শিরোনাম:
●   কুষ্টিয়ায় সমিতির টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবকের হাত কর্তন ●   অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনে নয় পাপিয়া মারা গেছে ক্যান্সারে ●   রাউজান পৌরসভা যুবলীগের নেতাকে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি ●   নান্দাইলে এক হাজার পিস ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক ●   শ্রমিকরা স্বস্তিতে না থাকলে সরকারেও স্বস্তি আসবেনা : সাইফুল হক ●   খাগড়াছড়িতে ভূমিখেকো সহোদর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ●   ঈশ্বরগঞ্জে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের মানববন্ধন ●   বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হামিদ শরীফ আর নেই ●   কুষ্টিয়াতে ওয়াজ করবেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ●   লামায় বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে রাজধানীতে পিসিপির বিক্ষোভ ●   নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ইউপিডিএফের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   আত্রাইয়ে হলুদ বর্ণে সেজেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ ●   অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি ও ঘরবাড়ি ●   সচিবালয়ে আগুন ●   মহালছড়িতে আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেফতার ●   প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরী কলেজের রজতজয়ন্তী উৎসব ●   শাহরাস্তিতে আন্তর্জাতিক ক্বেরাত সম্মেলন অনুষ্ঠিত ●   পানছড়ি ৩ বিজিবি’র পক্ষ থেকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সাথে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় ●   ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তরুণের আত্মহত্যা ●   দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণের ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ ●   ভোটকেন্দ্রে শূন্যভোটের মাধ্যমে পার্বত্যবাসী ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ●   ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা নানা সুরতে আবির্ভুত হওয়ার পাঁয়তারা করছে ●   কাউখালীতে উইভ এনজিওর অবহিতকরণ সভা ●   খাগড়াছড়িতে ইত্তেফাকের ৭২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ●   বেগম রোকেয়া এ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক সাব্বির ●   বারইয়ারহাট ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফারুক,সম্পাদক ইউসুফ ●   দীঘিনালায় গলায় ফাঁস দেয়া যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ●   ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মা নিহত, ছেলে আহত ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালনা বোর্ড ২য় সভা অনুষ্ঠিত ●   রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
রাঙামাটি, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
রবিবার ● ২ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কোটি টাকার চুক্তিতে কারাগারের ভেতরে অমিত মুহুরীকে হত্যার দাবি পিতা অরুণের
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কোটি টাকার চুক্তিতে কারাগারের ভেতরে অমিত মুহুরীকে হত্যার দাবি পিতা অরুণের
রবিবার ● ২ জুন ২০১৯
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কোটি টাকার চুক্তিতে কারাগারের ভেতরে অমিত মুহুরীকে হত্যার দাবি পিতা অরুণের

