শনিবার ● ৯ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » নবীগঞ্জে ব্যক্তিগত কারখানায় তৈরী হচ্ছে ভেজাল মরিচা গুড়
নবীগঞ্জে ব্যক্তিগত কারখানায় তৈরী হচ্ছে ভেজাল মরিচা গুড়
নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :: নবীগঞ্জে শীতকে টার্গেট করে সর্বত্র এখন চিনির চেয়ে গুড়ের দাম বেশী হওয়ার কারনে আখের গুড় এবং মরিচার গুড়ে সাথে চিনি মিশিয়ে সুগন্ধী পাউডার মিশিয়ে মরিচাগুড় তৈরী করে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা তা অবাধে বিক্রি করছে৷ যার ফলে সাধারন ক্রেতাগন খাঁটি গুড়ের বদলে নকল ভেজাল চিনি ও পাউডার মেশানো গুড় ক্রয় করে প্রতিনিয়ত ধোকা খাচ্ছেন৷ কিন্তু অদৃশ্য কারনে বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ও উপজেলা প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছেন৷ বর্তমান সময়ে শীতকে সামনে রেখে মরিচা গুড়ের চাহিদা বেশী হওয়ার কারনে পর্যাপ্ত পরিমান খেজুরের গুড় না থাকায় এবং মরিচা গুড়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় ঐ ব্যবসায়ীরা গুড়ে চিনি ও পাউডার মিশিয়ে তা বাজারে বিক্রি করছেন৷ বাজারে সব সময় মরিচা গুড়ের চাহিদা বেশি থাকার কারনে অধিক মুনাফা লাভের আশায় অসাধু ব্যসায়ীরা এ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন৷ নিজের কারখানায় তৈরী ভেজাল মরিচা গুড় তৈরী করে খালি মাটির কলসিতে ভরে বাজারে অবাধে বিক্রি করছে৷ অনেক ক্রেতারাই খায়েশ করে রুচিদায়ক খাবার মরিচা গুড় কিনে বিভিন্ন রকম পিঠা-পায়েস, চা ও অন্যান্য সুস্বাধু খাবার তৈরী করে থাকেন৷ তাই এ সময়ে পর্যাপ্ত পরিমান খেজুরের রসের অভাবে সর্বত্র খেজুরের গুড় ও মরিচা গুড়ের চাহিদা থাকায় দেশের রংপুর, ফরিদপুর, চাপাঁই নবাবনগঞ্জ, নাটোর, যশোর অঞ্চলের গুড় উত্পাদনকারীরা চাহিদারিক্তভাবে চিনি মেশানো ভেজাল গুড় তৈরী করে বাজারে বিক্রি করে আসছেন৷
তাদের এ ফমুর্লাকে কাজে লাগিয়ে নবীগঞ্জের মধ্য বাজারের ব্যবসায়ী পুতুল কুড়ি ও জে,কে হাইস্কুল সড়কের ব্যবসায়ী সুনীল রায় নামের দুই অসাধু ব্যবসায়ী গোয়ালাবাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মরিচা গুড়ের খালি হাড়ি আমদানী করে দোকানের পিছনে নিজেদের তৈরী চিটাগুড় ও সুগন্ধি পাউডার দিয়ে ভেজাল মরিচা গুড় তৈরী করে আমদানীকৃত খালি কলসিতে ভরে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে এখন দেদারছে বিক্রি করছেন৷
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় নবীগঞ্জের মধ্য বাজারে পুতুল কুড়ি নামের ব্যবসায়ীর দোকানের পিছনে বাসায় নকল মরিচা গুড় তৈরীর কারখানায় প্রতিদিনই এখন তৈরী হচ্ছে বিপুল পরিমান ভেজাল মরিছা গুড়৷ আর এ গুড় নবীগঞ্জ উপজেলার টঙ্গিটিলা,বালিধারা বাজার,সদরঘাট,গোপলার বাজার ছাড়াও গোয়ালবাজার, বিশ্বনাথ,শেরপুর,মৌলবীবাজার,হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রির জন্য পাঠানো হচ্ছে৷
খোজ নিয়ে জানাযায়, বর্তমান বাজারে সাধারন আখের গুড় প্রতিকেজি ৫৫/৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়৷ অন্যদিকে চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫/৫০ টাকা দরে৷ তাই চিনি মিশিয়ে মরিচা গুড় তৈরী করে অধিক মুনাফা অর্জন করা করায় আশায় ভেজাল মরিছা গুড় ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে৷ আর এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা এই প্রতারানা আশ্রয় নিয়েছেন বলে বিশ্বস্থ সুত্রে জানাগেছে৷ এভাবে সুস্বাদু খাবার তৈরীর প্রধান উপাদান মরিচা গুড়ের সাথে চিনি মিশিয়ে বাজারে বিক্রির কারনে সাধারন ক্রেতারা প্রতিদিন ধোকা খেয়ে আসছেন৷ প্রতিদিন শত শত কেজি ভেজাল মরিচা গুড় নবীগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হলেও অদৃশ্য কারনে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন নিরব রয়েছেন৷ স্যানেটারী পরিদর্শকের চোখের সামনেই প্রতিদিন ঘটছে এ ঘটনা৷ কিন্তু মোটা অংকের ঘুষ আদায় করার কারনে স্যানেটারী ইন্সপেক্টর তা দেখে ও না দেখার ভান করে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না৷ ফলে সাধারন মানুষ টাকা দিয়ে ক্রয় করছেন ভোজাল মরিছা গুড়৷ আর ধোকা খাচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷ তাই এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছেন প্রতারনার শিকার সাধারন ক্রেতারা৷