মঙ্গলবার ● ২৮ মে ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ফুলছড়িতে ভিজিডি চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
ফুলছড়িতে ভিজিডি চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নে সোমবার বিকেলে ভিজিডি চাল বিতরণের সময় বিতরণস্থলেই ব্যবসায়িদের কাছে সেই চাল বিক্রি করে দেয়া হয়। ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে পাইকাররা কার্ডধারীদের কাছ থেকে এসব চাল কিনে নিচ্ছে। যা সম্পুর্ণ নিয়ম বিরুদ্ধ। এভাবে চাল বিক্রি করায় স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে চালের বস্তাসহ দুটি রিক্সাভ্যান আটক করে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে চালের বস্তাগুলো ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এভাবে উত্তোলিত ভিজিডির চাল ইউনিয়ন পরিষদের সামনেই বেচাকেনা হলেও প্রভাবশালীদের কারণে কেউ তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি। কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের জন্য ৪৯১টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান-মেম্বরসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বন্দ্বের কারণে এ ইউনিয়নের ভিজিডির কার্ডের তালিকা চুড়ান্ত করতে ৫ মাস লেগে যায়। এই ৫ মাস সংশ্লিষ্ট কার্ডধারীদের চাল বিতরণ করা হয়নি। সোমবার এই চাল বিতরণ করাকে নিয়েই এলাকায় নানা অভিযোগ উঠেছে।
ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম পারভেজ সেলিম বলেন, কার্ডের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। স্বচ্ছল ব্যক্তিদের অনেকেই কার্ড পেয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, স্বচ্ছল ওই কার্ডধারীরাই এসব চাল ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কার্ড প্রাপ্তিদের তালিকা তদন্ত করে যাচাই বাছাই করা হলেই কার্ড বিতরণে অনিয়মের রহস্য উদঘাটিত হবে।
ফুলছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার আব্দুল হালিম টলষ্টয় বলেন, চাল সুষ্ঠুভাবেই বিতরণ করা হচ্ছে। কেউ যদি চাল উত্তোলনের পরে তা অন্যত্র বিক্রি করে দেয় তাহলে করার কিছু থাকে না। তিনি বলেন, এব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগও দেয়নি। অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কৃষি ঋণ ও ধানের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় কৃষকদের সকল প্রকার ফসল উৎপাদনে সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান ও উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার জন্য জেলার কৃষকদের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়। জেলার ৩২টি ইউনিয়নের কৃষক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এজন্য কৃষকদের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষিক্ষেত্রে সরকারি সুযোগ সুবিধা ও ভর্তুকি প্রকৃত কৃষকদের প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, ব্যক্তিগত গ্যারান্টির পরিবর্তে কৃষক সংগঠনের গ্যারান্টিতে প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান, দুধ ও মসলা উৎপাদনসহ সকল ঋণ মৌসুম ভিত্তিক প্রদান, কৃষকদের দ্রুত ব্যাংক ঋণ প্রদানের নিশ্চয়তা বিধান এবং যাদের ঋণ দেয়া হয়েছে তাদের তালিকা ব্যাংকে টাঙিয়ে রাখা।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল হান্নান লিখিত বক্তব্যে আরো উলে¬খ করেন, সরকার ব্যাংগুলোকে মোট ঋণের ২.৫ শতাংশ কৃষি খাতে ঋণ দেয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দিলেও এই ঋণ কৃষকরা পাচ্ছে না। তদুপরি জেলার কৃষকরা বহুদিন ধরে ষাঁড় মোটাতাজাকরণ, দুধ উৎপাদন, সবজি ও ঔষধি গাছ চাষাবাদ করে আসছে। উৎপাদন উপকরণের মূল্যের উর্দ্ধগতি ও উৎপাদনকালিন অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করতে কৃষকরা হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে এনজিও থেকে ঋণ পাওয়া গেলেও তা কৃষকদের পক্ষে বহন করা সম্ভব হচ্ছে না কারণ রাত পোহালেই তাদের ঋণের কিস্তি দিতে হয়। আবার সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ পেতে গেলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর সীমাহীন গ্যারান্টি চাওয়া যেমন জমির দলিল, হালনাগাদ পর্চা, কোন সরকারি কর্মচারী বা কর্মকর্তার গ্যারান্টি। এছাড়াও কৃষি ঋণ নিতে গিয়ে কৃষকদের নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। শুধু তাই নয়, ব্যাংকগুলো সরকারি কর্মচারি বা কর্মকর্তার ব্যাংক একাউন্টের ফাঁকা স্বাক্ষরিত চেক দাবি করেন যা কোনভাবেই কৃষকদের পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। তাই কৃষকরা সহজলভ্য ও বহনযোগ্য ঋণ না পাওয়ায় তাদের জীবন জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে। এতে তারা অন্য পেশাকে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ফজলুর রহমান, আকরামুল হক, তাহেরা বেগম, গোলাম রব্বানী, জাবেদ আলী, উজ্জল মিয়া, রেজাউল করিম, হায়দার আলী, বেলাল মিয়া, মঞ্জু মিয়া ও খাইরুল ইসলাম।