শনিবার ● ১৫ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » পুলিশ সদস্য দোলনের মহানুভবতা
পুলিশ সদস্য দোলনের মহানুভবতা
মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, বান্দরবান প্রতিনিধি :: ২০১৬ সালে এসএসসি পাশ করে যোগ দেয় বাংলাদেশ পুলিশে। বান্দরবান কর্মরত পুলিশ সদস্য মো. মেহেদী হাসান দোলন। যোগদানের পর ট্রেনিং শেষ করে প্রথম পোস্টিং নিয়ে বান্দরবান পুুলিশ লাইনে রির্জাভ অফিসে কর্মরত আছেন। পুলিশে চাকুরী পাওয়ার পর থেকেই দেশসেবা ও মানব সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে যায় এই দোলন। অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য সবসময় কিছু করার চিন্তা নিয়ে এগুতো থাকে প্রতিনিয়িত।
মানব সেবার উন্নয়নে সবসময় কাজ করে যাওয়ায় জন্য চেষ্টা করে এই পুলিশ সদস্য মো.মেহেদী হাসান দোলন। সরকারি বেতনের জমানো কিছু অর্থ মানবতার কল্যাণে ব্যয়ের স্বপ্ন অনেক আগের, যেমন ইচ্ছা তেমনি ধারাবাহিকতা।
বান্দরবানে চাকুরি করতে করতে হঠাৎ এই পুলিশ সদস্য দোলনের সাথে পরিচয় হয় মো.হোসেন নামের এক ব্যক্তির সাথে। মো.হোসেন বান্দরবান সদরের ইসলামপুরে এক স্ত্রী ও দুই কণ্যা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছিল। পরিবার বেশ ভালো চলছিল মো.হোসেনের,কিন্তুু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গত কয়েক বছর আগে মারাত্মক রোগে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা না পেয়ে কোমরের নিচ অবশ হয়ে যায় ভিক্ষুক মো.হোসেনের, ফলে এক সময়ের স্বচ্ছল হোসেন প্যারলাইস্ড এ আক্রান্ত হয়ে জীবন জীবিকার তাগিদে ভিক্ষার ঝুলি কাঁঁধে বান্দরবানের বিভিন্ন রাস্তায় ভিক্ষা বৃত্তি করে সংসার চালিয়ে যাচ্ছিল। ছোট একটি সাইকেল ট্রলি নিজ হাতে চালিয়ে বান্দরবান বাজারে ভিক্ষা করে কোন রকম জীবন চালাতো এই ভিক্ষুক হোসেন।
এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের গর্বিত সদস্য দোলন চৌধুরী এক সময় রাস্তায় মো. হোসেনকে ভিক্ষা করতে দেখে তার স্বভাবসুলভ অভ্যাস হিসেবে জানতে চায় হোসেনের এই পরিণতির কথা। জানতে চাইলো কেন ভিক্ষা করেন আপনি ? তারপর মো.হোসেন বিস্তারিত বললেন তার জীবনের করুণ পরিণতির ঘটনা। ঘটনার বর্ণনা শুনে পুলিশ সদস্য দোলন তার অবস্থা উপলদ্ধি করে হোসেনকে ভিক্ষা বৃত্তির পেশা ছেড়ে সুন্দরভাবে জীবন চালিয়ে নেয়ার জন্য তার সাইকেল ট্রলিতে কয়েকটি র্যাক তৈরি করে দেয় এবং তাকে নগদ কিছু অর্থ দিয়ে আর ভিক্ষাবৃত্তি না করে ছোট ব্যবসা করে সুন্দরভাবে জীবন চালানোর জন্য সহায়তা করে।
বিষয়টি জানতে চাইলে পুলিশ সদস্য মো. মেহেদী হাসান দোলন বলেন, ছোটকাল থেকে আমার ইচ্ছা গরীব ও অসহায় পরিবারের পাশে থাকবো। আমি আমার লেখাপড়া ও মা বাবার শিক্ষায় এই শিক্ষা পেয়েছি যে মানবতার ধর্মই বড় ধর্ম। ভিক্ষুক হোসেনকে আমি একটি ছোট আত্মকর্মসংস্থান করে দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বানালাম, আজ থেকে তার পরিবার আগের মত স্বছলভাবে চলতে পারবে,তার মেয়েরা আগের মত ভালো খাবার খেতে পারবে ও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে। মো.হোসেনের মত ভিক্ষুকের জীবন পরিবর্তন হয়ে নতুন জীবন লাভ করবে, আর আমি একটু প্রশান্তি পাব যে জীবনে একটু হলে ও ভালো কাজ করতে পারলাম।
পুলিশ সদস্য দোলন আরো বলেন, আমি সরকারি চাকুরির পাশাপাশি চাকুরির বেতনের জমানো সামান্য অর্থ দিয়ে এই ধরনের সামাজিক কাজ করে যাব এবং গরীব দু:খী ও অসহায়দের পাশে থাকব।