শুক্রবার ● ২৪ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » গ্রামবাংলা থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে লাঙল দিয়ে চাষ করার ঐতিহ্য
গ্রামবাংলা থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে লাঙল দিয়ে চাষ করার ঐতিহ্য
পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: গ্রামবাংলায় বছর কয়েক আগেও দেখাযেত কৃষকরা কাকডাকা ভোরে কাঁধে লাঙল-জোয়াল আর জোড়া গরুর দড়ি হাতে নিয়ে বেরিয়ে যেত জমিতে হাল চাষ করার জন্য। কিন্তু আধুনিক যুগে বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়াও লেগেছে কৃষিতেও। তাই তো কৃষি ছোঁয়ায় দেখা যায় বেশ পরিবর্তন।
মির্জাগঞ্জ উপজেলায় গ্রামগঞ্জে সকালে কাঁধে লাঙল-জোয়াল আর জোড়া গরুর দড়ি হাতে নিয়ে মাঠে যেতে আর দেখা যায় না কৃষকদের।দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য লাঙল দিয়ে হাল চাষ। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লাঙল, জোয়াল। আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে হাল চাষের পরিবর্তনে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করা হয়। এক সময় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু পালন করত হাল চাষ করার জন্য। আবার কিছু মানুষ গবাদিপশু দিয়ে হাল চাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। আবার অনেকে তিল, সরিষা, কলাই, আলু চাষের জন্য ব্যবহার করতেন। নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হাল চাষ করে তাদের সংসারের ব্যয় বহন করত। হালের গরু দিয়ে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করে ফিরে পেত তাদের পরিবারের সচ্ছলতা।আগে দেখা যেত আতি ভোরে কৃষক গরু, লাঙল, জোয়াল নিয়ে মাঠে বেড়িয়ে পড়ত। এখন সেই দৃশ্য আর চোখে পড়ে না গরুর লাঙল দিয়ে চাষাবাদ। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চালাচ্ছে জমি চাষাবাদ। তাই কৃষকরা এখন পেশা বদলি করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে গরু, লাঙল, জোয়াল দিয়ে জমিতে হাল চাষ।
কৃষক রফিক বলেন, অগে তো মোরা গরু দিয়াই হালচোইতাম হে সমায় জমিতে ধান ও বেশি ওইতে । আর এহোন যুগের পরিবর্তনের লগে লগে কতকিছুই পরিবর্তন ওইছে হালচোইতে এহোন আর গরু লাগেনা সময় বাচাইতে সবাই ট্রাক্টর দিয়া হালচয়। আগিলাকালের কিছুইতো এহোন আর নাই।
একই উপজেলার কৃষক বেল্লাল মৃধা জানান, আধুনিক যন্ত্রপাতির থেকে গরুর লাঙলের চাষ গভীর হয়। জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও ফসলের চাষাবাদ করতে সার, কীটনাশক সাশ্রয় পায়। কষ্ট হলেও গরু দিয়ে হাল চাষ করতে খুব ভালো লাগত। এখন মনে পড়লেই কষ্ট হচ্ছে। ফিরে পাব না আর সেই পুরনো দিনগুলো। এভাবেই ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য।