---বিশেষ প্রতিনিধি :: হত্যার শিকার হতে পারেন এমনটি আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে খুন হওয়া আলোচিত সন্ত্রাসী অমিত মুুহুরী। তার পিতা অরুণ মুহুরী দাবি করেছেন, জেলখানায় পরিকল্পিতভাবে অমিত মুহুরীকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। ‘মনে হয়েছে, অমিত দুুপুুর বেলায় মারা গেছে’ বৃৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের লাশ ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অমিত মুহুরীর পিতা অরুণ মুহুুরী চট্টগ্রাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলখানা থেকে একজন মোবাইলে ফোন করে বলেছে, জেলখানায় মারামারি হয়েছে। অমিতের ইনজুরি হয়েছে। চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পাঁচ তলায় আছে। রাত একটার দিকে আমরা তাড়াহুড়া করে আসলাম। হাসপাতালে দেখি, ওকে কোন বেডে দেয় নাই। মাটির উপর শোয়ায় রাখছে। একটা স্যালাইন হাফ ঝোলানো, স্যালাইন চলছে না। সারা শরীর রক্ষাক্ত, মাথায় ব্যান্ডেজ। মুখ অর্ধেক শেভ করা, অর্ধেক শেভ ছাড়া। শরীর দেখে মনে হয়েছে, অমিত দুুপুুর বেলায় মারা গেছে। ডাক্তাররা তাকে অনেক আগেই মৃত ঘোষণা করে দিয়েছেন।’ ‘‘মৃত এটাকে এখানে এনেছেন কেন?’’ জেলখানায় অমিতকে পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলা হয়েছে এবং পুরো জেলখানার কর্মকর্তারা এতে জড়িত আছেন এমন দাবি করে অরুণ মুহুরী বলেন, ‘জেলখানা তো নিরাপত্তার জায়গা। সুরক্ষিত রাখার জন্য জেলখানাটা দেওয়া। সে অপরাধী, তাকে ফাঁসি দেবে, সাজা দেবে। এটা তো জেল কর্তৃৃপক্ষের দায়িত্ব নয়। এটা করবে আদালত। জজ আছে, আইন আছে দেশে।’ কারাগার কর্তৃৃপক্ষের প্রতি ইঙ্গিত করে অরুণ মুহুরী বলেন, ‘এখন আইনবহির্ভূত কাজ করলো কেন ওরা? কে মারলো? আমরা তো দেখিনি। আমাদেরকে সাথে সাথে খবরটা দিলো না কেন? অমিতকে জেলখানায় মেরে ফেলার পর মেডিকেলে আনলো কেন? আনলো, তাও নিচে ফ্লোরে ফেলে রেখেছে। কোন ডাক্তার অমিতকে দেখেনি। ডাক্তার বলেছেন, ‘‘মৃত এটাকে এখানে এনেছেন কেন?’’ লোকজন বলছে, ‘‘ফর্মালিটি বজায় রাখতে হয়।’’ সামনে অমিতের জামিন হতে পারে। এতে মামলার নতুন কোন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। তাই অমিতকে হত্যা করা হয়েছে—এমনটা মনে করেন অমিতের পিতা। তিনি বলেন, ‘একটু শোনা যাচ্ছিল যে, ওর জামিন হতে পারে। এ অবস্থায় অমিতকে মেরে ফেলা হয়েছে।’ ‘ওরা আমাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে’ নিজের মৃৃত্যুর কথা আগেই জেনে গিয়েছিল অমিত—দাবি পিতা অরুণ মুহুরীর। তার ভাষ্যমতে, ‘কিন্তু অমিত জানতো। অমিত নিজেই বলেছে, ‘‘আমাকে মেরে ফেলবে। ওখানে লাখ লাখ টাকার অফার আসছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলার জন্য পরিকল্পনা করছে। আমাকে অন্য জেলখানায় হস্তান্তর করা হোক।’’ কিন্তু আমরা ওইটা আমল করিনি। আমরা ওইটা উড়িয়ে দিয়েছিলাম। ওকে কে মারবে? ও এমন কী হয়েছে যে ওকে মেরে ফেলবে? কিন্তু কোটি টাকা নাকি ওর জন্য ঢালবে। এ রকম অফার অন্যজনের কাছে গেছে। এটা অমিতের কানে গেছে। ওর কথাগুলো আমরা বুুঝতে পারিনি। কানেও নিইনি। কিন্তু আগাম বার্তা সব ও জানতো।’ ‘আমরা চেয়েছিলাম অমিত জেলখানায় থাক, সুুরক্ষায় থাক। নিরাপদ জায়গা। বের হওয়ার কোন দরকার নেই। ওখানে থাক, ভালো থাক। আমরা এটা চেয়েছিলাম। কিন্তু ভালো থাকার জায়গায় যে পিছন থেকে মারবে, এভাবে হত্যা করে ফেলবে এটা আমরা কল্পনাও করিনি।’ অরুণ মুহুরী বলেন, ‘আমি চাই, এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত হোক। জেল কর্তৃপক্ষ কী করেছে? এতো সুরক্ষার ভিতর, এতো বেষ্টনীর ভিতরে কে গিয়ে আমার ছেলেকে আঘাত করলো? কী দিয়ে আঘাত করলো? ওরা বলছে, ‘‘ইট দিয়ে’’। আমি তো দেখেছি, এটা অনেক বড় আঘাত। জায়গার মধ্যেই ওকে মেরে ফেলেছে।’ ‘যদি অমিত বেরিয়ে যেতো, হয়তো কারো ক্ষতি হতো’ ‘প্রশাসনের কাছে ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি সুরক্ষার জায়গায় রক্ষক কেন ভক্ষক হবে? আইনে যা সাজা হওয়ার তা হতো। অমিতকে কেন মেরে ফেলা হলো? এটা তো একটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড আমি মনে করি। অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করে অমিত হত্যা করা হয়েছে। অমিত হয়তো বেরিয়ে যাবে এই আশঙ্কা তাদের মধ্যে ছিল।’ ‘অমিত বেরিয়ে এলে মামলার নতুন কোন তথ্য আসতে পারে এ আশঙ্কায় তাকে হত্যা করা হল। যদি অমিত বেরিয়ে যেতো, হয়তো কারো ক্ষতি হতো। এ চিন্তাভাবনা ছিল হত্যাকারীদের।’

কারাগারে অমিত মুহুরিকে হত্যা: যেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ

কারাগারে শীর্ষ সন্ত্রাসী অমিত মুহুরি খুনের ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অমিতকে খুন করা হয়েছে কিনা, হত্যাকারী রিপন নাথের সঙ্গে অমিতের কোনও পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা, না থাকলে রিপন কেন অমিতকে হত্যা করলো, কারাগারে সেলের ভেতর ইট থাকার কথা না থাকলেও সেখানে ইট কীভাবে গেল, কেন ঘটনার দিনই সেল পরিবর্তন করে রিপনকে অমিতের সেলে আনা হলো−এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তারা।

গত বুধবার (২৯ মে) রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে অমিতকে গুরুতর আহতাবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। রাত ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। এ ঘটনায় পরদিন (৩০ মে) কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নাশির আহমেদ। ওই মামলায় তদন্ত কাজ শুরু করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুক্রবার দায়িত্ব পাওয়ার পর আমরা অমিত মুহুরি হত্যা মামলার তদন্তের কাজ শুরু করেছি। আসামি রিপন নাথকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আসামি ইট দিয়ে অমিত মুহুরিকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। কিন্তু কী কারণে তাকে হত্যা করেছে, সে ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হয়নি। আমরা রিপন নাথকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছি। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ জানা যাবে।’ পূর্ব পরিকল্পনা করে হত্যা, পূর্ব শত্রুতা, অন্য কারও সহযোগিতা বা ইন্ধনে হত্যার মতো কয়েকটি প্রশ্ন মাথায় রেখে কাজ করছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

রিপন নাথের কোনও রাজনৈতিক পরিচয় পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা খোঁজ নিয়েছি, তার কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তারপরও এ বিষয়ে আমরা আরও খোঁজ খবর নিচ্ছি।’

রিপন নাথ পহাড়াতলী থানাধীন সাগরিকা এলাকায় অবস্থিত অর্গানিক জিন্স নামে একটি পোশাক পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিল। অশোভন আচরণের জন্য তাকে কারখানা থেকে বরখাস্ত করার পর সে ছুরি নিয়ে ওই কারখানায় প্রবেশ করলে কারাখানা কর্তৃপক্ষ তাকে গত ১০ এপ্রিল পুলিশে সোপর্দ করে। পরে ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ঘটনার দিন (২৯ মে) বিকালে তাকে কারাগারের ৩২ নম্বর সেলের ৬ নম্বর কক্ষে স্থানান্তর করা হয়। রাতে ওই কক্ষেই ইট দিয়ে আঘাত করে অমিত মুহুরিকে হত্যা করে রিপন নাথ। ওই কক্ষে বেলাল নামে আরেক কয়েদিও ছিল।

ঘটনার দিন বিকালে রিপন নাথকে ৩২ নম্বর সেলের ৬ নম্বর কক্ষে পাঠানো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাকে কেন ওই কক্ষে পাঠানো হয়েছে, সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অমিত মুহুরির পরিবার।

