বৃহস্পতিবার ● ১৬ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ » নবীগঞ্জের দিন দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে ১২ লক্ষ টাকা ছিনতাই : ছিনতাইকারী সাজু ও সাঈদ আটক
নবীগঞ্জের দিন দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে ১২ লক্ষ টাকা ছিনতাই : ছিনতাইকারী সাজু ও সাঈদ আটক
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি :: এশিয়ার বৃহত্তম নবীগঞ্জের বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্টে দিন দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে ১২ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা ছিনতাই! ঘটনার ৬ ঘন্টার মধ্যেই নবীগঞ্জ থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৭ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা সহ ছিনতাইকারী সাজু ও সাঈদকে আটক করেছে ।
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল এলাকায় অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্টে। এ প্লান্টে কাজ পায় বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে হাজারো শ্রমিক কাজ করছে ঐ কোম্পানী গুলোতে। বুধবার দুপুরে নির্মান কাজে শ্রমিকদের মাসিক টাকা দেওয়ার সময় হঠাৎ করে ঐ কোম্পানীর অফিসে দিন দুপুরে ডুকে ফিল্মি স্টাইলে নগদ ১২ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুই ছিনতাইকারী। এ ঘটনার খবরে নবীগঞ্জের সর্বত্র তুলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর কাওসার আহমেদ একদল পুলিশ নিয়ে ঐ এলাকায় অবস্থান করে বিষয়টি অবগত হয়ে ছিনতাইকারীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। এতে ছিনতাইকারীরা নানান তালবাহা করতে লাগে। এমনকি পুলিশ অর্ধয্য হয়ে প্রায় ৬ ঘন্টার মাতায় দুই ছিনতাইকারী সহ ৭ লক্ষ টাকা সহকারে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার হাজী দুলাল মিয়ার বাড়ি থেকে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত ছিনতাইকারীরা হচ্ছে, উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের আব্দুল আজিজের পুত্র সাজু আহমেদ (২৫) ও তার সহযোগী একই গ্রামের রাহাত উল্লার পুত্র সাঈদ আহমেদ (২৬)।
কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে জানাযায়, বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্টের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দি বেঙ্গল ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানী লিমিটেড এর সিকিউরিটি ইনচার্জ ইমন আহমেদ, সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার, কম্পিউটার অপারেটর সুমন মিয়া সহ হেড অফিসের কর্মকর্তা রবিউল আজিম সহ ৪ জন মিলে বুধবার দুপুর প্রায় আড়াইটার দিকে কোম্পানীতে নিয়োজিত শ্রমিকদের মাসিক বেতনের টাকা প্রদান করছিলেন।
এ ব্যাপারে বেঙ্গলের কর্মকর্তা ইমন আহমেদ বলেন, যখন আমরা শ্রমিকদের বেতন বিলি করছিলাম এই সময়ে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের অফিসে বীরদর্পে ফিল্মি স্টাইলে সাজু ও সাঈদ প্রবেশ করে এবং আমাদের জিম্মি করে নগদ ১২ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে আমরা বিষয়টি হেড অফিস ও থানা পুলিশকে অবহিত করি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করে প্রায় ৬ ঘন্টা পর ছিনতাইকৃত ১২ লক্ষ ২৬ হাজার টাকার মধ্যে ৭ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা উদ্ধার হলেও বাকী ৫ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা এখনও উদ্ধার হয়নি। তবে, পুলিশ বলছে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অপর দিকে উক্ত ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে যেন খেচু খুড়তে সাপ বেড়িয়ে এসেছে!
কোম্পানীর একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ পাওয়ার প্লান্টে নিয়োজিত দি বেঙ্গল ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানীর কাছ থেকে প্রতি মাসেই কোন কাজকর্ম ছাড়াই মাসিক চাঁদা হিসাবে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উৎখোচ বানিজ্য নিচ্ছেন আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন। এর সত্যতা জানতে চাইলে উক্ত কোম্পানীর সিকোরিটি ইনর্চাজ ইমন আহমদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই টাকা উনাদেরকে আমাদের অফিস দেয়। ইহা আমাদের কিছু করার নেই!
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান হাজী মুহিবুর রহমান হারুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোম্পানী আমার ইউনিয়নে কাজ করবে আর আমরা এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা চাকুরী করতে পারবেনা আর আমি কি বসে বসে আঙ্গুল চুষবো? তবে, দেড় লক্ষ টাকা মাসিক চাঁদাবাজীর অভিযোগটি তিনি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানায় একটি চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবং আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে হবিগঞ্জ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে বলে পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে।