সোমবার ● ২৯ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » এবার সেই প্রধান শিক্ষিকার অপসারণের দাবীতে স্কুলে তালা
এবার সেই প্রধান শিক্ষিকার অপসারণের দাবীতে স্কুলে তালা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা ও দুর্ণীতির অভিযোগে উত্থাপিত হওয়ায় অপসারণের দাবীতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ। গতকাল রবিবার বিকালে প্রধান শিক্ষিকা দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দারকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষক-কর্মচারী এক সভা আহবান করে প্রধান শিক্ষিকাকে প্রতিরোধের ঘোষনা দেন। ক্ষুদ্ধ শিক্ষক কর্মচারীরা প্রধান শিক্ষিকাসহ সকল শ্রেণী কক্ষ, ল্যাব ও অন্যান্য কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের ঘোষনা সংক্রান্ত নোটিশে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়কে বাঁচানো ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রধান শিক্ষিকাকে অপসারন করতে হবে। ফলে আর্থিক দুর্ণীতি, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্রীদের সাথে সর্বদা দুর্ব্যবহার, চাকুরী থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের অপসরণের হুমকি, বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা না মানাসহ ফৌজদারী মামলার আসামী হওয়ায় প্রধান শিক্ষিকা দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার কে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হলো। এ ব্যাপারে শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আহবায়ক তৈয়বুর রহমান খান জানান, আমি কোন ঝামেলাতে জড়াতে চাই না, বারবার মিমাংসা করে দেয়া হচ্ছে তবুও পরক্ষনেই নানা ঘটনা ঘটছে। ইতিপুর্বে প্রধান শিক্ষিকাকে মারধরসহ তার অপসারণের দাবীতে রাস্তায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন শিক্ষক কর্মচারীরা। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের ৩ সিনিয়র সাংবাদিকের ছবি বিকৃতি করে ফেসবুকে শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দিলারা ইয়াসমিন জোয়ার্দ্দার কুরুচিপুর্ন পোষ্ট দেন। এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শৈলকুপার সাংবাদিক শামিম বিন সাত্তার মামলা করেন। মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আবার জামিন নেন।
শৈলকুপায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা : রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের আশংকা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষতি সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। তফসিল ঘোষনার মাধ্যমে ত্রিবেনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের তারিখ আগামী ১৩ মে ঘোষনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কাজ সম্পন্ন করেছেন প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমেদ খান। এ নির্বাচন স্থগিত রাখতে রিটার্নিং কর্মকতার কাছে দেয়া একাধিক লিখিত দরখাস্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ত্রিবেনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হক খানের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ আধিপত্যের লড়াই চলে আসছে। গেল উপজেলা নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে গাছের ডাল অপসারনকে কেন্দ্র করে একটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। হত্যাকান্ডকে পুজি করে এক গ্রুপ আধিপত্য বিস্তার ও হামলা লুটপাটে সফল হতে না পেরে নতুন পথ খুঁজছে। সূত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে ত্রিবেনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে উভয় গ্রুপের কর্মী সমর্থকদের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেই সাথে সামাজিক আধিপত্য বিস্তারের স্নায়ুযুদ্ধ তো আছেই। ইউনিয়নকে উত্তপ্ত করতে ও রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে এক গ্রুপ প্রতিশোধ পরায়ন ভূমিকা নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির কর্ণধারদের সাথে নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সংঘর্ষ ও পুনরায় হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ইউনিয়নকে অশান্ত করতে তারা কলকাটি নাড়ছে বলে অপর গ্রুপের অভিযোগ। ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ রাখতে শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনকে ইস্যূ করে সংঘর্ষসহ বড় ধরনের ঝামেলা হতে পারে বলে তাদের আশংকা। এ নির্বাচনকে ঘিরে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষসহ আবারো হত্যাকান্ডের মত বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এমন তথ্য আছে বলে জানা গেছে। প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে ত্রিবেনী গ্রামের অনেক অভিভাবক স্কুলটিকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে নির্বাচন সাময়িক ২স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বলে জানা গেছে। ত্রিবেনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ইস্যূ করে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তাই তারা নির্বাচন সাময়িক স্থগিত রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত দরখাস্ত দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ উসমান গনি জানান, লিখিত দরখাস্তগুলোর তদন্ত চলমান রয়েছে। দ্রতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কে সোহাগ পরিবহনের ধাক্কায় নিহত-২
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার পৃথক সড়ক র্দুঘটনায় দুই জন নিহত হয়েছেন। শ্রীরামপুর নামক স্থানে বাসের ধাক্কায় সরওয়ার হোসেন (৫০) নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী ও মদনডাঙ্গা এলাকায় বাসচাপায় ইয়াসিন (২৮) নামে এক যুবক নিহত হন। নিহত সরোয়ার হোসেনের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর এলাকায়। এছাড়া ইয়াসিন চরপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। শৈলকুপা ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার আক্কাচ আলী জানান, সকালে সরোয়ার নামে এক ব্যবসায়ী সাইকেল নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময় পাবনা থেকে কুয়াকাটাগামী সোহাগ পরিবহনের একটি বাস তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বাসটিকে আটক করলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। অন্যদিক শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুুবুর রহমান জানান, ঝিনাইদহ থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস কুষ্টিয়ায় যাচ্ছিল। বাসটি মদনডাঙ্গা এলাকায় পৌঁছালে ইয়াসিন আলীকে চাপা দেয়। এতে ইয়াসিন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বছর ঘুরে আবারও ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে কালীগঞ্জের তালপাখা কারিগর
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের হাত পাখা তৈরির কারিগরদের যেন বাতাস খাওয়ার সময় নেই। গরমে মানুষকে একটু শান্তির পরশ দিতে দিন রাত পরিশ্রম করে তৈরি করছে কালীগঞ্জের তালপাখা কারিগররা। পূর্ব পুরুষের ব্যবসা করে এখনো সংসার চালাচ্ছে কালীগঞ্জ প্রায় অর্ধশত পরিবার। গরম শুরুর সাথে সাথে তাদের কাজ বেড়ে গেছে।তাল পাখা তৈরি তাদের পেশা ও বানিজ্যিক ভিত্তিতে করে থাকে। এদের কোন জমি নাই যে মাঠে কৃষি ফসল চাষ করবে। এদের প্রধান পেশা পাখা তৈরি একমাত্র পেশা। প্রচন্ড গরমে তাই বসে নেই, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাখা তৈরি করছে। ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার দুলালমুন্দিয়া, পারিয়াট, চাচড়া, এলাকা ঘুরে পাখা তৈরিকারিরা বলেন, গরম পড়লেই পাখা পল্লীর কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। যেন কথা বলার সময় তাদের নেই। শরীর দিয়ে নোনতা পানি বের হলেও নিজেরা পাখা দিয়ে বাতাস খাওয়ার সময় নেই তাদের। কেউ বা পাতা কেটে সাইজ করছে, কেউ সেলাই করছে আবার কেউ বা পাখা তৈরি করেছে কেউ আবার প্রস্তুত হওয়া পাখা গুলো বিক্রির জন্য বোঝা বাধছে। পাখা তৈরিকারি আবদুল গফুর বলেন, তাদের পূর্ব পুরুষরা এই তালপাখা তৈরি করে জীবন জীবিকা চালাতো। ফলে তারাও পূর্ব পুরুষের কাজটি