটবর্তী নেগম্বো শহরের একটি গির্জায় ও দেশের অন্য প্রান্তে বাত্তিকোলার একটি গির্জায় হামলাগুলো চালানো হয়।
এর পাঁচ ঘণ্টা পর কলম্বোর দক্ষিণাংশের দেহিওয়ালায় জাতীয় চিড়িয়াখানার কাছে ছোট একটি হোটেলে সপ্তম বিস্ফোরণটি ঘটে। এতে দুই জন নিহত হন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বিকালে পুলিশের অভিযান চলাকালে কলম্বোর দেমাটাগোদা এলাকায় আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটে, এতে তিন পুলিশ নিহত হন।
প্রথম ছয়টি হামলায় কোথায় কতোজন নিহত হয়েছেন কর্তৃপক্ষ তা প্রকাশ করেনি। অন্তত সাত জন আত্মঘাতী এসব হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হতাহতের অধিকাংশই শ্রীলঙ্কান। তবে নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন বিদেশি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে অন্তত আট জন ভারতীয়, আট ব্রিটিশ, তিন ডেনিশ, দুই তুর্কি, দুই অস্ট্রেলীয়, এক চীনা, এক বাংলাদেশি এবং যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ড ও পতুর্গালের নাগরিকরা রয়েছেন।
এক দশক আগে বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগাররা উৎখাত হওয়ার পর এমন ভয়াবহ হামলা আর দেখা যায়নি শ্রীলঙ্কায়। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মধ্যরাত থেকে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে ভারত লাগোয়া দ্বীপরাষ্ট্রটিতে।