বৃহস্পতিবার ● ১৩ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » রাজশাহীর বানেশ্বরে জমে উঠেছে আমের হাট
রাজশাহীর বানেশ্বরে জমে উঠেছে আমের হাট
রাজশাহী প্রতিনিধি :: মধু মাসের শ্রেষ্ঠ ফল আম। আর আমের রাজধানী বলে খ্যাত রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজার। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরেও আমের বাজার জমে উঠেছে।
জানা গেছে, রাজশাহী জেলার প্রত্যন্ত এলাকার আম চাষীরা যেমন আম বিক্রয়ের জন্য এখানে আসে। তেমনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা এই বাজারে ভিড় জমায়। চলতি বছরে প্রশাসনের নজর দারীর কারণে ব্যবসায়ীরা ফরমালিন মুক্ত আম বিক্রিয় করছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা ও আড়ৎ দারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে বিগত বছরের তুলনায় এবারে আমের দাম কিছুটা বেশি।
আম চাষী ও আম ব্যবসায়ীরা জানান, আঁটি আম ৮’শ থেকে ১২’শ টাকা, নেংড়া আম ১৬ ’শ থেকে ২২’শ টাকা, লোকনা ৮ ’শ থেকে ১২ শত টাকা, রানী প্রসাদ ১৫’শ থেকে ১৮’শ টাকা, খেড়সা আম ১৫’শ থেকে ২১’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পুঠিয়া উপজেলার ধলাট এলাকার আম বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, লোকনা আম বিগত বছরে ৪শত থেকে ৭শত টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এ বছরে ৮ শত থেকে ১১ শত টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে আমাদের কিছুটা লাভ হচ্ছে। কিন্তু কয়েক দফার ঝড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আম ও আড়ৎ ব্যবসায়ী মো: সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার রোজার পরে ফুলদমে আম হওয়ায় দাম অনেকটা বেশি । তবে আরও কয়েকদিন পর আমের দাম কিছুটা বাড়বে বলে তিনি জানান। এবার আম কত কেজিতে মণ জানতে চাইলে তিনি বলেন এই এলাকার প্রচলিত নিয়ম মতে ৪৫/৪৬ কেজিতে এক মণ, এই নিয়মে আম ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার একেএম মুনজুরে মাওলা জানান, চলতি বছরে উপজেলায় ১৫ শত ২৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। গত বছর আমের ফলন ভাল হয়েছিল। চলতি বছরেও আমের ফলন ভাল হয়েছে কিন্তু কয়েক বারের ঝড়ে আমের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে বর্তমানের আবহাওয়া অনুকূলে এবং দাম ভাল থাকায় আম বিক্রয় করে এবার কৃষক লাভবান হবে । এবং রাজশাহীর আমের সুনাম ধরে রাখার জন্য ফরমালিন মুক্ত আম বাজার জাত করতে যা করার দরকার তাই করছি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
রাজশাহীতে ৩ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ ইন্দোনেশিয়ার
রাজশাহী :: রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা পি সোয়েমারনো এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরভবনের মেয়র দপ্তর কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আলোচনাকালে রাজশাহীর শিক্ষা, কৃষি ও তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত। বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান মেয়র।
পূর্বনির্ধারিত সময় সূচি অনুয়ায়ী আজ দুপুরে নগরভবনে আসেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা পি সোয়েমারনো ও তার সহযোগীরা। নগরভবনে আসলে বর্ণিল আয়োজনে তাঁকে বরণ করে নেয় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। এরপর মেয়র দপ্তরকক্ষে সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে বৈঠকে মিলিত হন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত। শুরুতে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান মেয়র। এরপর ঘন্টব্যাপী দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে নগরভবনের সিটি হলরুমে আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মেয়র ও ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত।
অনুষ্ঠানে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা পি সোয়েমারনো বলেন, এটি আমার প্রথম রাজশাহী সফর। এখানকার চমৎকার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখে আমি মুগ্ধ। এখানকার মানুষদের ভালো লেগেছে। এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজশাহী কমপ্লিট সিটি। অন্য যেকোন শহরের তুলনায় আলাদা সিটি। শিক্ষা ও কৃষি ক্ষেত্রে রাজশাহীর পরিবেশ চমৎকার। রাজশাহীর সাথে ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষা ও কৃষি ছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে পারস্পারিক সম্পর্ক উন্নয়ন হবে। রাজশাহী এবং ইন্দোনেশিয়ার গুরত্বপূর্ণ সিটির মধ্যে বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
এ সময় রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ইন্দোনেশিয়া আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাথে দীর্ঘ সময় বৈঠক হয়েছে। বৈঠককালে তিনি রাজশাহীর শিক্ষা, কৃষি ও তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইন্দোনেশিয়ার রাজস্বের ২৫ শতাংশ আসে ট্যুারিজম থেকে। রাজশাহীর ট্যুরিজমের উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইন্দোনিশয়ার রাষ্ট্রদূত।
মেয়র আরো বলেন, ইন্দোনেশিয়ার যেকোন গুরুত্বপূর্ণ একটি সিটির সাথে আমাদের সর্ম্পক উন্নয়ন ও পারস্পারিক সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে। এর মাধ্যমে দুই সিটির মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বিনিময় হতে পারে। বাংলাদেশের ছাত্র-শিক্ষকেরা ইন্দোনেশিয়ায় যাবে, ইন্দোনেশিয়া থেকে এখানে আসবে। বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত।
মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীর সিল্কের প্রতি ইন্দোনেশিয়া অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যদি সিল্ক সরবরাহ করতে পারি, তাহলে তারা নেবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, প্যানেল মেয়র-২ ও ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রজব আলীসহ অন্যান্য কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব রেজাউল করিম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা শাহানা আখতার জাহান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার খায়রুল বাশার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম, মাননীয় মেয়রের একান্ত সচিব আলমগীর হোসেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন ডলারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
এদিকে বৈঠক শেষে নগরভবনের বঙ্গবন্ধুর কর্ণার ঘুরে দেখেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত রিনা পি সোয়েমারনো। সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন রাষ্ট্রদূতকে বঙ্গবন্ধু কর্ণার ঘুরে দেখান। বঙ্গবন্ধু কর্ণার পরিদর্শন শেষে পরিদর্শন বই‘য়ে মন্তব্য লিখেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত।
রাজশাহীতে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি শীর্ষক দিনব্যাপি প্রশিক্ষণ
রাজশাহী :: রাজশাহী মহানগরীতে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি শীর্ষক দিনব্যাপি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
কৃষি তথ্য সার্ভিস রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামশুল হক। আঞ্চলিক কৃষি কর্মকর্তার দপ্তরের ডিডি কৃষিবিদ জয়নাল আবেদিন, জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বেতার রাজশাহী আঞ্চলিক পরিচালক হাসান আকতার। আঞ্চলিক কৃষি তথ্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুল্লাহ হেল কাফীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর উপ-পরিচালক শিউলি রানী বসু।
প্রশিক্ষণে কৃষি ফসলের যত্ন, প্যাকেজিং, বাজারজাত, অপকারি কীটপতঙ্গ চিহিৃতকরণ, বালাইনাশক, মোড়ক ও বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
রাজশাহীর পুঠিয়ার মেলায় লটারীর নামে জুয়া ও অশ্লীল নাচ
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর পুঠিয়ার কার্ত্তিকপাড়া ঈদ আনন্দ মেলায় লটারীর নামে জুয়া ও অশ্লীল নাচ গানের আসর শুরুর অভিযোগ উঠেছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে এলাকাবাসী জানায়, ঈদের পরের দিন থেকে প্রস্তুতি চললেও রাজশাহী-৫ পুঠিয়া-দুর্গাপুরের সংসদ সদস্য ডাঃ মনসুর রহমান ঈদের ৩ দিন পর ৯ জুন রবিবার সন্ধ্যায় এসে মেলার উদ্ধোধন করেন। উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা অশ্লীল ও জুয়া না চলানোর পক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর সার্কাস ও গানের আসর চলছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রায় ২ শতাধিক ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সা নিয়ে লটারীর নামে জুয়ার টিকিট বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রাজশাহী, নাটোর ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। আজকের প্রথম পুরস্কার ৮০ সিসির মোটরসাইকেল সহ ৮০ টি পুরুস্কার আর দৈনিক উল্লাস র্যাফেল ড্র এর টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। এছাড়া প্রতিদিনের মাইকিং এর মাধ্যমে জানানো হয় সার্কাস ও নাচ গানের আসরের কথা। কিন্তু রাত ৯ টা থেকে চলে ঝাকানাকা বিশেষ শো এর নামে অশ্লীলতা। অসুস্থ্য ধারার বিনোদন পরিহার করে সুস্থ্য ধারার বিনোদন ও মেলা পরিচালনার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল জানান, গত রবিবার সন্ধ্যায় সংসদ সদস্য ডাঃ মনসুর রহমান ও প্রশাসনের উপস্থিতি মেলা উদ্ধোধনের সময় আমরা বলেছিলাম সুস্থ্য বিনোদনের জন্য মেলার প্রয়োজন আছে। এই জন্য মেলা হোক আমরা চাই। কিন্তু মেলার নামে অশ্লীলতা, জুয়া এবং মাদক ব্যবসা চলুক তা আমরা চায়না। আর তা যদি চলে প্রশাসনকে ব্যবস্থ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওলিউজ্জামান জানান, মেলা কমিটির লোকজন মেলা চালানোর অনুমতি নিয়েছে। সাথে কি কি চালানোর অনুমতি নিয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।