ধরে রেখেছেন। তিনি জানান,কালীগঞ্জে প্রায় ২ শতাধিক পরিবার পাখা তৈরির কাজ করে থাকেন। কুষ্টিয়া থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ি আনোয়ার হোসেন জানান, কালীগঞ্জের তালপাখা এলাকার ক্রেতাদের কাছে রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। প্রতিটি বাড়িতে পাখা তৈরি কাজে এত ব্যাস্ত যে কার ও কথা বলার সময় নেই। কাজের চাপে অনেকে সকালে ভাত খায় আর রাতে খায়। কাজের চাপের কারণে তারা ভাত খাবার পর্যন্ত সময় পায় না। পাখা করিগর নজরুল ইসলাম জানান, পাখা তৈরির প্রধান উপকরণ তালপাতা সংগ্রহ করা হয় শীতকালে। মাগুরা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী এলাকা থেকে তারা পাতা সংগ্রহ করে। এই তালপাতা এনে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। তারপর পাতা ভিজে নরম হয়ে গেলে পানি থেকে উঠিয়ে তা কেটে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটা পাতায় দুটো পাখা হয়। এই পাতা পুনরায় বেঁধে রাখা হয়। এভাবে রাখার পর গরমের মৌসুম আসার সাথে সাথে সেগুলো আবার পানিতে ভিজতে দেয়া হয়। এ বছর তাল পাখার কদর অনেক টা বেশি বলে তারা জানায়। পানিতে দেবার পর পাতা নরম হয়ে গেলে শুরু হয় মূল পাখা তৈরীর কাজ। সাধারণত পরিবারের বড়’রা পানিতে ভিজে নরম হয়ে যাওয়া পাতা ছাড়িয়ে পাখা আকৃতির করে চারিদিক কেটে সমান করে থাকে। আর বাড়ির মেয়েরা সেগুলো বাশের সলা দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরিবারের ছোট সদস্যরা এগুলো সুচ আর সুতা দিয়ে সেলাই করে থাকে। এভাবে ব্যবহারের উপযোগী একটি তালপাখা তৈরী হয়। বাড়ির ছেলে, মেয়ে, শিশুরা ও গৃহবধুরা সবাই মিলে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত পাখা তৈরির কাজে ব্যাস্ত থাকেন। গৃহবধুরা জানায়, তারা প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দু, বেলার খাবার রান্না করে রাখে। দুপুরে গৃহবধুরা কেউ রান্না করে না। তারা সকাল ও রাতে রান্না করে। নজরুল আরো জানান, তাদের তৈরিকৃত পাখা পাইকারী ও খুচরা বিক্রি করা হয়। এখান থেকে পাইকাররা প্রতিপিস পাখা ১২/১৫ টাকা দরে ক্রয় করে নিয়ে খুচরা ২০/২২ টাকায় বিক্রি করে। মুলত পাখা ব্যবসা থাকে গরমের ৩/৪ মাস। কালীগঞ্জের পাখা বিশেষ করে কুষ্টিয়া, মাগুরা, রাজশাহি, নাটোর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়িরা এসে পাইকারি দরে পাখা কিনে নিয়ে যায়। কালীগঞ্জ উপজেলায় এরা খুচরা ও বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়িদের কাছে পাইকারি হিসাবে বিক্রি করে থাকে। কিন্তু এরা সবার তালপাখার বাতাস খাওয়ানোর জন্য পাখা তৈরি করে অথচ নিজেরা কোন সময় পাখার বাতাশ খায় না। এই প্রচন্ড গরমে বাড়ির ছোট বড়, পুরুষ, মহিলা কেউ বসে নেই। বর্তমানে তাল পাখার ডিমানড প্রচন্ড ভাবে বেড়েছে। পাইকারি ব্যবসায়িরা এস পাখা তৈরি কারিদের কদর করছে, কিন্তু পাখা পল্লিতে দেখা গেছে তারা পাখা দিয়ে পারছে না। বিশেষ করে কুষ্টিয়া ও রাজশাহি ব্যবসায়িরা অনেকে বসে থেকে পাথা নিয়ে যাচ্চে। ব্যবসায়িরা বলছেন, তাল পাখার কদর ও অনেক বেড়েছে। প্রতিদিন বাড়ির মহিলা ও পুরুষেরা সকাল থেকে রাত ১২/১ টা পর্যন্ত পাখা তৈরি করছে। মহিলারা সকালে রান্না করে রাখে তা আবার সকাল বিকাল ২ বার খায়। আর রাতে রান্না করে ও পুরুষরা কেউ কাঁচা বাজার করতে যায়। কোলা ইউনিয়নের পারিয়াট গ্রামের সলেমত মালিথার ছেলে আবদুর রাজ্জাক জানান, তাঁদের পরিবার ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে পাখা তৈরি করছে। এ ছাড়া তাঁদের গ্রামের শতাধিক পরিবার এ পেশায় জড়িত। ওই সব বাড়ির বয়স্ক নারী-পুরুষের পাশাপাশি ছোট ছেলে-মেয়েরাও পাখা তৈরি করতে পারে। আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বলেন, ‘পাখা তৈরি করতে রং, সুতা, বাঁশ, কঞ্চি ও তালপাতার প্রয়োজন হয়। একটি তালপাতা পাঁচ টাকা দরে কিনে আনি। আর যারা পাখা সেলাইয়ের কাজ করে, তারা পাখাপ্রতি এক টাকা করে পায়। সব মিলিয়ে একটি পাখা তৈরিতে আট টাকার বেশি খরচ হয়।’ পরে পাখা গুলো ১০ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। একজন কারিগর প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি তালপাখা তৈরি করতে পারে। রায়গ্রাম ইউনিয়নের দুলালমুন্দিয়া গ্রামের আবদুল বারিক, নুর আলীসহ অনেকে জানায়, তাদের পূর্বপুরুষেরা এই পাখা তৈরির কাজ করত। পূর্বপুরুষদের পেশাটাকে ধরে রাখার জন্য এখনো তারা পাখা তৈরির কাজ করছে। কালীগঞ্জের দুলালমুন্দিয়ার ৫০টি পরিবার ও পারিয়াট গ্রামের শতাধিক পরিবার তালপাখা তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।
ঝিনাইদহে মাদক ব্যবসায়ীদের নানা প্রকার অপকর্মে অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানায়, কেশবপুর গ্রামের জামাল, সাইদুল, মামুন, সাহেব আলী, রাজা, বাবলু, জিন্না, ইউনুচ, আকাশ, কেরামত, নাছিরসহ বেশ কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যাবসাসহ নানা প্রকার অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় ইসরাইল খা নামের এক ব্যাক্তি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। তবুও আসামীরা এলাকায় সুযোগ বুঝে সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে হয়রানি করে চলেছে। মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে আসামীরা গত ১৯ এপ্রিল রাত অনুমান ৯ ঘটিকার সময় কেশবপুর গ্রামের মামুনের বাড়িতে মাদক বেচাকেনা করছিল। এ সময় ওই গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা আফজাল খাঁ, ইয়ামিন খা ও রেজাউল ইসলাম মালিথা মাদক ব্যাবসার কাজে বাধা দিলে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে খুন জখমের ভয়ভীতি দেখায়। পর দির রাতে উক্ত ব্যাক্তিরা মোটর সাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন, পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা মাদক ব্যবসায়ীরা কেশবপুর গ্রামের হাজরাপাড়া নামক স্থানে মুরাদ আলীর বাড়ির সামনে পৌছালে ইয়ামিন খাঁ ও রেজাউল ইসলাম মালিথাকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। বর্তমানে তারা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানায় ইসরাইল খা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সম্বিত রায় জানান, আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তারা বাড়ি ছেড়ে অন্যাত্র পালিয়েছে। এ ব্যাপারে মাহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কেশবপুর এলাকায় একটি মাদক ব্যাবসায়ী চক্র সক্রিয় ছিল। তাদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এদের অত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তিনি আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
হরিণাকুন্ডু থানার মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যানের ভাই বুলুকে হাতুড়িপেটা
ঝিনাইদহ :: মাত্র এক শতক জমি নিয়ে বিরোধ। মিমাংশার জন্য শনিবার রাতে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু থানায় হাজির হয়েছিল হরিণাকুন্ডু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ বুলু। থানার গোল ঘরে চলছিল শালিস দরবার। উভয়ই সমর্থকরা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী। আগে থেকেই হাতুড়ি, দা লাঠিসোটা নিয়ে হাজির ছিল আওয়ামীলীগের হরিণাকুন্ডু পৌর মেয়র রিন্টুর সমর্থক পারফলসী গ্রামের মনোয়ার, আনোয়ার, ছব্দুল, সহিদুল (বুড়ো), নুর আলী, আফিল উদ্দীন, আয়ুব, আহমান ও মুবিন। মধ্যস্থতায় ছিলেন হরিণাকুন্ডু থানার দারোগা সরোয়ার। শালিস চলার এক পর্যায়ে হঠাৎ হামলা। হাতুড়ি আর দা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে ভাইস চেয়ারম্যানের ছোট ভাই মামুনুর রশিদ বুলুর উপর। রক্তাক্ত জখম হয় বুলু। দ্রুত তাকে ভর্তি করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। ওই সময় ভাইস চেয়ারম্যানের সমর্থক সাইদুল, বিল্লাল, লালূ, সাকিব, হাবিল ও সিরাজুল ইসলামও কম বেশি আহত হন। খবর পেয়ে হরিণাকুন্ডুর নবাগত উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন দেখতে হাসপাতালে উপস্থিত হন। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ড থানা পুলিশের কে মুখ খোলেনি। তবে এসআই সরোয়ার বলেন ঘটনাটি অনাকাংখিত। এর জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।