অমিত মুহুরির বাবা অরুণ মুহুরি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে মেরে ফেলতেই রিপন নাথকে ওই কক্ষে পাঠানো হয়েছে। কারাগার থেকে বের হওয়া কয়েকজন আমাকে জানিয়েছে, রিপনকে ওই কক্ষে পাঠানোর বিষয়ে অমিত প্রতিবাদ করেছিল। এরপরও তাকে ওই কক্ষে পাঠানো হয়েছে। ছুরি নিয়ে ধরা পড়া একজন আসামিকে ওই সেলে পাঠানোর কথাও না। তারপরও কেন তাকে পাঠানো হলো, আমি কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এর জবাব চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘কারাগার একটি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে থাকে। সেখানে মানুষ কীভাবে খুন হবে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে ইট দিয়ে অমিতকে হত্যা করা হয়েছে। ওই ইট রিপন নাথ কোথায় পেল। এ ঘটনার সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষও জড়িত। কোটি টাকার বিনিময়ে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।’

শুধু ইট নয়, ছুরি দিয়ে অমিত মুহুরিকে জখম করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। অরুণ মুহুরি বলেন, ‘আমার ছেলেকে শুধু ইট দিয়ে হত্যা করা হয়নি। তার শরীরে ছুরিকাঘাতেরও চিহ্ন ছিল।’

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার নাশির আহমেদ। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অমিত মুহুরিকে ইট দিয়েই জখম করে হত্যা করা হয়। অমিত মুহুরি যেই কক্ষে ছিল একই কক্ষে আসামি রিপন নাথ ছাড়া বেলাল নামে আরও এক কয়েদি জানিয়েছে, সে ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ অমিতের চিৎকার শুনে সে ঘুম থেকে জেগে দেখে রিপন ইট দিয়ে অমিতকে মারছে। এ সময় বেলাল চিৎকার শুরু করলে দুই কারা প্রহরী গিয়ে অমিতকে উদ্ধার করে। পরে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।’

একজন দাগী আসামির কক্ষে কেন ছুরি নিয়ে গ্রেফতার হওয়া একজনকে পাঠানো হলো, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাধারণত দাগী আসামি, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সেলে সাধারণ কয়েদিদের রাখা হয় না। রিপন নাথকে ওই সেলে পাঠানোর বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তাকে কেন ওই সেলে পাঠানো হয়েছে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তারা বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখছে।’

মৃত্যু সনদে অমিত মুহুরির মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘সিভিয়ার হেড ইনজুরি, এক্সিডেন্টাল ইনজুরির’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘দুই চোখ বন্ধ, মুখ সামান্য খোলা, দুই কানে ও নাকে রক্তের দাগ আছে। মুখের ডানপাশে দাড়ি ও গোঁফ আছে। বাম পাশেরটা কামানো। বুক-পেট-পিঠ স্বাভাবিক। দুই পা লম্বালম্বি স্বাভাবিক ছিল।’

অমিত মুহুরি নগরের সিআরবির জোড়া খুনের মামলার আসামি। রাউজান পৌরসভার রেজাউল করীমের ছেলে ইমরানুল করিম ইমন হত্যা মামলায় ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর পুলিশ তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর থেকে দীর্ঘ দুই বছর অমিত মুহুরি কারাগারে ছিল।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট নগরীর কোতোয়ালি থানার এনায়েত বাজার রানীর দিঘি থেকে সিমেন্ট ঢালাই করা ড্রামের ভেতর থেকে এক অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে অনুসন্ধানে জানা যায়, নিহত যুবক রাউজান পৌরসভার রেজাউল করীমের ছেলে ইমরানুল করিম ইমন (২৬)। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৩০ আগস্ট পুলিশ শফিক ও শিশির নামে দুই জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানতে পারে নিজের স্ত্রীর চৈতীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে, এ সন্দেহ থেকে ৮ আগস্ট রাতে বাল্যবন্ধু ইমনকে নগরীর নন্দনকাননে নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে যায় যুবলীগ কর্মী অমিত মুহুরি। সেখানে রাতভর নির্যাতনের পর ভোরে দিকে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করে লাশ ড্রামে ঢুকিয়ে রাখে। তিন দিন লাশটি বাথরুমে রেখে ১২ আগস্ট গভীর রাতে পার্শ্ববর্তী রানীর দিঘিতে ড্রামটি ফেলে দেয়।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)