সোমবার ● ৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় একটানা ১৯ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ
গাইবান্ধায় একটানা ১৯ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: ফনি ঘুর্নিঝড়ের এতদঞ্চলে প্রভাব খুব কম হলেও এই অজুহাতে গাইবান্ধায় নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ¬াই কোম্পানী লিমিটেড (নেসকো) ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর আওতাধীন শহরের পূর্বাঞ্চলে একটানা ১৯ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। শুক্রবার ভোর ৪টা থেকে শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত একটানা এই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এদিকে শহরের পঞ্চিমাঞ্চলে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১২ ঘন্টা বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল। শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও জেলার গ্রাম অঞ্চলগুলোতে শুক্রবার ভোর ৪টায় বিদ্যুৎ বন্ধ হলেও রোববার ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়নি। ফলে এই দাবদাহে গাইবান্ধায় মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এতে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা শনিবার রাত ১০টায় নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ঘেরাও করে এবং সীমাহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদ জানায়। পরে পঞ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের সাথে পূর্বাঞ্চলের সংযোগের মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থায় রাতে এই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের কোথাও ফল্ট রয়েছে এ খবর লেখা পর্যন্ত বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ডিভিশন-১ তা খুঁজে বের করতে পারেননি।
প্রসঙ্গত উলে¬খ্য যে, গাইবান্ধায় চলমান তাপ প্রবাহে গাইবান্ধা জেলায় ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চল ডিভিশন-২ এর চাইতে পূর্বাঞ্চল ডিভিশন-১ এ রাতে ও দিনে এই বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত থাকছে। তদুপরি আকাশে মেঘ জমলে এবং সামান্য বৃষ্টি বাতাসেই গাইবান্ধায় বিদ্যুৎ উধাও হয়ে যায়। আবার সে বিদ্যুত আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও ১ ঘন্টা দু’ঘন্টা পর পর বিদ্যুৎ চলে যায়। আবার ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পরেই বিদ্যুৎ ফিরে আসে। দিন রাত ২৪ ঘন্টায় এ অবস্থা চলতে থাকে গড়ে কমপক্ষে ৬ থেকে ১২ বার।
দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নতি হলেও গাইবান্ধায় বিদ্যুতের কেন এই বেহাল অবস্থা আর কেনই বা ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় তার কোন সদত্তর গাইবান্ধা নেসকো কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি। তারা একটাই কথা সবসময় বলে থাকেন চাহিদার চাইতে গ্রিড লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাওয়া কারণে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের গাছপালা গ্রাহকরা কাটতে বাধা দেয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
গাইবান্ধা নেসকো সুত্রে জানা গেছে, জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৩৩ মেগাওয়াট হলেও সেখানে পলাশবাড়ির গ্রিড লাইন থেকে দিনে ২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে লোডশেডিং করে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের এই কারণ সম্পর্কে নেসকো সুত্রে ইতোপূর্বে বগুড়ায় গ্রিডলাইনে মেরামতের অজুহাতে গত ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত গাইবান্ধায় চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলা হলেও এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার কোন উন্নতি হয়নি।
কিশোরীকে অপরহরণের অপরাধে ১জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাবিরাট হাইস্কুলের ১২ বছরের কিশোরী ৬ষ্ঠ শ্রেণির (মোহসিনা আকতার মোহিনী) ছাত্রীকে কুপস্তাব দেয়া, উত্ত্যক্ত করা ও অপহরণের অভিযোগে রোববার একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া অপর তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। গাইবান্ধার নারী শিশু অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুর রহমান এই রায় প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাপড়াপাড়া গ্রামের আবু সামাদের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৩)। এছাড়া বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা একই গ্রামের সুলতান সরকার, আবু তালেব এবং পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার রানদিঘি গ্রামের জহুরুল ইসলাম।
মামলা বিবরণে জানা গেছে, আরিফুল ইসলাম উক্ত নাবালিকা কিশোরী ছাত্রীটিকে দীর্ঘদিন যাবত উত্যক্ত এবং কুপস্তাব দিয়ে আসছিল। এব্যাপারে মেয়ের পিতা বিষয়টি আসামির পিতা মাতা ও আত্মীয়স্বজনকে অবহিত করলেও তারা এব্যাপারে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উপরন্ত মেয়ের পিতা ও মেয়েটিকে তারা নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। এই ঘটনার জের ধরে ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় স্কুল ছুটির পর ছাত্রীটি বাড়ির ফেরার পথে গোমড়াদিঘি চাপড়াপাড়ার মাঝামাঝি রাস্তায় পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা একটি মাইক্রোতে করে আরিফুল ইসলাম অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় জোরপূর্বক ওই কিশোরীকে অপরহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মেয়ের পিতা মোখলেছার রহমান বাদি হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় ৪ জনকে আসামি করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে।