সোমবার ● ৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিয়ে ভোটাররা উচ্ছ্বসিত,ত্রিশালে প্রিজাডাইং অফিসার গ্রেফতার
প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিয়ে ভোটাররা উচ্ছ্বসিত,ত্রিশালে প্রিজাডাইং অফিসার গ্রেফতার
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক)নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিয়ে ভোটাররা উচ্ছ্বসিত।আর ত্রিশাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে সিল থাকায় প্রিজাইডিং অফিসার ফয়জুর রহমানকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি ওই কেন্দ্র্রে ভোট গ্রহন স্থগিত করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্রে সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে শত শত উৎসুক ভোটারকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। সেইসাথে ভোট দান পদ্ধতিতে নতুন যন্ত্র দেখতে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহও কম ছিল না। পরিচ্ছন্ন পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে কেন্দ্র্র থেকে হাসি মুখে বের হচ্ছেন উচ্ছ্বসিত ভোটাররা। ভোট দেয়া নিয়ে কোনো রকম ঝামেলা না হওয়ায় রীতিমতো ইভিএম পদ্ধতির প্রতি মজেছেন সাধারণ ভোটাররা। নগরীর রাঁধাসুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও মৃত্যুঞ্জয়ী স্কুলসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্র্র ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
পঞ্চাশ বছরের গোবিন্দ দে তার স্ত্রী আলপনা দে (৩৫)কে সাথে নিয়ে রোববার সকালে নগরীর রাঁধাসুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে বের হয়ে উচ্ছ্বসিত গোবিন্দ বলেন, হাতে সিল মারার চেয়ে এ পদ্ধতি অনেক সহজ। আবার এ পদ্ধতিতে ভোট দিতে সময়ও কম লেগেছে।
স্বামীর মতোই একই কথা জানালেন আলপনাও। তিনি বলেন, এতোদিন শুধুমাত্র ব্যালট পেপারেই ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা ছিল। প্রথম ইভিএমে ভোট দিতে পেরে ভালই লাগছে। সব ভোটেই এমন হওয়া উচিত।
২৮ নম্বর রাঁধাসুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার মোজাহিদুল হক জানান, এ কেন্দ্র্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৫৮৬ জন। সকাল থেকেই ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছে।
মৃত্যুঞ্জয় স্কুল কেন্দ্র্রে ভোট দিয়ে এসে মুক্তিযোদ্ধা জোবায়ের আহমেদ বলেন, ইভিএমে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। এজন্যও সকালেই ভোট দিতে চলে এসেছি। ফিঙ্গার প্রিন্টে তথ্য যাচাইয়ের পর ভোট দিতে সময় লাগেনি।
তবে স্থানীয়রা বলেন,সকাল ৮ টা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চললেও ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। তবে দুপুরের পর ভোটার উপস্থিতি আনেক বেড়েছে বলে মনে করছেন কাউন্সিলর প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে প্রথমবারের মতো মসিক নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আগেই নির্বাচিত হওয়ায় শুধু ৩৩টি সাধারণ এবং ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নতুন সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে ১২৭টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৮ জন ভোটার ভোট প্রদানের কথা রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫৮ এবং নারী ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৮০ জন। রোববার সকাল ৮টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলে।
জেলা রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আলীমুজ্জামান এ ব্যাপারে জানান, প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত সিটির এই নির্বাচনে সব ধরনের নিরাপত্তা বিধানে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়।প্রতিটি ভোট কেন্দ্র্রে ১০জন আনসার সদস্য ও তিনজন করে পুলিশ সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। পাশাপাশি নির্বাচনে ভোটগ্রহন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তায় ২২ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৩৩টি মোবাইল টিম (প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে), পুলিশের ৩৩টি মোবাইল টিম (প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে) ও ১১টি স্টাইকিং দল দায়িত্ব পালন করেন। সেইসাথে প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও তিনজন অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও নির্বাচনকালীন সকল ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে সাজা প্রদানে ১৬জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে ছিলো।
মসিক নির্বাচনে ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪২ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ছিলেন। মেয়র পদে কোনো প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু বিনাপ্রতিন্দ্বীতায় মেয়র নির্বাচিত হয়ে আছেন।
ত্রিশালে প্রিজাডাইং অফিসার গ্রেফতার, ভোট গ্রহন স্থগিত ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে সিল থাকায় প্রিজাইডিং অফিসার ফয়জুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেন্দ্র্রে ভোট গ্রহন স্থগিত করা হয়েছে।
রবিবার (০৫ মে) সকাল সাড়ে আটটার দিকে ত্রিশাল উপজেলার সানকিভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে এ ঘটনাটি ঘটে। গ্রেফতারকৃত প্রিজাডাইং অফিসার ফয়জুর রহমান ত্রিশাল উপজেলার সানকিভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ওই প্রিজাইডিং অফিসারকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে সানকিভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ভোট গ্রহন স্থগিত করা হয়েছে।
গফরগাঁওয়ে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যকে হত্যার অভিযোগ
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে দেলোয়ার হোসেন (৫৫) নামের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত দেলোয়ার হোসেন জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার জগন্নাথগঞ্জ ঘাট এলাকার দৌলতপুর গ্রামর মৃত মফিজউদ্দিন মন্ডলের ছেলে এবং সেনা সদস্য হিসেবে ল্যান্স কর্পোরাল হয়ে কর্মজীবন শেষ করে অবসরে ছিলেন।
রবিবার (০৫ মে) সকালে জিআরপি পুলিশ গফরগাঁও পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড সালটিয়া এলাকায় রেললাইন থেকে দেলোয়ার হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে জিআরপি পুলিশ।
এর আগে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে গফরগাঁও রেলওয়ে স্টেশন থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার দূরে পৌর শহরের শেষ সীমানায় সালটিয়া এলাকায় ফেলে দেওয়া হয় তাকে।রোববার সকালে রেললাইনের পাশে এলাকাবাসী লাশটি দেখতে পেয়ে গফরগাঁও জিআরপি ফাঁড়ি পুলিশকে খবর দেন। পরে সকাল ১১ টার দিকে জিঅরপি ফাঁড়ির পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। নিহতের পরনে লাল ও সাদা রঙের চেক গেঞ্জি এবং চেক লুঙ্গি রয়েছে। নিহতের গেঞ্জির পকেট থেকে একটি আইডি কার্ড উদ্ধার করে জিআরপি পুলিশ। আইডি কার্ডে নিহতের নাম মোঃ দেলোয়ার তার বাবার নাম মুত মফিজ উদ্দিন মন্ডল, মায়ের নাম নূরজাহান বেগম, বাড়ি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে। সেনাবাহিনীতে তার সর্বশেষ পদবী ল্যান্স কর্পোরাল। তিনি ১৯৮৫ সালের ১৮ মার্চ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ২০০০ সালের জুলাই মাসের ১৩ তারিখ অবসর গ্রহণ করেন।
গফরগাঁও রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে গফরগাঁও ফাঁড়ির জিআরপি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত ব্যক্তির গেঞ্জির পকেট থেকে উদ্ধার করা আইডি থেকে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
প্রসঙ্গত,ঢাকা-গফরগাঁও-ময়মনসিংহ রেলপথে গফরগাঁও এলাকায় একটি ছিনতাইকারী দলের নেতৃত্বে প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।