বৃহস্পতিবার ● ১৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » পাবনা » চাটমোহরে কলেজ অধ্যক্ষের হুমকিতে থানায় জিডি করলেন শিক্ষকরা
চাটমোহরে কলেজ অধ্যক্ষের হুমকিতে থানায় জিডি করলেন শিক্ষকরা
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :: পাবনার চাটমোহর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ৪১ জন শিক্ষক প্রাণনাশসহ বিভিন্ন প্রকার হুমকির অভিযোগে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের জন্য ১৪ মে মঙ্গলবার চাটমোহর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন। এ আবেদনে স্বাক্ষরকৃতদের পক্ষে কলেজটির ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক রাবেয়া সুলতানা চাটমোহর থানায় জিডি করেছেন (জিডি নং ৫১১)।
জিডি সূত্রে জানা গেছে, কিছু দিন পূর্বে কলেজটি জাতীয় করণ ঘোষণা হবার পর শিক্ষকদের পদ সৃজনের জন্য সম্প্রতি মন্ত্রনালয় কর্তৃক শিক্ষকদের তথ্য চাওয়া হলে তথ্য ছকে অধ্যক্ষের প্রত্যয়নপত্র, মন্তব্যে মিথ্যা তথ্য প্রদান, শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ না করাসহ অধ্যক্ষ সার্বিক অসহযোগিতা করলে গত ৯ মে এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেন ৫১ জন শিক্ষক শিক্ষিকা। জেলা প্রশাসককেও বিষয়টি জানান তারা। ইউএনও বরাবর এ আবেদন করায় ও জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জ্ঞাত করায় অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান ক্ষিপ্ত হন। তিনি ও তার ১১ সহযোগিসহ আরো কিছু লোকের দ্বারা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করায় এ ৪১ শিক্ষক নিরাপত্তা নিশ্চিতের আবেদন ও জিডি করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চাটমোহর সরকারী কলেজে শিক্ষকদের পদ সৃজনের জন্য মন্ত্রনালয় তথ্য চাইলে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান নির্ধারিত সময়ের শেষ প্রান্তে এসে শিক্ষকদের না জানিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করে প্রস্তুতকৃত তথ্য ছক মন্তব্য এবং প্রত্যয়নপত্র কলেজটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমারের নিকট জমা দেন। তথ্য ছকে দেয়া শিক্ষকদের তথ্য, প্রত্যয়ন পত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক আছে কিনা তা শিক্ষকদের দেখতে দেন না। অধ্যক্ষ তথ্য ছকে, মন্তব্যে, প্রত্যয়নপত্রে এবং সংযোজিত কাগজ পত্রে মিথ্যা তথ্য দিতে পারেন এমন আশংকায় কিছু সংখ্যক শিক্ষক জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে তারা জানতে পারেন অধ্যক্ষ অনেক শিক্ষক সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন। নিয়মিত উপস্থিত শিক্ষককে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত দেখিয়েছেন, বৈধ শিক্ষককে শিক্ষক তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন,অনেকের প্রত্যয়ন পত্রে স্বাক্ষর করেন নাই এবং ফাইলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করেন নাই। এমতাবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদনকারী ৫১ শিক্ষক শিক্ষিকা অধ্যক্ষের কর্মকান্ডে মর্মাহত, আশংকাগ্রস্থ ও সন্দিহান যে অধ্যক্ষ তাদের তথ্য ছক, মন্তব্য, প্রত্যয়ন পত্রে সঠিক তথ্য না দিয়ে রেজুলেশন এবং প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ফাইলে সংযুক্ত না করে শিক্ষকদের চাকুরীগত স্বার্থ ক্ষুন্ন ও সরকারি কাজে বাঁধা হতে পারেন। শিক্ষকরা তথ্য ছক, মন্তব্য, প্রতয়নপত্র ও নিজ নিজ ফাইল দেখার সুযোগ, মিথ্যে তথ্য পরিবেশন করা হলে তা সংশোধন এবং ব্যক্তিগত ভাবে সংরক্ষণের জন্য ফাইলের অভিন্ন অনুলিপি প্রত্যাশা করেন। একই সাথে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অধ্যক্ষ কর্তৃক হয়রানীমুক্ত থাকতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে থানা ভারপ্রাপ্ত সেখ নাসীর উদ্দিন বলেন, ৪১ জন শিক্ষক, অধ্যক্ষ ও তার ১১ জন সহযোগির বিরুদ্ধে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য আবেদন করেছেন এবং তাদের পক্ষে এক শিক্ষিকা স্বাক্ষর করে জিডি করেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরকার অসীম কুমার বলেন, ‘পদ সৃজন সংক্রান্ত কাগজপত্র মৌখিকভাবে বার বার উপস্থাপন করতে বলা হলেও অধ্যক্ষ তা উপস্থাপন করতে গড়িমসি করেন, শেষ সময়ে তিনি শুধুমাত্র তালিকা নিয়ে আসলেও কাগজপত্র উপস্থাপন করেন নি। ইতোমধ্যে ডিসি স্যার বরাবর বেশ কিছু অভিযোগ পড়েছে যার জন্য ডিসি স্যার এসিল্যান্ড (চাটমোহর) ইকতেখারুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. বায়েজীদ বিন আকন্দকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’