মঙ্গলবার ● ২১ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » ধানের দাম নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসককে বিএনপি’র স্মারকলিপি
ধানের দাম নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসককে বিএনপি’র স্মারকলিপি
রাজশাহী প্রতিনিধি :: রাজশাহী জর্জ কোর্ট প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ ও পাট শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এর আগে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করণ ও পাট শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে এক বিক্ষোভ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। সভাপতিত্ব করেন বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। সভা পরিচালনা করেন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সহ-সম্পাদক মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীবৃন্দ।
স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয়, বোরো ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উৎপাদিত ধানের মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে কম হওয়ায় কৃষকরা হাহাকার করছে। উৎপাদন খরচ থেকে তিনশত টাকা কমে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার টাকা। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট ও নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে।
সরকার প্রতি মন ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা প্রদান করলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাকী টাকা যাচ্ছে সরকারের আনুকুল্য পাওয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। এ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। ধানের দাম কমার জন্য উদ্ভুত সংকটে সরকার উদাসীন। এ বিষয়ে তাদের কোন দায় নেই বলে কৃষিমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণেই কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অথচ কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা ও দেশের প্রাণ। কৃষকদের রক্ষা করতে না পরেলে দেশে দুর্যোগ নেমে আসবে। তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মরবে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি রাজশাহী মহানগর, মধ্যস্থতাকারি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করার জন্য সরকারকে আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।
পাশাপাশি জাতীয় মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরীসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বিভিন্ন পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। দেশের ২৬টি পাটকলে একযোগে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হলেও সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিচ্ছে না। ১০ থেকে ১৫ সপ্তাহ মজুরী না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ২০১৫ সালের মুজুরী কমিশন রোয়েদাদ এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ রমজান মাস শুরু হয়েছে।
এ মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য কেনার সামর্থ তাদের নেই। কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমজীবি মানুষের স্বার্থের প্রতি সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তাদের ওপর শোষণের মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে। শ্রমিকরা পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করছে বিনিময়ে তারা মজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে বৈষম্য ও বঞ্চনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি রাজশাহী মহানগরের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলি সরকারকে মেনে নেয়ার জন্য আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।