শুক্রবার ● ৮ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » কৃষি » রাঙামাটি থেকে মারিশ্যা যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী বাস উল্টে ৩৫ জন মারাত্মক আহত
রাঙামাটি থেকে মারিশ্যা যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী বাস উল্টে ৩৫ জন মারাত্মক আহত
ষ্টাফ রিপোর্টার :: শুক্রবার ৮ জানুয়ারী সকাল ১০টার দিকে রাঙামাটি পুরাতন বাস ষ্টেশন থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস মহসিন রোমান চট্টমেট্রো-চ-১৯৪৭ নাম্বারের গাড়িটি রাঙামাটি শহরের রেডিও সেন্টার এলাকায় পাহাড় উঠার পথে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে উল্টে যায়৷গাড়ীর চালক তপন দেব ও হেলপার পলাতক রয়েছে৷ দুর্ঘটনাস্থলে তত্ক্ষনিক খবর পেয়ে ছুটে যান রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন , সহকারী পুলিশ সুপার সদর সার্কেল চিত্ত রঞ্জন পাল, রাঙামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রশিদ,ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকারী দল ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রশাসনের কর্মকর্তারা৷ প্রশাসনের পৰ থেকে দুর্ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে৷ রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ৩৫ জনকে মারাত্মক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন৷ রাঙামাটি সদর হাসপাতালে জরম্নরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিত্সক ডাঃ শওকত আকবর, ডাঃ মংকেচিং ও জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ স্নেহ কানত্মি চাকমা জানান ৩৫ জনকে চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে এবং আশংকা জনক অবস্থায় ৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানানত্মর করা হয়েছে৷ তাৎক্ষনিকভাবে জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে এম্বুল্যান্স ভাড়া ১০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন। আহতরা হচ্ছে- সৈকত চাকমা (১৭), রোমেল চাকমা (১৫),জ্যোতিষ চাকমা (২২), রফিকুল ইসলাম (২৬), রবিউল হোসেন (২০), ত্রিপন চাকমা (২২),শুভ চাকমা (২৬), সুকুমার দেব (৪৬), যীশু বাবু (১০), রম্নবেল চাকমা (১৮) শফিকুল ইসলাম(২৪), রিকন ধর (১৫), নিপন চাকমা(১৮), সুমন চাকমা(২০), পূণ্য শশী চাকমা(৬০), মনজিল (২০), মুকুল বিশ্বাস (৬০), জামাল হোসেন (৫২), রিপন চাকমা(১৭), জ্ঞান লাল চাকমা (৩০), জনি সেন(২৫) জয়তী খীসা (১৮), জাপলিয়ন চাকমা ( ১৫), তপন বিশ্বাস (৩৫), মাটিনু মারমা (২৬), মং মারমা (৬০), চাইলাপ্রম্ন মারমা (৬০), মং মারমা (৩০), ভাগ্যজয় চাকমা (২০), মাইনু মারমা (৩০), উত্পল বড়ুয়া (১৩), অনিল বড়ুয়া (৭৭), মোহনজয় দেওয়ান (২০) রিকন চাকমা(১১), শফিকুল ইসলাম (৩৫) ও বিপলেশ্বর চাকমা(৩৫)৷
এদের মধ্যে জুলুখ্যে পাহাড়েরর সুকুমার দে , মানিকছড়ি বোধিপুরের ভাগ্যজয় চাকমা, নানিয়াচরের কেরেতছড়ির যীশুবাবু চাকমা, পুলিশ সদস্য বিপলেশ্বর চাকমা,কুরিগ্রামের শফিকুল ইসলামকে আশংকাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিত্সার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্রম্নত স্থানানত্মর করা হয়৷ যাত্রীবাহী লৰরযৰর বাসটির বয়স কমপৰে ৫০ বছর হবে৷ ব্যাপক জান মালের ৰয়ৰতি পার্বত্য জেলা রাঙামাটি পাহাড়ী পথে নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে৷ চট্টগ্রাম- রাঙামাটি- রাজস্থলী-কাপ্তাই-নানিয়ারচর-খাগড়াছড়ি-মারিশ্যা বাঘাইছড়ি-বান্দরবান সড়কে চলাচলের অযোগ্য যাত্রীবাহী বাসগুলি চলাচল করছে দীর্ঘদিন যাবত ৷ বাসে সীটগুলি দুর্গন্ধযুক্ত, গাদাগদি করে দুইজন বসলে পা রাখার জায়গা থাকেনা৷ এমন ধরনের ফিটনেস বিহীন যাত্রীবাহী বাসগুলো রাঙামাটি থেকে বিভিন্ন রোডে চলাচল করছে৷ প্রতিমাসে চট্টগ্রাম- রাঙামাটি সড়কে কমবেশী যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় মানুষ মৃত্যু বরন করছে৷ স্ত্রী হারাচ্ছে স্বামী, মা হারাচ্ছে ছেলে, ছেলে হারাচ্ছে পিতামাতাকে, এমনকি সংসারের উপার্জনকারী ব্যাক্তি বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরন করে চিরতরে নিভে যাচ্ছে সংসারের প্রদীপ৷ এর জন্য মূলত দায়ী চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মোটর যান মালিক সমিতির কতিপয় মুনাফা লোভী বাস মালিকরা৷ প্রতিবারই সড়ক দুর্ঘটনায় যাত্রীরা নিহত হন৷ মালিক পৰ মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ও স্থানীয় প্রশাসনকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বিষয়গুলি রফাদফা করেন৷মুলত চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের যাত্রীরা রাউজান বাস মালিকদের হাতে ৪৪ বছর যাবত্ জিম্মি হয়ে আছেন৷এর মূল কারণ হচ্ছে অতি মুনাফালোভী বাস মালিকদের কাছ থেকে স্থানীয় প্রশাসন যেকোন অনুষ্ঠানে নাম দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করা ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় প্রশ্রয়৷ চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে ফিটনেস বিহীন অনেক পুরাতন গাড়ী চলাচল করছে৷ গাড়ীগুলি কখনো পাহাড়ীকা সার্ভিস, দ্রম্নতযান সার্ভিস, বিরতিহীন সার্ভিস ও লোকাল সার্ভিস নাম দিয়ে একই গাড়ি মাস পরপর নাম বদল করে চলাচল করছে৷ এতে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা৷ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা মুলত পর্যটন নগরী, বিভিন্ন জেলার পর্যটকরা রাঙামাটি আসতে চাইলেও লৰরযৰর গাড়ীর কারণে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে চলে কঙ্বাজার, বান্দরবানও খাগড়াছড়িতে৷দীর্ঘদিন যাবত্ রাঙামাটি জেলায় বসবাসরত নাগরিকদের প্রাণের দাবি এই সড়কে বিলাসবহুল গাড়ী চলাচলের৷ কিন্তু চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মোটর যান মালিক সমিতির কাছে স্থানীয় জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আর্ম পুলিশ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ সরকারী বেসরকারী সংস্থা ও স্থানীয় জনগণ জিম্মি হয়ে আছে৷ এসব দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না৷
আপডেট : ৮ জানুয়ারী ২০১৬:বাংলাদেশ: সময়: বেলা ২.১০ মিঃ: