সোমবার ● ১৭ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সংকটে দরিদ্র রোগীরা
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সংকটে দরিদ্র রোগীরা
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের প্রয়োজনীয় ওষুধ, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং জরুরী বিভাগের গজ, ব্যান্ডেজ তুলাসহ অন্যান্য সামগ্রী ক্রয় বন্ধ। ফলে মঙ্গাপীড়িত এ জেলার দরিদ্র অসুস্থ মানুষেরা সুষ্ঠু চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের প্রয়োজনীয় অনুমোদনের অভাবে হাসপাতালের এই ওষুধ ও চলতি অর্থ বছরের এমএসআর সামগ্রী ক্রয় বন্ধ রয়েছে। অথচ এই জুন মাসের মধ্যে উলে¬খিত সামগ্রী ক্রয় করা না হলে এই অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত ফেরত যাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। সেক্ষেত্রে এই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় চরম সংকট সৃষ্টি করা হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। বিধায় জনগণের স্বাস্থ্য সেবার স্বার্থে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন অবিলম্বে মালামাল ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদনের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালককে অনুরোধ জানিয়ে সম্প্রতি একটিপত্র প্রেরণ করেন। কিন্তু তাতেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের জন্য হাসপাতালের ওষুধ ও এমএসআর ৬টি গ্র“পের দরপত্র মূল্যায়নের রায় ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই প্রদান করে দরপত্র যাচাই বাছাই কমিটি। কিন্তু দরপত্রের শর্ত মোতাবেক ড্রাগ লাইসেন্সসহ ৭টি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় ‘ক’ গ্র“পে ওষুধ সরবরাহের নিমিত্ত দরপত্র দাখিলকারীর আলেয়া কর্পোরেশনের দরপত্র অযোগ্য ঘোষণা করে। এতদসত্ত্বেও অযোগ্য ওই প্রতিষ্ঠানটি আপিল বোর্ডে আপিল করে। কিন্তু আপিল বোর্ড (সিপিবিইউ) শুধু ওষুধ সরবরাহের নিমিত্তে একটি গ্র“পে দরপত্র দাখিলকারী অযোগ্য আলেয়া কর্পোরেশনের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে ৬টি গ্র“পেরই ওষুধসহ সকল সামগ্রী ক্রয়ের পুনরায় নতুন করে দরপত্র আহবানের পরামর্শ প্রদান করে।
এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে দরপত্রে যাচাই বাছাই কমিটি কর্তৃক যোগ্য ঠিকাদাররা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করলে হাইকোর্ট উক্ত আদেশ ৪ মাসের জন্য স্থগিত করেন (রিট নং ৬৯১/২০১৯)। হাইকোর্টের এই স্থগিতাদেশ প্রাপ্তির পর গাইবান্ধা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক বরাবরে (স্মারক নং ২০১৮-২০১৯/৩৬৩ তাং ০৯.০৩.২০১৯) ওষুধসহ জরুরী প্রয়োজনীয় এমএসআর মালামাল জরুরী ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য পত্র প্রেরণ করেন। কিন্তু মহা পরিচালক অদ্যাবধি তা অনুমোদন না করায় হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ, গজ, ব্যান্ডেজসহ অন্যান্য সামগ্রীর অভাবে চিকিৎসা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
নেশার টাকা না দেয়ায় ছেলের ছুরিকাঘাতে মা খুন
গাইবান্ধা :: সাঘাটা উপজেলায় নেশার টাকা না দেয়ায় ছেলে আবুল কালাম শেখের ছুরিকাঘাতে মা তাহেরা বেগম (৪৫) শনিবার সন্ধ্যায় খুন হয়েছে। নিহত তাহেরা বেগম ওই উপজেলার জুমারবাড়ী ইউনিয়নের বগারভিটা গ্রামের তারাজুল ইসলামের স্ত্রী।
পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, আবুল কালাম একজন নেশাখোর। সে প্রায়ই মায়ের কাছে নেশার টাকা আদায় করতো। ওইদিন সন্ধ্যায় সে মা তাহেরা বেগমের কাছে টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবুল কালাম তার মা তাহেরা বেগমের কোমরে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত তাহেরা বেগমকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়ীর লোকজন সাথে সাথে তাকে পার্শ্ববর্তী সোনাতলা উপজেলা হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এরপর আবুল কালাম পালিয়ে যায়। রোববার সকালে ঘাতক আবুল কালামকে বাড়ীর অদুরে একটি পরিত্যাক্ত শ্যালো মেশিনের ঘর থেকে গ্রামবাসি আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। লাশ ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় ঘাতক আবুল কালাম এখন পুলিশ কাস্টরিতে রয়েছে।
সুন্দরগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : নিরুত্তাপ ভোটের মাঠ, লড়াই হবে ত্রিমূখী
গাইবান্ধা :: আগামী ১৮ জুন (৫ম ধাপ) ঘোষিত তফশীল মোতাবেক গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। বাকী মাত্র একদিন। ভোটারদের মাঝে কোন আমেজ না থাকায় নিরুত্তাপ ভোটের মাঠ। তারপরেও বসে নেই প্রার্থীরা। ৪ চেয়ারম্যান, ৬ ভাইস চেয়ারম্যান এবং ৪ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোট ১৪ জন প্রার্থী রয়েছেন ভোটের মাঠে। অনেকে বলছেন ভোট হবে ত্রিমূখী। চেয়ারম্যান প্রার্থী জাপার আহসান হাবীব খোকন (লাঙ্গল), আ’লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী খয়বর হোসেন মওলা (ঘোড়া) এবং আ’লীগের প্রার্থী আশরাফুল আলম সরকার লেবু (নৌকা) এই তিন প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে।
১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা। এখানে কমপক্ষে সাড়ে ৬ লাখ মানুষের বসবাস। ৪জন চেয়ারম্যান, ৪জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ৬জন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ১৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহন করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সাধারণ ভোটার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে সরকার দলীয় প্রার্থী আশরাফুল আলম সরকার লেবু (নৌকা), জাপা মনোনীত প্রার্থী আহসান হাবীব সরকার খোকন (লাঙল) ও আ’লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী খয়বর হোসেন সরকার মওলার (ঘোড়া) মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এছাড়া অপর প্রার্থী গোলাম আহসান হাবীব মাসুদ (মোটর সাইকেল) পারিপাশ্বিক কারণে নির্বাচনে তেমন কোন প্রভাব ফেলতে পারেননি। তবে ৫ম ধাপের এই উপজেলা নির্বাচনে ভোটার ওপ্রার্থীর মধ্যে নেই কোন উৎসাহ ও উদ্দীপনা।
আওয়ামীলীগ: উপজেলা আ’লীগ আহবায়ক টিআইএম মকবুল হোসেন প্রামানিকসহ যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল আলম রেজা, মেহেদী মোস্তফা মাসুম, আশরাফুল আলম সরকার লেবু, আ’লীগ নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টু ও খয়বর হোসেন সরকার মওলা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শেষে নৌকার কান্ডারি হন আশরাফুল আলম সরকার লেবু। অন্যরা নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেও খয়বর হোসেন সরকার মওলা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। সে কারণে আ’লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে কিছুটা সমন্বয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। জাতীয় পার্টি: উপজেলা জাপার সহ-সভাপতি আহসান হাবীব সরকারসহ দুইজন প্রার্থী লাঙলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আহসান হাবীব খোকনকে লাঙল মার্কা দেয়া হয়। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তিনি। বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী: উপজেলা আ’লীগ আহবায়ক কমিটির সদস্য খয়বর হোসেন সরকার মওলা। পারিবারিকভাবে তিনি একজন আ’লীগ পরিবারের সদস্য। জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। এছাড়া অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম আহসান হাবীব মাসুদ সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে উপজেলার ১১১টি ভোট কেন্দ্রের বিপরীতে ১২১ জন প্রিজাইডিং, ৮৫১ জন সহকারি প্রিজাইডিং ও ১ হাজার ৭১১ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহণের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২১৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৫ হাজার ৩৪১ ও মহিলা ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮৭৭ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১১১টি এবং বুথ সংখ্যা ৮১৫ টি।